জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে নেই নেফ্রোলজিস্ট, হৃদরোগ বা স্নায়ুরোগের বিশেষজ্ঞও। তার জেরে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে রোগী পরিষেবা দিতে হিমসিম হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ‘রেফার’ বাড়ছে প্রতি দিনই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।
মেডিক্যাল সূত্রে খবর, সম্প্রতি এক অন্তঃসত্ত্বাকে সন্তান প্রসবের জন্য ‘সিজ়ার’ করাতে অপারেশন থিয়েটারের টেবিলে তোলা হয়। বেহুঁশ করার মুহূর্তে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তড়িঘড়ি তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ‘রেফার’ করতে হয়। ‘কার্ডিয়াক অ্যানাসথেসিস্ট’ বা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলে তাঁকে অন্য হাসপাতালে ‘রেফার’ করতে হত না বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে পাঠানোর পরে প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে ‘সিজ়ার’ করানো হয়। পরে ওই অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়।
মেডিক্যাল সূত্রে খবর, সম্প্রতি প্রসূতি সান্ত্বনা রায়ের ‘সিজ়ার’ হয় জলপাইগুড়িতে। সন্তান প্রসবের দু’দিন পরে প্রসূতির শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের জেলা সদর হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়। নেফ্রোলজিস্ট না থাকায় ‘রেফার’ করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে।
মেডিক্যাল সূত্রে দাবি, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ, নেফ্রোলজিস্ট না থাকায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল থেকে প্রায় প্রতি দিনই চিকিৎসাধীনদের বাধ্য হয়েই ‘রেফার’ করতে হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। মেডিক্যালের দু’টি হাসপাতালে মোট চারটি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যানাসথেসিস্ট রয়েছেন মাত্র পাঁচ জন। অন্তত ১২ জন অ্যানাসথেসিস্ট থাকার কথা। অ্যানাসথেসিস্টের অভাবে মাঝেমধ্যেই অপারেশন বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
দীর্ঘদিন ধরেই মেডিক্যালে প্রয়োজনীয় রেডিয়োলজিস্টও নেই। এক জন মাত্র রেডিয়োলজিস্ট দিয়ে চলছে পরিষেবার কাজ। অভিযোগ, জেলা সদর হাসপাতালে আলট্রাসোনোগ্রাফি করাতে এসেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের। প্রয়োজনীয় রেডিয়োলজিস্টের অভাবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আলট্রাসোনোগ্র্যাফি যন্ত্র চালানো যাচ্ছে না।
মেডিক্যালের সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপাল কল্যাণ খান বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রতি দিনই। সরকারি নিয়ম মেনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)