কৃতি: গৌড়বঙ্গের সমাবর্তনে পূজা। নিজস্ব চিত্র
বাবা লটারির দোকানের সামান্য কর্মচারি। পাঁচজনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। মেয়েকে টিউশন পড়ানোর সামর্থ্য ছিল না। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করলেও অর্থাভাবে মেয়েকে বাইরে ভালো কোনও কলেজে ভর্তি করাতে পারেননি। সেই মেয়ে যে রাজ্যপালের উপস্থিতিতে সোনার মেডেল পাবেন তা ভাবতেও পারেননি বাবা। কিন্তু ইচ্ছেশক্তি আর অদম্য মানসিকতা থাকলে যে কোনও কিছুই অসম্ভব নয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন মালদহের সামসির পূজা সাহা।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভালো ফলের স্বীকৃতি স্বরূপ সোনার মেডেল দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়েছে পূজাকে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃত অনার্সে প্রথম হয়েছিলেন পূজা। কিন্তু তাঁর সাফল্যের কথা অনেকেই জানতেন না। পূজার বাবা প্রভাতবাবুর তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে পূজা বড়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকেও প্রথম বিভাগে পাশ করেছিলেন পূজা।
ভালো ফল করলেও অর্থাভাবে বাইরে ভর্তি হতে না পারায় সামসি কলেজেই ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু গত বছর ফল বের হতেই দেখেন ৫২৯ নম্বর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তিনি। আপাতত কষ্ট করে হলেও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ-তে ভর্তি হয়েছেন। মেয়ে সোনার মেডেল পেলেও কীভাবে তার পড়াশুনা চলবে সেই দুশ্চিন্তাই আপাতত পেয়ে বসেছে তাঁর বাবা ও মাকে।
পূজা অবশ্য হার মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘‘যেভাবেই হোক পড়াশুনা চালিয়ে যাব।’’ কলেজের শিক্ষিকা মেধা কুমারী সবরকম সহযোগিতা করেছেন পূজার সঙ্গে। সামসি এগ্রিল হাইস্কুলের শিক্ষক স্নেহাশিস পাল নিখরচায় টিউশন পড়িয়েছেন পূজাকে। সে সব কথা জানিয়ে পূজার সংকল্প, ‘‘আমিও ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হয়ে অভাবি ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’
এতদিন পূজার কথা তেমনভাবে কেউ জানত না। কিন্তু সমাবর্তনে মেডেল পাওয়ার পর তার সাফল্যের কাহিনি জানতেই সামসি জুড়েই খুশির আবহ তৈরি হয়েছে। সামসি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোজ ভোজ বলেন, পুজার সাফল্য আশা করি অনেককেই অনুপ্রাণিত করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy