E-Paper

তিন কন্যার সাফল্যে উচ্ছ্বাস বেরুবাড়িতে

আরকজন, গিদাল পাড়ার রিয়ার বাবা নীরেন রায় কাজ করেন ভিন রাজ্যে। সংসার চালাতে হিমশিম খান মা চম্পা। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৫১ নম্বর পেয়েছেন রিয়া।

অভিষেক সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৫ ০৯:০৩
তিন কৃতী। খুশির হাওয়া জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি গোমিরাপাড়া হাই স্কুলে।

তিন কৃতী। খুশির হাওয়া জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি গোমিরাপাড়া হাই স্কুলে। ছবি: সন্দীপ পাল।

আর্থিক প্রতিকূলতাকে জয় করে উত্তরণ। সীমান্ত এলাকার নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে আসা তিন ছাত্রীই উচ্চ মাধ্যমিকে পেয়েছে ৯০ শতাংশের উপরে নম্বর। ত্রয়ীর কৃতিত্বে খুশির হাওয়া বেরুবাড়ির গোমিড়াপাড়া হাই স্কুলে। সন্ত্রাসবাদের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায়, ভারতীয় সেনার পদক্ষেপকে কুর্নিশ ওই তিন কৃতীর।কাছেই বাংলাদেশ সীমান্ত। বাড়ির গা ঘেঁষে ছোট চা বাগান। মাটি-লেপা মেঝে আর টিনের বাড়িতে বাবা-কাকাদের সঙ্গে থাকে বেরুবাড়ির সরকার পাড়ার সুস্মিতা। বাবা অমল রায় স্থানীয় এক গ্রামীণ ব্যাঙ্কে সামান্য টাকায় অস্থায়ী কাজ করেন। রোজগার তেমন না হওয়ায়, নিজের জমিতে ধান, তিল চাষ করেন। মেয়ে ভাল ফল করায় খুশি অমল ও তাঁর স্ত্রী মিনতি। উচ্চ মাধ্যমিকে সুস্মিতার প্রাপ্ত নম্বর ৪৫২। বাংলায় ৮৭, ইংরাজিতে ৮৫, ভূগোলে ৯৩, ইতিহাসে ৯১, রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ৯০ ও সংস্কৃতে ৯১ পেয়েছেন। স্নাতক হওয়ার পরে নার্সিং প্রশিক্ষণ নিতে চান তিনি। দিনে ৫-৬ ঘন্টা পড়তেন সুস্মিতা। স্থানীয় এক দাদাই পড়া দেখিয়ে দিতেন। অমল বলেন, "ছোট থেকেই আমার মেয়ের পড়াশোনায় আগ্রহ।" অবসরে ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলতে ভালোবাসেন সুস্মিতা।

আরকজন, গিদাল পাড়ার রিয়ার বাবা নীরেন রায় কাজ করেন ভিন রাজ্যে। সংসার চালাতে হিমশিম খান মা চম্পা। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৫১ নম্বর পেয়েছেন রিয়া। বাংলায় ৯৩, দর্শনে ৯৭, রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ৮৭, সংস্কৃতে ৮৮ পেয়েছেন তিনি। তাঁরও ভবিষ্যতে নার্স হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। রিয়া বলেন, "স্কুল থেকে খুব সাহায্য পেয়েছি। মা-ও যতটা পারেন পড়া দেখিয়েছেন।" চম্পা বলেন, "নিজের অধ্যবসায়েই এই সাফল্য পেয়েছে মেয়ে।"ওঁদেরই সহপাঠিনী, বর্তমানে শহরের পাণ্ডাপাড়ার বাসিন্দা অনন্যা দাস পেয়েছেন ৪৭২। বাংলায় ৯৫, ইংরেজিতে ৯১, ভূগোলে ৯২, দর্শন ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ৯৭, ইতিহাসে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯০। বড় হয়ে আইপিএস অফিসার হতে চান তিনি। অনন্যা বলেন, "খাকি উর্দিটা আমাকে ছোট থেকেই টানে। কলেজে ভর্তি হয়ে ইউপিএসসি নিয়ে খোঁজ নেব।" পরীক্ষার আগে ৮-১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছেন তিনি। অবসরে গান শোনা ও গল্পের বই পড়েন অনন্যা।

স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক আশিস দেবদাস বলেন, "প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ওঁরা তিনজনই কঠিন লড়াই করে সাফল্য পেয়েছে। ওঁদের দেখে পরবর্তীতে বাকিরাও অনুপ্রেরণা পাবে।" দেশে যুদ্ধের আবহে এই তিন কৃতীরই সাফ কথা, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে পাকিস্তানকে কড়া শিক্ষা দেওয়া খুব প্রয়োজন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Berubari

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy