Advertisement
E-Paper

ভয়ে এলাকা ছাড়ছেন অনেকেই

বাঁধ থেকে নামলেই ধূ ধূ বালির চর। পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে চর পেরিয়ে চলছেন দুই যুবক। অচেনা গলার প্রশ্ন শুনে খানিক দাঁড়িয়ে হাঁটা দিলেন দু’জনে। বললেন, “দিনকাল ভাল ঠেকছে না। বন্ধুরাও সব এলাকা থেকে চলে গিয়েছে। আমরাও চললাম।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৩:১৩
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বাঁধ থেকে নামলেই ধূ ধূ বালির চর। পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে চর পেরিয়ে চলছেন দুই যুবক। অচেনা গলার প্রশ্ন শুনে খানিক দাঁড়িয়ে হাঁটা দিলেন দু’জনে। বললেন, “দিনকাল ভাল ঠেকছে না। বন্ধুরাও সব এলাকা থেকে চলে গিয়েছে। আমরাও চললাম।”

সূর্য তখন দুপুরের আকাশে। সকালের মেঘ সরে গিয়ে চড়া রোদ ঢালছে ক্রান্তি বাজারে। কাঁধে একটা গামছা ফেলে বাঁশের মাঁচায় বসেছিলেন বৃদ্ধ হারাম মিঞা (নাম পরিবর্তিত)। বাজারে ফলের দোকান রয়েছে। সকাল থেকে দোকান খোলেননি, বাড়ি থেকে বের হননি। পঞ্চাশ পেরোনো হারান মিঞার কথায়, “সে দিন নাকি গোলমালের ছবি তুলেছে পুলিশ। ছবি মিলিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলকে ধরছে। বাজারেও কেউ আসছেন না। কখন যে কী হয়, তাই দোকান খুলতে ভরসা পাচ্ছি না।” বৃহস্পতিবার বিকেলেও ক্রান্তি ফাঁড়ি থেকে মাইক বাঁধা চারচাকা বের হয়েছে। এলাকায় অচেনা কাউকে দেখলে পুলিশে খবর দিন, ফেসবুকে কোনও প্ররোচনামূলক কথা লিখবেন না, বাড়িতে অচেনা কেউ এলে পুলিশকে জানান। এমন ঘোষণা চলেছে এ দিনও।

পুলিশের ঘোষণা-গাড়ি পার হয়ে যেতেই জটলা বাঁধল, বাঁধে ওঠার মুখে। এক যুবকের কথায়, “এমন সব ঘোষণা শুনলেই বুকের ভিতরটা কেমন ধরাস ধরাস করে। অজানা একটা ভয় জেগে ওঠে।” গরম যতই হোক না কেন বিকেলের পরে তিস্তা থেকে ঠান্ডা হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তিস্তার হাওয়া খেতে কাপড় পেতে গা জুড়োতে বসেন বাসিন্দারা। কোথাও তাস, মোবাইলে লুডো খেলা হয়। বৃহস্পতিবার সে সব কোনও জটলাই দেখা গেল না। এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “এক সঙ্গে কয়েকজনকে দেখলেই লোকে সন্দেহ করছে। পুলিশের কাছে খবর চলে যাচ্ছে। তাই আপাতত বিকেলের আড্ডা ফাঁকা।”

ভারী বুটের শব্দে সকাল হচ্ছে ক্রান্তিতে। জংলা পোশাক পরা হাতে বেতের ঢাল, লাঠি নিয়ে পুলিশের রুটমার্চ হচ্ছে এলাকা জুড়ে। রুটমার্চ শেষ হলে নেতাদের বাডির সামনে ভিড় হচ্ছে। কারও ছেলেকে পুলিশ ধরেছে, কারও স্বামীর খোঁজে রাতে পুলিশ হানা দিয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশ দাবি করছেন, পুলিশ যা করছে ঠিকই করেছে। কেননা এখনও গুজব চলছে ক্রান্তিতে। গোলমাল পাকানোর চেষ্টা এখনও চলছে।

বিকেলের আলো নরম হতেই পাখিদের কিচিরমিচির তিস্তাপাড়ের জনপদের গাছে গাছে। কালীমন্দিরের সামনে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, যাত্রী নয় বেঞ্চে বসা পুলিশ। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশ। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের উল্টো দিকেও একটি প্রতীক্ষালয়। সেখানেও পুলিশ। পরিচিত ব্যস্ততা না থাকলেও আজান, সন্ধের শঙ্খ-ধ্বনি এখনও ভেসে আসছে আগের মতো। গ্রামের মোড়ে মোড়ে পুলিশ থাকবে আরও কিছুক্ষণ।

Rumour Social Media Kranti Jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy