পরপর দু’দিনে দুটি আলাদা ঘটনায় উন্মত্ত জনতাকে সামলাতে গিয়ে পুলিশ বাহিনীর উপরে পাল্টা হামলায় আহত হলেন চার পুলিশ কর্মী। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাত পর্যন্ত মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও কারা জড়িত রয়েছে, তা খোঁজা হচ্ছে। একটি ক্ষেত্রে ক্লোজ় হতে হয়েছে ওসিকেও।
সোমবারো রাতে শিলিগুড়ির আশিঘর এলাকায় ইস্টার্ন বাইপাসে এক পথচারীকে ধাক্কা মারে এক বাইক আরোহী। তাতে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে আশিঘর এলাকা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ওই বাইকটি। তাঁদের বাধা দিতে গেলে আশিঘর ফাঁড়ির ওসি ভবেন রায়ের হাতে চোট লাগে। আরও এক পুলিশকর্মীও সামান্য আহত হন। এই ঘটনায় দায়ী করে আশিঘর ফাঁড়ির ওসি ভবেনবাবুকে ক্লোজ় করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও এটাকে রুটিন বদলি বলে দাবি করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ওসি।
ঘটনায় গণ্ডগোলে জড়িত থাকা ও পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিন জনকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদিন দু’জনকে হেফাজতে নিয়েছে ভক্তিনগর থানার পুলিশ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বদলি বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশের এসিপি(পূর্ব) পিনাকী মজুমদার বলেন, ‘‘এটা রুটিন বদলি। তবে যা হয়েছে তা দফতরের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে বেশি কিছু বলব না।’’ তবে পুলিশ সূত্রের খবর বিভিন্ন ঘটনায় শাসকদলের বিরাগভাজন ছিলেন ওসি। তাঁকে সরানোর জন্য চাপ ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। সোমবার রাতের ঘটনায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার অজুহাত পাওয়া যায়। সূত্রের খবর আপাতত তাঁকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ লাইনে তাঁকে রাখা হয়েছে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পবিত্র বর্মনকে।
অন্য ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার মহম্মদ বক্স মোড় এলাকায়। এদিন সকালে ফের ছেলেধরা সন্দেহে নেপালের বাসিন্দা এক ট্রাক চালককে বেধড়ক মারে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। খবর পেয়ে পুলিশ বাধা দিতে গেলে তাঁদের উপরেও চড়াও হয় তাঁরা। আহত হন দু’জন পুলিশ কর্মীও। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাঁদের মধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি। তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েক মাসে একটিও ছেলে চুরির অভিযোগ নেই। কিছু লোক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ কাজ করছে। তাঁদের চিহ্নিত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, নেপাল থেকে গাড়িতে আম নিয়ে ফুলবাড়ি যাচ্ছিলেন বলে ডম্বর বাহাদুর খাওয়াস নামে ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন। কান্তিভিটা এলাকায় তাঁর গাড়ির চাকা ফেটে গেলে নিজের গাড়ি রেখে অন্য একটি গাড়িতে ওঠেন তিনি। এতে কিছু লোকের তাঁকে ছেলেধরা বলে সন্দেহ হয়, বলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে। তারা পিছু ধাওয়া করে ওই গাড়িটিকে ধরে ফেলে। এরপরে তাকে নামিয়ে মারধর কের। গাড়িটিও ভাঙচুর করে। নিগৃহীত হতে হয় তাঁকে নিজের গাড়িতে জায়গা দেওয়া অন্য ট্রাকের চালককেও। মারধর করতে দেখে মোড়ে ট্রাফিকে থাকা এক পুলিশকর্মী বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ফাঁসিদেওয়া থানা থেকে পুলিশ বাহিনী গেলে তাঁদেরে লক্ষ করে ঢিল ছুড়তে থাকে হামলাকারীরা। পরে পুলিশ তাঁদের চার জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এ ধরণের গুজবে কান দিতে অনুরোধ করে প্রচার চালানো শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy