Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

টোটোতেই নাকি সাদা হচ্ছে কালো!

চাহিদা বেড়ে গিয়েছে হঠাৎ। সেই সুযোগে দামও চড়িয়েছেন বিক্রেতারা। কিন্তু দাম বাড়লেও মালদহে কমতি নেই টোটো কেনায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২৮
Share: Save:

চাহিদা বেড়ে গিয়েছে হঠাৎ। সেই সুযোগে দামও চড়িয়েছেন বিক্রেতারা। কিন্তু দাম বাড়লেও মালদহে কমতি নেই টোটো কেনায়।

লেদগুলি থেকে একের পর এক টোটো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। গত ছ’দিনে মালদহ শহরে কমপক্ষে আড়াইশো নতুন টোটো রাস্তায় নেমেছে। চাহিদা বৃদ্ধির সুযোগে টোটো পিছু ২০-২৫ হাজার টাকা করে বাড়তি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।

কিন্তু আচমকা কেন টোটোর কেনার হিড়িক পড়ল মালদহে? শহরের বাঁশবাড়ি মোড়ের এক টোটো বিক্রেতা বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে আড়াই লক্ষের উপরে টাকা রাখলে নজরে পড়তে হবে আয়কর দফতরের। তাই কালো টাকাকে সাদা করতে একাংশ টোটোতে টাকা খাটাচ্ছেন।’’ টোটো কিনে ভাড়া খাটালে আয়কর দফতরের নজর থেকে বাঁচার সঙ্গে উপরি পাওনা হিসেবে রোজগারও করা যাবে বলে জানাচ্ছেন ওই ব্যবসায়ী।

যদিও শহরের লেদগুলি থেকে টোটো বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে প্রশাসনের। কিন্তু তাও শহরের মধ্যে যে ভাবে লেদ কারখানাগুলি চলছে তাতে প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন নিয়মিত নজরদারি না চালানোয় বেআইনিভাবে চলছে লেদ কারখানাগুলি। যার জেরে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কালো টাকাকে সাদা করার সুযোগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে মালদহ পরিবহণ বোর্ডের সদস্য তথা ইংরেজবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার দাবি করেন, ‘‘আমাদের অভিযান চলছে শহর জুড়ে।’’ প্রয়োজনে শহরে অভিযান আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে টোটো বিক্রি বাড়াতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইংরেজবাজারের বাসিন্দারা। এমনিতেই টোটোর দাপটে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এখনই শুধুমাত্র ইংরেজবাজার শহরে ১১ হাজার ছাড়িয়েছে টোটোর সংখ্যা। একাধিকবার শহরের বিভিন্ন লেদে হানাও দিয়েছে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। মাসখানেক ধরে শহরের লেদগুলিতে বন্ধ ছিল টোটো তৈরির কাজ। পুরানো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বদলানো শুরু হতেই ফের রমরমিয়ে চলছে টোটো তৈরি। ইংরেজবাজার শহরের বাঁশবাড়ি, বাঁধরো়ড, রবীন্দ্রভবন, হাসপাতাল মোড়, কার্নি মোড় সহ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একাধিক লেদে চলছে টোটো তৈরি। প্রথম দিকে এক লক্ষ দশ হাজার টাকায় মিলত একটি টোটো। এখন দাম বেড়ে হয়েছে ১লক্ষ ৩০-৩৫ হাজার টাকা। এক একটি লেদে দিনে সাত থেকে আটটি করে টোটো তৈরি হচ্ছে। কার্নি মোড়ের এক লেদ মালিক বলেন, ‘‘বিক্রেতাদের সরাসরি আমাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে দিতে বলছি। তাতে আমাদের ঝুঁকি থাকবে না।’’ হাসপাতাল মোড়ে টোটো কেনার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি জানান, টোটোর দাম আরও বাড়লেও কিছু যায় আসে না। তাঁর কথায়, ‘‘ঘরের টাকা বস্তা বন্দি করে রাস্তায় ফেলতে মনে আঘাত লাগবে।’’ তাই অন্তত চারটি টোটো কিনে রাখলে পরে কিছু টাকা রোজগার করা যাবে বলে তাঁর আশা। সেই আশাতেই মুখে হাসি ফুটেছে লেদ মালিকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toto Black Money White Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE