Advertisement
E-Paper

সংসার সামলেই পুজো আয়োজন

কুমারগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকা দক্ষিণ তেলিপাড়া। গ্রামের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও পুজা হত না। গ্রামের পুরুষদের অনেক বলেও যখন ব্যবস্থা হলো না তখন এগিয়ে এলেন বধূরাই।

জয়ন্ত সেন ও রাজু সাহা

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৮

কুমারগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকা দক্ষিণ তেলিপাড়া। গ্রামের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও পুজা হত না। গ্রামের পুরুষদের অনেক বলেও যখন ব্যবস্থা হলো না তখন এগিয়ে এলেন বধূরাই। প্রতিদিনের রান্নার বরাদ্দ থেকে এক মুঠো দু’মুঠো করে চাল জমিয়ে রেখে মাসে মাসে বিক্রি করে এক বছরের জমানো টাকা দিয়ে গ্রামের প্রায় ৫০ জন বধূ আয়োজন করে ফেলেছেন দুর্গাপূজার।

সরস্বতী সরকার, রিঙ্কু সরকাররা জানালেন ‘‘প্রতিদিন যতবার রান্না হয় ততবার বরাদ্দ চাল থেকে একমুঠো দু’মুঠো করে চাল তুলে রাখা শুরু করি। প্রতিমাসে সেই চাল বিক্রি করে ৬০-৭০ টাকা মিলতো। এ ভাবে সারা বছরে ৫০ জন মিলে ৪০ হাজার টাকা জমা হয়। আমাদের এই উদ্যোগ দেখে গ্রামের পুরুষরাও এখন সাহায্য করা শুরু করেছে।’’ পুজোর সম্পাদক শেফালি দাস বলেন, ‘‘গ্রামে পুজো না থাকায় পুরুষরা সাইকেল চালিয়ে দূরে পুজো দেখতে চলে যেতেন। মহিলা ও কচিকাঁচাদের পুজো দেখতে সমস্যা হত। এখন গ্রামে পুজোর আয়োজন হওয়ায় সে সমস্যা দূর হল।’’

মালদহের অভিরামপুরের অর্পিতা প্রামাণিক, তালতলার সুচন্দ্রা রায়চৌধুরি, চার্চপল্লির পপি বসাক, আর পাঁচটা মহিলার মতোই সাধারণ ঘরের বধূ। ফি বছর দুর্গাপুজো এলেই নিজেরাই এক একজন দশভূজা হয়ে ওঠেন। পুজোর মিটিং ডাকা থেকে শুরু করে চাঁদা তোলা, পুজোর অনুমতি নেওয়া, প্রতিমা মণ্ডপে আনা- সব কাজই করেন তাঁরা। এবারও মালদহের একাধিক মহিলা পুজো কমিটি মৃন্ময়ীর আরাধনায় মেতে উঠেছেন। বিগ বাজেটের পুজোগুলির সঙ্গে পাল্লা না দিয়ে পুজোতে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া রেখে মানুষের মন জয় করতে চাইছেন।

১৯৮৫ সাল থেকে দশভূজার পুজো করে আসছে ইংরেজবাজার শহরের অভিরামপুর মহিলা পুজো কমিটি। এবার ৩১ তম বর্ষ। কমিটিতে ২৬ জন সদস্যা রয়েছেন। তাঁরা বাড়ির কাজ সামলে প্রায় এক মাস ধরে পুজোর জন্য চাঁদা তুলে বেড়িয়েছেন। বুধবার দুপুরে প্রায় সকলেই গিয়েছিলেন মাধবনগরে মৃৎশিল্পীর কাছ থেকে প্রতিমা আনতে। কমিটির অর্পিতা প্রামাণিক, তপতী পালরা বলেন, ‘‘আমরা নিজেরাই পুজোর যোগাড় করি. এটাই আমাদের কাছে বড় পাওনা।’’ শহরেরই গৌড় রোডের তালতলায় এবার ১২ তম পুজোর আয়োজন করেছে মহিলা বৃন্দ। কমিটির মীনা ঘোষ, কল্পনা রায়রা বলেন, ‘‘সারা বছর সংসারের কাজ সামলালে শ্রাবণ মাসে মিটিং করে পুজোর কাউন্টডাউন শুরু করি।’’ এবার ১১ তম পুজোর আয়োজন করেছে চার্চপল্লি মহিলা সর্বজনীন পুজো কমিটি। কমিটির পপি বসাক, গোপা মণ্ডল বলেন, ‘‘মাকে নিষ্ঠাভরে পুজো করতেই আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করি।’’ পুড়াটুলি মহিলাপুজো কমিটির সদস্যা জবা সরকার বলেন, ‘‘আমরা বিগ বাজেটের পুজোগুলিকে কখনওই টেক্কা দিতে চাই না। সেই সামর্থও নেই। পুজো করে চার দিন সকলকে আনন্দ দিতে চাই।’’ পুরাতন মালদহের অঞ্চলপাড়া মহিলা কমিটির এবার ষষ্ঠতম পুজো। এ দিন মণ্ডপে প্রতিমা এসেছে। কমিটির শর্মিষ্ঠা দাস, পপি মণ্ডল, বন্দনা দাসরা বলেন, ‘‘সাবেকিয়ানা বজায় রেখে পুজোর আয়োজন করছি।’’ মকদমপুর কামার পাড়াতে এবার প্রথম পুজো করছেন মহিলারা। তারাও পুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতে উঠেছেন।

kumargram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy