Advertisement
E-Paper

রোগ ছড়ানোর আগেই চাই প্রতিরোধ ব্যবস্থা

ম্যালেরিয়া এখন অনেকটাই কম। তুলনায় ডেঙ্গির দাপট বেড়ে চলেছে। চরিত্র বদলাচ্ছে এডিস মশার। যে মশা এই রোগের জীবাণুর বাহক। বদলাচ্ছে রোগের গতিপ্রকৃতিও।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অরুণাভ সরকার

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ০৮:০৯
Share
Save

দেখতে ক্ষুদ্র হলেও মশা যে আমাদের কাছে খুবই বিপজ্জনক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ মশাবাহিত ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, এনসেফ্যালাইটিসের মতো রোগে প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটে। মালদহ থেকে কোচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ডেঙ্গি-প্রবণ। এক সময় ম্যালেরিয়ার দাপট আতঙ্কের কারণ হত। ডুয়ার্সের জঙ্গলে তাকে ‘জঙ্গল ম্যালেরিয়া’ও বলা হত।

ম্যালেরিয়া এখন অনেকটাই কম। তুলনায় ডেঙ্গির দাপট বেড়ে চলেছে। চরিত্র বদলাচ্ছে এডিস মশার। যে মশা এই রোগের জীবাণুর বাহক। বদলাচ্ছে রোগের গতিপ্রকৃতিও। সে কারণে সাবধানতা,সতর্কতা খুবই জরুরি।

রোগ সংক্রমণ ছড়ানোর আগেই তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করাই ভাল। সেই কাজ করার ক্ষেত্রে পুরসভা, পঞ্চায়েত, প্রশাসনের যতটা ভূমিকা, বাসিন্দাদের ভূমিকাও ততটাই। তাই প্রতিরোধের কাজের ক্ষেত্রে একে অন্যকে দোষারোপ না করে নিজেদের সচেতন হওয়া জরুরি। একে অন্যের সহযোগিতাও চাই।

অনেক সময়েই বাড়ির আনাচকানাচে পরিত্যক্ত পাত্রে জমে থাকা জল মশার আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। সে সব দিকে সাধারণ বাসিন্দাদের নজর রাখতে হবে।মনে রাখতে হবে, বোতলের ফেলে দেওয়া ছিপিতে জমে থাকা জলেও মশার লার্ভা জন্মাতে পারে। পুরসভা, পঞ্চায়েত, প্রশাসনের তরফে সে সব ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে লার্ভানাশক স্প্রে। সেই কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, বাসিন্দাদের দেখে নিতে হবে। ওই কাজটি অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথ ভাবে হয় না বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরে ডেঙ্গির দাপট
বেড়ে ওঠে।

বাসিন্দারা দোষারোপ করেন পুরসভা, পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে। আবার পুরসভা, পঞ্চায়েত, প্রশাসন বাসিন্দাদের সচেতনতার অভাবকে দায়ী করেন।স্বাস্থ্যকর্মীরা মশা-প্রতিরোধের কাজে গেলে অনেক সময় বাসিন্দারা ঘরে ঢুকতে দিতে চান না। এ ধরনের মানসিকতা বিপজ্জনক। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ির ভিতরে পরিত্যক্ত পাত্রে, ছাদে ফুলের টবে জমে থাকা জমে ডেঙ্গির বাহক মশার লার্ভা মেলে। সেখান থেকে আশপাশের এলাকায় ডেঙ্গি ছড়াতে পারে। অনেকের পরিত্যক্ত জমিতে আবর্জনার স্তূপেও জল জমে থাকছে। জমির মালিক তা পরিষ্কার করেন না। তাই কেউই দায় এড়াতে পারেন না। যেখানেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, সেখানেই বিপদ দুই পক্ষেরই।

বাড়িতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর কথা বলা হয়। অথচ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কেউ কেউ তা মানেন না। আবার হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীকে বিনা মশারিতে শুয়ে থাকতেও দেখা যায়। তাই সরকারি স্তরে এবং ব্যক্তিজীবনে যথাযথ ব্যবস্থা
নেওয়া জরুরি।

বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে, এ ধরনের রোগ সংক্রমণের সময় কিছু নার্সিংহোম, ল্যাবরেটরি মুনাফা করতে নেমে গিয়েছে। কালোবাজারি হচ্ছে ডেঙ্গি নির্ণায়ক ‘প্লেটলেট কাউন্ট’ পরীক্ষা করানো নিয়ে। অথচ সরকারি হাসপাতালে বিনা খরচে সেই পরীক্ষা করানো যায়।

অভিযোগ, অনেকে নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গিয়েও খরচের জেরে বিপাকে পড়েন। সে সবও কাম্য নয়। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নিশ্চয়ই এ সব দেখা হয়। অনেক সময় ডেঙ্গিতে মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন থেকে
যায়। বাসিন্দারাও নানা কারণে বিভ্রান্ত হন। তাই সঠিক জিনিস সহজ করে বলাই ভাল। অনেক সময় তা মেনে নেওয়া কঠিন হলেও আমরা যেন তা গ্রহণ করতে, সঠিক পথে সেই বিপদ থেকে বার হতে সচেষ্ট হই,
সচেতন হই।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}