বোনাস সমস্যার জেরে পুজোর মুখে বন্ধ হয়ে গেল ধূপগুড়ির গাদংয়ের খোলাইগ্রামের বিদেশ প্লাই বোর্ড কারখানা। ফলে, পুজোর আনন্দ মাটি হয়ে গেল স্থায়ী ও অস্থায়ী সাড়ে তিনশো শ্রমিকের। মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকরা বন্ধ গেটের মধ্যে কারখানা বন্ধের নোটিস দেখে মুষড়ে পড়েন।
কারখানার ম্যানেজার রামপ্রসাদ বিশ্বাস বলেন, “গত কয়েক বছর ধরেই ভাল প্লাই বোর্ড উৎপাদন হচ্ছিল না। কার্যত লোকসানেই চলছিল কারখানা। তবু বিভিন্ন উপায়ে খোলা রেখে কারখানা চালানো হচ্ছিল। এবার শ্রমিকদের বোঝানো হয়, লোকসানে চলার দরুন বোনাস ৮.৩৩ শতাংশ হারে দেওয়া হবে। কিন্তু শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা ২০ শতাংশ হারে বোনাসের দাবিতে অনড় থাকেন। তাই বাধ্য হয়ে কারখানা বন্ধ করতে হল। তবে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভালই চান।”
শ্রমিকরা ফাঁকির কথা মানতে নারাজ। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা আপন ভেবেই কাজ করতাম। কাজ ফাঁকি দিলে এত দিন কেন মালিকপক্ষ কিছু বলল না? এখন বোনাস না দেওয়ার জন্য অজুহাত দেখাচ্ছে।’’
কারখানায় ২৪ বছর ধরে কাজ করা স্থায়ী শ্রমিক নিত্য মোদক বলেন, “কারখানা বন্ধ করে পুজোর মুখে সর্বনাশ করল মালিক। মালিকপক্ষের খামখেয়ালিপনার জন্য উৎপাদন কম হচ্ছিল। শ্রমিকদের কাজ করার জন্য ঠিক মতো গাছের লগ ও পাতা থাকত না কারখানায়। পাতা না থাকলে শ্রমিকরা কী করবে? যোগান না থাকলে প্লাই উৎপাদন হবে কী ভাবে? বোনাস তো পেলামই না। কাজ যাওয়ার জন্য পুজোর আনন্দটাও মাটি হয়ে গেল।” এই কারখানা বোনাস সমস্যার জেরে গত বছরও ২৬ দিন বন্ধ ছিল। পরে আলোচনা করে ১৮ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হয়।
জলপাইগুড়ির ডেপুটি শ্রম কমিশনার হিরালাল পান বলেন, “বিদেশ প্লাই বোর্ড মিলের সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস পেয়েছি। বুধবার বোনাস সমস্যা নিয়ে দুপুরে ওই কারখানার বোনাস নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।”