Advertisement
E-Paper

‘যা নেই তা দেব কোথা থেকে?’ এনুমারেশন ফর্ম ফেরালেন সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা, জবাব দিতে না-পেরে ফিরলেন বিএলও-রা

২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়। সে ক্ষেত্রে ওই বাসিন্দারা নাগরিকত্ব প্রমাণে কী নথি জমা করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৫৫
Chhitmahal

সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে বিএলও। —নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ শুরু হয়েছে। অন্য জায়গার মতো কোচবিহার জেলার দিনহাটায় সাবেক ছিটমহলেও গিয়েছিলেন বিএলও-রা। কিন্তু তাঁদের হাত থেকে এনুমারেশন ফর্মই নিয়েও ফেরত দিয়ে দিলেন ছিটমহলের পোয়াতুর কুঠির বাসিন্দারা। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘যা নেই, তা দেব কোথা থেকে?’’

২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়। সে ক্ষেত্রে ওই বাসিন্দারা নাগরিকত্ব প্রমাণে কী নথি জমা করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পরে, যে সব নথি ওই বাসিন্দাদের দেওয়া হয়েছে, সেগুলোকে নির্বাচন কমিশন মান্যতা দেবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এই অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে দিনহাটা বিধানসভার ১২৮ এবং ১২৯ নম্বর বুথে এসআইআর তালিকাভুক্তির ফর্ম নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিএলও বাড়ি বাড়ি যান। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা এনুমারেশন ফর্ম নিতেই অস্বীকার করেন। বাসিন্দাদের দাবি, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে তাঁরা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ফর্মে ২০০২ সালের তথ্য দিতে হবে! সে তথ্য তাঁরা কোথায় পাবেন? যত ক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোনও সুষ্ঠু সমাধান বা নির্দেশিকা দিচ্ছে, তত দিন তাঁরা এই ফর্ম গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দেন বাসিন্দারা।

এমন সমস্ত প্রশ্নের জবাব ছিল না বিএলও-র কাছেও। বাধ্য হয়ে ফর্ম নিয়ে ফিরে যান তাঁরা। সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দা সাদ্দাম মিঞাঁ বলেন, ‘‘ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময়ের আগে ভারত এবং বাংলাদেশের জয়েন্ট সার্ভে অনুযায়ী একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই আমরা ছিটমহল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ভারতের নাগরিকত্ব পাই। কিন্তু আজ বিএলও যে ফর্ম নিয়ে এসেছেন, সেখানে ২০০২ সালে পরিবারের কাদের নাম ভোটারে রয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যে হেতু আমরা ২০১৫ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছি, সে ক্ষেত্রে আমাদের কাছে ২০০২ সালে ভারতীয় হিসাবে কোনও নথি নেই। আমাদের বাবা-মা, ঠাকুর্দা-ঠাকুমা, আত্মীয় কারও নামই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নেই। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে আমরা এই ফর্ম ফিলাপ করব? তাই আমরা সেই ফর্ম গ্রহণ করিনি।’’ সাদ্দামের মতো কোচবিহারের সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন যদি এর কোনও সুষ্ঠু সুরাহা না করে, তাঁরা আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন।

এ নিয়ে ৭/১২৮ নাম্বর বুথের বিএলও বিপুল মোদের মন্তব্য, ‘‘এসআইআরের ফর্ম পূরণের জন্য ১২৮ নম্বর বুথে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাসিন্দাদের দাবি, যে হেতু তাঁরা ছিটমহলের বাসিন্দা তাই, এই ফর্ম তাঁদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তাঁদের অনেক অনুরোধ করা হয়েছে। তার পরেও তারা ফর্ম গ্রহণ করেনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে ফিরে এসেছি।’’

এ নিয়ে দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ জানিয়েছেন, কমিশন যে নথিকে প্রামাণ্য মানছে, তা সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের কাছে নেই। সে ক্ষেত্রে তাঁরা কী করবেন, তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে ওই ভোটাররা যাতে বাদ না পড়েন।

SIR BLO chhitmahal Cooch Behar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy