Advertisement
০৬ মে ২০২৪

মোবাইলে কথা বলায় বন্দি প্রহৃত

জেলের ভিতর মোবাইলে কথা বলার সময়ে ধরা পড়ে যাওয়ায়, শৌচাগারে মোবাইল সেটটি ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক বন্দির বিরুদ্ধে। এরপরে ওই বন্দিকে অফিসে ডেকে পাঠিয়ে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জেলের দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০৪:১০
Share: Save:

জেলের ভিতর মোবাইলে কথা বলার সময়ে ধরা পড়ে যাওয়ায়, শৌচাগারে মোবাইল সেটটি ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক বন্দির বিরুদ্ধে। এরপরে ওই বন্দিকে অফিসে ডেকে পাঠিয়ে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জেলের দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে। কী ভাবে বন্দির হাতে মোবাইল গেল, তাঁর খোঁজখবর শুরু করেছে জেল কর্তৃপক্ষ, সেই সঙ্গে মারধর করে বন্দীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ায় অভিযুক্ত দুই কারা আধিকারিককেও শো-কজ করা হয়েছে। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের। হাসান লস্কর নামে সেই বন্দিকে প্রথমে জেল হাসপাতালে পরে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাকে মারধর করার প্রতিবাদে হাসপাতালে ‘অনশন’ চালাচ্ছে হাসান। জলপাইগুড়ির জেলার রাজীব রঞ্জন এবং ডিসিপ্লিনারি অফিসার অনিমেষ সিংহকে শো-কজ করেছে দফতর।

কারা দফতরের উত্তরবঙ্গের এআইজি কল্যাণকুমার প্রামাণিক বলেন, “বন্দি কার কাছ থেকে মোবাইল ফোন পেয়েছে সেটা জানার জন্য তাকে সংশোধনাগারের অফিসে ডেকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বন্দিকে মারধর করা ঠিক হয়নি। ঘটনাটি জানতে দুই অফিসারকে শো-কজ করা হয়েছে।”

জেলার রাজীব রঞ্জন বলেন, “কাউকে মারধর করিনি। আমাকে ফাঁসানোর জন্য বন্দিটি মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছে। কার কাছ থেকে সে মোবাইল পেয়েছে, জানতে শুধু অফিসে ডেকে পাঠিয়েছিলাম মাত্র। সে তখন নিজের মাথা আমার টেবিলের কাচের মধ্যে নিজেই জোরে ঠুকে দেয়। তাতেই তার মাথা ফেঁটেছে।’’

জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সুত্রপাত বৃহস্পতিবার রাত বারটার সময়। জেলের ডিসিপ্লিনারি অফিসার অনিমেষ সিংহ ওয়ার্ড পরিদর্শনের সময় দেখেন, ৫ নম্বর সেলের বন্দি হাসান লস্কর মোবাইলে কথা বলছেন। খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত লস্কর সম্প্রতি বহরমপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে জলপাইগুড়িতে এসেছে। মোবাইলে কথা বলতে দেখে অনিমেষবাবু বিষয়টি জেলারকে জানান বলে দাবি। ইতিমধ্যে হাসান মোবাইল ফোনটি শৌচাগারে ফেলে দিয়ে জল ঢেলে দেয় বলে অভিযোগ। সে সময়েও হাসানকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরদিন সকালেও বন্দি হাসান লস্করকে অফিসে ডেকে জেলার মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার পার্থ দে বলেন, “বন্দির সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। তার অবস্থা স্থিতিশীল আছে। সে কিছু খেতে চাচ্ছে না।”

রবিবার দুপুরে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন দুজন ডেপুটি জেলার রানা ঘোষ এবং নিলাদ্রি বাগচী। তাদের সঙ্গে যান জেলার ওয়েলফেয়ার অফিসার ব্রততী বিশ্বাস এবং জেলের সরকারি পরিদর্শক প্রতীক ঝা চক্রবর্তী। হাসান লস্কর তাঁদের কাছে মারধরের লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। এ দিকে, বন্দি মোবাইল কোথা থেকে পেয়েছিল, তা এখনও জেল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেনি। তার জন্য পৃথক ভাবে তদন্ত চালানো হচ্ছে বলে জেলের তরফে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE