Advertisement
২১ মে ২০২৪
pension Holders

অ্যাপ থাক ফোনে, ভরসা সেই ব্যাঙ্কের লাইনই

মালদহের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অবশ্য জানিয়েছেন, অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ওই শংসাপত্র জমা দেওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি কেউ সুনির্দিষ্ট কাগজপত্র নিয়ে এসে তা জমা দিয়ে যেতে পারেন।     

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০৬:১১
Share: Save:

পেনশনভোগীদের লাইফ সার্টিফিকেট জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। ‘জীবন প্রণাম’ অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে তা জমা দেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু গৌড়বঙ্গের জেলাগুলিতে প্রবীণ পেনশনভোগীদের অনেকেই অনলাইনের বদলে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে হাতে হাতে ওই শংসাপত্র জমা দিতে বেশি স্বচ্ছন্দ। করোনা পরিস্থিতিতে তা নিয়ে চিন্তা ছড়িয়েছে।

মালদহ

মালদহের পেনশনভোগী ৭৯ বছরের পুষ্পজিৎ রায়। তিনি মালদহ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। প্রতি বছর ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে হাতে হাতে ওই শংসাপত্র জমা দেন। এ বার করোনা পরিস্থিতিতে এই বয়সে বাড়ির বাইরে বেরোনোর ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। কিন্তু ওই সার্টিফিকেট জমা না দিলে বন্ধ হবে পেনশন। এই পরিস্থিতিতে কী করে তা জমা দেবেন সেই নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তিনি। একই সমস্যায় পড়েছেন ৭৩ বছরের ঝর্ণা সরকার। তিনি বলেন, "এখন ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়ানো ঝুঁকির। কী করে সার্টিফিকেট জমা দেব তা-ই ভাবছি।" মালদহের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অবশ্য জানিয়েছেন, অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ওই শংসাপত্র জমা দেওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি কেউ সুনির্দিষ্ট কাগজপত্র নিয়ে এসে তা জমা দিয়ে যেতে পারেন।

বালুরঘাট

শহরের সুরেশরঞ্জন পার্কের সামনে একটি দোতলা রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের নিচে দাঁড়িয়ে হাঁপাচ্ছিলেন এক বৃদ্ধ। পেনশনের জীবিত-শংসাপত্র জমা দিতে গিয়ে তাঁকে ফিরে আসতে হয়েছে। তিনি জানান, অনেক কষ্টে উপরে উঠে কাউন্টারে গিয়ে শুনতে হয়, শংসাপত্র জমা নেওয়ার কর্মী কেউ নেই। আগামী কাল আসবেন। বালুরঘাটের প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের এক প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, শারীরিক ভাবে দুর্বল ও অসুস্থ পেনশনারদের বাড়িতে গিয়ে ওই শংসাপত্র সংগ্রহ করতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু হয়রানি কমেনি। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শাখা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্যাঙ্কে এসে ওই সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার কথা। তবে অসুস্থতার কথা জানালে বাড়ি গিয়ে তা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু করোনা আবহে কম কর্মী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। পেনশনারদের অযথা হয়রানি তাঁরা চান না বলে তার মতোই বালুরঘাটের একাধিক ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার দাবি করেন।

রায়গঞ্জ

রায়গঞ্জের শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবনের প্রধানশিক্ষক নীলমাধব নন্দী চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবসর নিয়েছেন। নীলমাধবের দাবি, পেনশন চালু রাখার জন্য নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পেনশনভোগীদের ওই সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বছর তিনটি প্রক্রিয়ায় লাইভ তা জমা দেওয়ার নিয়ম করা হয়েছে। প্রথমত, পেনশনভোগীরা সরাসরি ব্যাঙ্কে গিয়ে লাইভ সার্টিফিকেট জমা দিতে পারবেন।

দ্বিতীয়ত, এবছর পেনশনভোগীরা অনলাইনের মাধ্যমে লাইভ সার্টিফিকেট জমা দিতে পারবেন। তৃতীয়ত, তথ্যমিত্র কেন্দ্রেও ওই সার্টিফিকেটে জমা দেওয়া যাবে। নীলমাধব বলেন, "করোনা আবহে ব্যাঙ্কে ভিড় এড়াতে নিয়মিত তা জমা নেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি, বয়স্কদের পক্ষে ভিড়ে দাঁড়িয়ে তা জমা দেওয়াও অত্যন্ত ঝুঁকির কাজ।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

life certificate Pension holders
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE