প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে হাইকোর্ট নির্দেশে দিয়েছে এ বার কোনও বাজিই পোড়ানো যাবে না বলে। কিন্তু তাতেও স্বস্তিতে থাকতে পারছে না নাগরিকদের একাংশ থেকে প্রশাসন। কারণ চোরাগোপ্তা ভাবে বাজি ফাটানোর ঘটনা। প্রতিবার দীপাবলী ও কালীপুজোতে নিয়ম ভেঙে ফাটামো হয় শব্দবাজি। এ বার সেই এক কায়দায় আতসবাজিও পোড়ানো হতে পারে ভেবে আশঙ্কা রয়েছে। শব্দবাজির ক্ষেত্রে আওয়াজ হয়, ফলে তার খোঁজ পাওয়া এবং বাধা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু আতসবাজির ক্ষেত্রে কী ভাবে খোঁজ মিলবে সেটাই ভাবাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনকে। ফলে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি দুই শহরেই রাস্তায় নেমে বাজি বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন পুলিশকর্মীরা।
মহাবীরস্থানের নিউ সিনেমা রোড। বন্ধ দোকানের ব্যানারে বাজির দোকানের নাম। সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই পাশ এসে একজন বললেন, ‘‘কী লাগবে?’’ তুবড়ি, রংমশাল চাই বলতেই ঝটিতি উত্তর, ‘‘আজ হবে না। কাল দিতে পারি। কাল দোকান খোলা হবে। মোম, ফানুসও আছে তো।’’ শিলিগুড়ি বাজি বাজারের আড়ত মহাবীরস্থান বাজার, খালপাড়া নয়াবাজারের ভিতরের গলি, নিবেদিতা মার্কেটের একটি অংশ। আদালতের নির্দেশের পর থেকে দোকানের ঝাঁপ ফেলা থাকলেও লুকিয়ে বাজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। তা রুখতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। দুর্নীতিদমন শাখা এবং গোয়েন্দা বিভাগকেও কাজে লাগানো হচ্ছে বলে জানান পুলিশকর্তারা। নয়াবাজার থেকে রতন কুমার দাস এবং নিবেদিতা মার্কেট লাগোয়া কলাহাটি থেকে দীপ সাহাকে বাজি বিক্রির অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করে পুলিশ। আটক হয়েছে লক্ষাধিক টাকার বাজি। যদিও প্রধাননগর, মাটিগাড়া, বাগডোগরা, ভক্তিনগর এলাকায় এখনও কোন বাজি ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘আজই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারকে বলেছি, প্রশাসন শক্ত না হলে, মানুষ সচেতন না হলে আদালতের নির্দেশ কাজে লাগবে না।’’
শিলিগুড়িতে যেখানে ইতিমধ্যেই পুলিশি অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছে। সেখানে জলপাইগুড়ি শহরে শুক্রবারও বাজির দোকান খুলেছে, বিক্রিও হয়েছে বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ি শহরে প্রায় ৫০টি আতসবাজির দোকান রয়েছে। কেন এমন অবস্থা? জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ রাজ্য সরকারের মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে এসে পৌঁছয় নি। নির্দেশ এলেই আতশবাজি বন্ধ করতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’’ নাগরিকদের প্রশ্ন, নির্দেশ আসার আগেই যদি বাড়িতে বাড়িতে বাজি মজুত হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে পুলিশ কী করবে? অনেকের আশঙ্কা, প্রতিবছর শব্দবাজির দাপটই পুরোপুরি রুখতে পারে না পুলিশ, এ বার তার সঙ্গে আতসবাজিও জুড়েছে।
বাজি পোড়ানো বন্ধ রাখার অনুরোধ জানাতে একমঞ্চে আসছেন রাজনৈতিক নেতা, পরিবেশকর্মী, চিকিৎসকরা। আজ শনিবার বাজি বন্ধের অনুরোধ জানাতে বাঘা যতীন পার্কের সামনে তাঁরা দাঁড়াবেন। শিলিগুড়ি ফাইট করোনা এবং কোভিট কেয়ার নেটওয়ার্কের উদ্যোগে এই কর্মসূচি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy