Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

মেয়ের বন্ধুদেরও স্কুলে আনার অঙ্গীকার

প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সরকার বলেন, ‘‘অভিভাবকদের ডেকে ছেলেমেয়েদের রোজ স্কুলে পাঠানোর কথা বলেছিলাম। কয়েকদিন তাঁরা নিয়মিতই আসছিল, কিন্তু ফের একই পরিস্থিতি।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:৩০
Share: Save:

একই গ্রামের ২২ জন পড়ুয়া। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। বাবা-মা সকাল হলেই চলে যান দিনমজুরের কাজে। আর অভিভাবকরা বাড়িতে না থাকায় ওই পড়ুয়াদের বেশিরভাগই আর স্কুলমুখো হয় না।

এই-ই চলছিল। স্কুলের শিক্ষকরা অভিভাবকদের বোঝানোরও চেষ্টা করেন। কিন্তু দু-তিনদিন ঠিকঠাক চললেও ফের স্কুল কামাই শুরু হয়। অবশেষে, গ্রামেরই এক বাসিন্দা অভিভাবিকা নিজের মেয়ের সঙ্গে ওই ২২ জন পড়ুয়াকেও প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে আসার অঙ্গীকার করলেন। মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের দিন থেকে শুরু হল সেই যাত্রা। এ ঘটনা মালদহের হবিবপুরের পোলিয়াপাড়া গ্রামের ওলতারা প্রাইমারি স্কুলের।

স্কুল সূত্রেই খবর, পোলিয়াপাড়া গ্রামের ২২ জন কচিকাঁচা এই স্কুলের পড়ুয়া। কেউ মাসে ১০ দিন তো কেউ ৭ দিন স্কুলে যায়।

প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সরকার বলেন, ‘‘অভিভাবকদের ডেকে ছেলেমেয়েদের রোজ স্কুলে পাঠানোর কথা বলেছিলাম। কয়েকদিন তাঁরা নিয়মিতই আসছিল, কিন্তু ফের একই পরিস্থিতি।’’

এ দিকে, ওই গ্রামেরই বাসিন্দা দীপিকা মণ্ডল। তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। মেয়েকে রোজই স্কুলে দিয়ে যান। তিনিই উদ্যোগী হয়ে গ্রামের ওই ২২ জন পড়ুয়াকেও রোজ স্কুলে নিয়ে আসার কথা স্কুল শিক্ষকদের জানান। শিক্ষকরা সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে যান। ওই ২২ পড়ুয়ার অভিভাবকদের তা জানানোও হয়। এ দিন শিক্ষক দিবসে সেই যাত্রা শুরু করলেন দীপিকাদেবী। এ দিন হেঁটে তিনি বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে যান, আবার স্কুল শেষে গ্রামে নিয়েও যান।

তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের ছেলেমেয়েরা স্কুলে অনিয়মিত হয়ে পড়ায় খারাপ লাগছিল। তাই নিজেই উদ্যোগী হয়ে তাঁদের স্কুলে নিয়ে আসার দায়িত্ব নিলাম।’’

হবিবপুর সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক নয়ন দাস বলেন, ‘‘দীপিকাদেবী যে ভাবে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখো করার চেষ্টা করছেন, তাতে আমরা তাঁকে কুর্নিশ জানাই।’’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘অন্য গ্রামেও এমন ভাবেই অভিভাবকরা এগিয়ে এলে খুশি হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

students School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE