পাহাড়ে শান্তি চেয়ে যজ্ঞ জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
নিজেরা বাসভাড়া করে শিলিগুড়িতে গিয়ে মিছিলে অংশ নেবেন সায়ন্তন সরকারের মতো একদল বেসরকারি সংস্থার কর্মী। কোথাও বাসমালিক নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মিছিলে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তেলও ভরে দিচ্ছেন। আবার প্রিয়াঙ্ক রায়, রুমা রায়ের মতো দম্পতিদের অনেকে দুপুরের মধ্যে অফিস সেরে মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন।
স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, গৃহবধূ, আইনজীবী, ইঞ্জিনিয়রদের সংগঠন, সকলেই পথে নামার বার্তা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। যা দেখে স্কুল কলেজের উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের একাংশও মিছিলে পা মেলানোর ‘মেসেজ’ চালাচালি করছেন। সব মিলিয়ে আজ, শুক্রবার বিকেলে বাংলা ভাগের বিরোধিতায় নাগরিক সমাজের সমাবেশকে ঘিরে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় তুমুল উন্মাদনা দেখা দিয়েছে।
তাই বিশৃঙ্খলা, গোলমাল এড়াতে অতি মাত্রায় সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন। শিলিগুড়ির সদ্য নিযুক্ত পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেছেন, ‘‘কোথাও যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়, সে জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’’ এক পুলিশ কর্তা জানান, তাঁরা মিছিলকারীদের সব রকম সহযোগিতা করবে। কিন্তু, মিছিলকারীরাও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন বলে তাঁরা আশা করেন।
বস্তুত, গত ৮ জুন পাহাড়ে ফের আলাদা রাজ্যের দাবিতে আগুন লাগানো, ভাঙচুর, হামলা শুরু হলে সমতলেও প্রভাব পড়ে। তার উপরে সিকিমের রাস্তায় পশ্চিমবঙ্গের গাড়ি দেখলেই ভাঙচুর করার অভিযোগ বাড়তে থাকে। ইতিমধ্যে সমতলের একাধিক সংগঠন সিকিম সরকারের শিলিগুড়ির পরিবহণ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। সমতলেও আঁচ পড়ে পাহাড়ের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির। সেই সময়ে নাগরিক সমাজ সোসাল মিডিয়া ফোরাম ফর পিস অ্যান্ড ইউনিটি নামের একটি সংগঠন গড়ে আসরে নামে। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোট বেঁধে শিলিগুড়িতে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মিছিলও হয়েছে। এর পরেই মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।
সেই মিছিলের প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার সরগরম ছিল শহর। পার্কের সামনে থেকে মহানন্দা সেতু পর্যন্ত মিছিল হলে কত লোক থাকতে পারে তা আঁচ করার চেষ্টা হয়েছে। কাতারে-কাতারে ভিড় হলে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে সেই ব্যাপারে পুলিশ কর্তারা বৈঠকও করেন। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের বাস যাতে মিছিলে না আটকে যায় তা নিয়েও সতর্ক পুলিশ। শিলিগুড়ির একটি নাগরিক সংগঠনের মুখপাত্র রতন বণিক বলেন, ‘‘বেলা ৪টেয় বাঘাযতীন পার্ক থেকে মিছিল শুরু হবে। সেখানে কত মানুষ অংশ নেবেন তা এই মুহূর্তে ধারণা করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। এটা একটা আবেগের ব্যাপার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy