শিলিগুড়ি আদালত থেকে এক বন্দির নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে।
সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ শিলিগুড়ি আদালত থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন একাধিক মামলায় বিচারাধীন বলরাম বর্মন। তাকে এদিন শিলিগুড়ি থানার একটি গাড়ি চুরির মামলায় আদালতে আনা হয়েছিল। কিন্তু কী ভাবে সে ‘নিখোঁজ’ হয়ে গেল তা পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছেও। তাকে কেউ পালাতেও দেখেনি বলে জানিয়েছেন দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীরাও। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তকে কোর্ট লকআপ থেকে বের করে এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এজলাসে ঢোকানোর সময়ে সে কোনওভাবে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে। বন্দির আইনজীবী বিপ্রজিত দাস দাবি করেন, ‘‘বলরাম মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। তবে ঠিক হয়েছে আমিও বলতে পারব না।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ বলরামকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। লকআপে ঢোকানোর পর তার নাম আদালতের চালানে নথিভুক্তও হয়। এরপরে দুপুর ২টো নাগাদ শুনানি শুরু হয়। তখনই বাকি বন্দিদের সঙ্গে তাকে এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়। আড়াইটে নাগাদ মামলার শুনানির সময় দেখা যায় সে এজলাসের লকআপে নেই। সকলে মনে করেন ভুল করে কোর্ট লকআপেই তিনি থেকে গিয়েছেন। সেখানে ছুটে যান নিরাপত্তাকর্মীরা। সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি। এতে ঠিক কোনও সময় থেকে সে নিখোঁজ তা কেউ পরিষ্কার করে বলতে পারেনি। এমনকী, তাকে এজলাসের লকআপে ঢোকানো হয়েছিল কি না তাও পরিস্কার নয়।
শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (সদর) অংমু গ্যামসো পাল বলেন, ‘‘কীভাবে ওই বিচারাধীন বন্দি নিখোঁজ হল তা পরিস্কার নয়। আপাতত কোর্ট ইন্সপেক্টরকে তদন্তের প্রাথমিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি থানায় ২২৪ ধারায় একটি বন্দি পালানোর মামলা রুজু হয়েছে। আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তে কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পলাতক বন্দির আইনজীবী জানান, বলরামের সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বলে মনে হচ্ছিল। তাকে পুলিশ একাধিক মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে বলেও আমার কাছে অভিযোগ করতেন। তবে ধীরে ধীরে মামলাগুলিতে তাঁর জামিন হচ্ছিল।’’
পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক বলরামের বাড়ি আলিপুরদুয়ার জেলার বারবিশাতে। তার বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি ও ভক্তিনগর থানায় বিভিন্ন অভিযোগে মোট ১৫টি মামলা রয়েছে। বেশিরভাগই গাড়ি চুরির মামলা। এর মধ্যে শিলিগুড়ি থানায় তিনটি ও ভক্তিনগর থানায় বাকি মামলাগুলি হয়েছে। তিন মাস আগে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ি এলাকা থেকে গাঁজা পাচারের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সেই মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে অফিসারেরা দেখেন, ধৃতের বিরুদ্ধে ভক্তিনগর ও শিলিগুড়ি থানা মিলিয়ে আরও পুরানো মামলা রয়েছে। সেই মামলাগুলিতে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বেশিরভাগ মামলা ভক্তিনগর থানাতে হওয়ায় তাকে আজালতের নির্দেশের জেল হেফাজতের পর, জলপাইগুড়ি সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল। এদিন সেখান থেকে শিলিগুড়ি থানার চুরির মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy