Advertisement
E-Paper

আবর্জনায় ভোগান্তি বাসিন্দাদের

শহরে জমে থাকা নোংরা আবর্জনা সরানো নিয়ে একাধিক বার উদ্যোগী হয়েছে ইংরেজবাজার পুরসভা। ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জন্য একাধিক বারও জমি দেখা হয়েছে। তবে ওই পর্যন্তই।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৫ ০১:৩৫
পুরসভার ভ্যাট উপচে জঞ্জাল রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র।

পুরসভার ভ্যাট উপচে জঞ্জাল রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র।

শহরে জমে থাকা নোংরা আবর্জনা সরানো নিয়ে একাধিক বার উদ্যোগী হয়েছে ইংরেজবাজার পুরসভা। ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জন্য একাধিক বারও জমি দেখা হয়েছে। তবে ওই পর্যন্তই। যার ফলে শহরের মধ্যেই যত্রতত্র গড়ে ওঠেছে অস্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ড। নোংরা আবর্জনা নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শহরবাসীকে। ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য জমি দেখার কাজ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে টাকা দিয়ে তা কেনার চেষ্টা চলছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজারের মহদিপুরের কাঞ্চনটার এলাকা ১৬ বিঘা জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। বিঘা প্রতি ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দামে কেনা হবে। ওই এলাকায় জনবসতি না থাকায় স্থানীয়দেরও তেমন বাধা নেই। তবে পুরসভা ফের জমি দেখা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।

ইংরেজবাজার পুরসভার বা সমর্থিত নির্দল প্রার্থী নিহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, পুরসভা এখনও তার নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করতে পারল না। যার জন্য শহর জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। আর প্রতিবারই পুরসভা জানায় জমি কেনা হয়ে গিয়েছে। বাস্তবে কাজের কাজ কিছু হয় না। শহরে জমে থাকা নোংরা আবর্জনা নিয়ে পুরসভার সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। তিনি বলেন, কেন্দ্র সরকার ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। পুরসভা কাজ করতে না পারায় সেই টাকা পড়ে রয়েছে। আর এদিকে শহরই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পরিণত হয়েছে। জমি দেখার কাজই শেষ হচ্ছে না তাদের। মানুষ সাধারণ পরিষেবাটুকু দিতে ব্যর্থ পুরসভা। এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘বিরোধীরা এমন কথা বলবেই। খুব শীঘ্রই ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি হবে। সেখানে জমা আবর্জনা থেকে সার তৈরি করা হবে। সেই পরিকল্পনাও চলছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলিতে ডাস্টবিন দেওয়া হবে। তারও প্রক্রিয়া চলছে।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে কেন্দ্র সরকার ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জন্য ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেখানে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের পাশাপাশি জমে থাকা বর্জ্য পদার্থগুলি দিয়ে সার তৈরির করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে সাত বছরেও জমি চিহ্নিত করতে পারেনি পুরসভা। তবে একাধিক বার জমি দেখার প্রক্রিয়া চলেছে। প্রথমে জমি দেখা হয়েছিল ইংরেজবাজারের কোতুয়ালির নিমাইসারা এলাকায়। সেখানে প্রায় দশ লক্ষ টাকা খরচ করে জমি কেনাও হয়ে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে জনবহুল এলাকার মধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ড করতে বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তা নিয়ে চলে তীব্র চাপানউতোর। পরে পুরসভা সেই জমিটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

ফের ইংরেজবাজার শহরের চন্দন পার্ক এলাকায় জমি দেখার কাজ শুরু হয়। পুরসভা শহরের আবর্জনা সেখানে ফেলার কাজও শুরু করে দিয়েছিল। জমে থাকা নোংরা আবর্জনার দুর্গন্ধে বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। আবর্জনা ফেলার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ শুরু করলে সেখান থেকেও সরানো হয়। এখন পুরসভা অস্থায়ী ভাবে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করেছে ইংরেজবাজারের নিয়ন্ত্রিত বাজার চত্বর তথা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া এলাকায়। বছর দু’য়েক ধরে জমা করে রাখা হচ্ছে নোংরা আবর্জনা। সেখানে বাধা দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে পুরসভা ব্যবসায়ীদের জানিয়েছিলেন নিচু এলাকায় নোংরা আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হবে। এখন তা কার্যত ছোট পাহাড়ের আকার নেওয়া হয়েছে।

ইংরেজবাজার পুরসভার গৌড় রোড, থানা রোড, অক্রুরমণি স্কুল লাগুয়া এলাকায়, বাঁশ বাড়ি উমেশচন্দ্র বাস্তু হারা স্কুল লাগোয়া এলাকায় এখনও ডাস্টবিনের ব্যবস্থা নেই। আর বিভিন্ন এলাকায় ডাস্টবিন থাকলেও নোংরা আবর্জনা উপচে পড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়াদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের এও অভিযোগ, বাড়ি থেকে নিয়মিত নোংরা আবর্জনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয় না। যদিও বছর দু’য়েক আগে বাঁশি বাজিয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে নোংরা আবর্জনা সংগ্রহ করতেন পুরসভার কর্মীরা। ২০১৩ সালে পুরসভার তরফ থেকে প্রতিটি বাড়িতে দুটি করে বালতি দেওয়া হয়েছিল। দুই ধরনের ময়লা ফেলার জন্য বালতিগুলি দেওয়া হয়েছিল।

People garbage englishbazar malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy