E-Paper

আলুর খেতে ট্রাক্টরের ফলায় ‘বফর্স চার্জার’ উঠল, আতঙ্কে গ্রাম

সেনাকে খবর দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয় করার ইউনিট এখনও জলপাইগুড়ির তিস্তাপারে রয়েছে। এ দিন অবশ্য কোনও বিস্ফোরক ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়নি।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৬
সিকিম থেকে ভেসে আসা বিস্ফোরক উদ্ধার করতে জলপাইগুড়ির তিস্তাপার এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন সেনা জওয়ানেরা। 

সিকিম থেকে ভেসে আসা বিস্ফোরক উদ্ধার করতে জলপাইগুড়ির তিস্তাপার এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন সেনা জওয়ানেরা।  ছবি: সন্দীপ পাল।

আবার উঠে এল ‘বফর্স চার্জার’। এ বার আলুর জমি থেকে। জলপাইগুড়ির সারদাপল্লি লাগোয়া চার নম্বর স্পারের কাছে জমিতে আলু চারা রোপণ করতে বৃহস্পতিবার ট্রাক্টর নামানো হয়েছিল। ট্রাক্টরের সামনের ফলায় লেগে পলি সরতেই বেরিয়ে পড়ল বফর্স কামানে বারুদ হিসাবে ব্যবহৃত ‘বফর্স চার্জার’। আতঙ্কে কৃষকেরা ওই জমিতে হাল দেওয়াই বন্ধ করে দিলেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, সেনাকে খবর দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয় করার ইউনিট এখনও জলপাইগুড়ির তিস্তাপারে রয়েছে। এ দিন অবশ্য কোনও বিস্ফোরক ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়নি। তিস্তাপারে বিস্ফোরক খুঁজে ফাটিয়ে দেওয়ার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ডিপ ক্লিন’।

হড়পা বানের ধাক্কায় সিকিমে বিপর্যয়ের জেরে গত সপ্তাহে তিস্তার জলে ভেসে গিয়েছে একটি অস্থায়ী সেনা ছাউনিও। সেই ছাউনিতে রাখা বিস্ফোরক গত কয়েক দিন ধরে এক নাগাড়ে উদ্ধার হয়ে চলেছে জলপাইগুড়ির তিস্তাপার জুড়। তিস্তাবাঁধের চার নম্বর স্পারের বাসিন্দা বাবু বিশ্বাস বলেন, ‘‘আলু চাষের জন্য জমি তৈরি হচ্ছে। তিস্তার বন্যায় পলিও জমেছে জমিতে। ট্রাক্টর ছাড়া, জমি তৈরি করা সম্ভব নয়। এ দিন ট্রাক্টর চালাতে গিয়ে এই বিপত্তি। বড় লোহার একটি খুঁটির মতো দেখতে জিনিস উদ্ধার হয়েছে। পুলিশকে জানিয়েছি।’’ এলাকার বাসিন্দা নিমাই মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রথমে কারও কিছু জানা ছিল না। পরে শুনলাম, ওটা নাকি বারুদে ঠাসা। বফর্স কামানের বারুদ। শুনেই ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।’’

নতুন করে বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ায় চিন্তায় প্রশাসন। বিশেষ করে তিস্তাপারের চাষের জমি থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্ক বেড়েছে। আলু চাষের জন্য জমি তৈরির কাজ চলছে। বেশিরভাগ খেতেই ট্রাক্টর দিয়ে জমি তৈরি হয়। তিস্তাপারে এই সব জমিতে বিস্ফোরক চাপা পড়ে থাকলে চাষের সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। পুলিশের তরফে এলাকায় মাইকে ঘোষণা করা সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের।

সেনার তরফে দাবি, বিস্ফোরকগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, খতিয়ে দেখতে সেনাবাহিনীর আরও একটি দল আসছে। পাঠানো হয়েছে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার আরও একটি দল। সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, তিস্তাপারে বিস্ফোরক খোঁজার অভিযান ‘অপারেশন ডিপ ক্লিন’ মূলত দু’টি ভাগে চলছে। প্রথমে বিস্ফোরণ খুঁজে চিহ্নিত করা এবং তার পরে নিষ্ক্রিয় করা।

এ দিন বিস্ফোরক চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে নিষ্ক্রিয় করা হয়নি। বিস্ফোরক ছাড়াও এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়িতে তিস্তায় ভেসে আসা ৪৫টি দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Teesta River

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy