মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক অপ্রতুল। যার জেরে আলিপুরদুয়ার জেলায় বিভিন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকের টান পড়েছে। সেই অভাব মেটাতে প্রাথমিক বা উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্তত দেড়শো জন শিক্ষক ‘গার্ড’ বা পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় কাজ করবেন। তবে যে সব স্কুল থেকে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে, সেখানে পঠনপাঠনের কী হবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
যদিও আলিপুরদুয়ার জেলার শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রতিবারই প্রাথমিক বা উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকদের একাংশ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তার জেরে কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতে পঠনপাঠনের সমস্যা না-হয়, সে ভাবেই শিক্ষকদের বাছাই করা হয়।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলায় এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮০৬৫ জন। জেলার ৭০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে তারা। আলিপুরদুয়ার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (ডিপিএসসি) চেয়ারম্যান পরিতোষ বর্মণ জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষা যে সব কেন্দ্রে হচ্ছে তার কোথাও পর্যবেক্ষকের সংখ্যা কম থাকলে প্রাথমিক বা উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিবারই তা হয়। এ বারেও তাই হচ্ছে।
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩৮জন শিক্ষক পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকবেন। সবচেয়ে বেশি শিক্ষক নেওয়া হয়েছে কালচিনি ব্লক থেকে। সেখানে ৪০ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওই দায়িত্ব পালন করবেন। শিক্ষা দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, ‘কোয়ালিফায়েড’ শিক্ষকদের এই কাজের জন্য বাছাই করা হয়েছে।
যে সব স্কুল থেকে ওই শিক্ষকেরা মাধ্যমিক পরীক্ষার ‘ডিউটি’ করতে যাবেন, সেই সব স্কুলে পড়াশোনার ক্ষতি হবে না তো?
ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান পরিতোষ বর্মণ বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন ‘হাই অ্যাটাচড’ (একই চত্বরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল) প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি বন্ধ থাকবে। ফলে মাধ্যমিক পরীক্ষার পর্যবেক্ষকের কাজের জন্য সেই সব স্কুলের শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তাই পড়াশোনায় কোনও ক্ষতি হবে না।’’
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষাকে ঘিরে আলিপুরদুয়ার শহরের পাশাপাশি জেলার প্রতিটি ব্লকে ‘কন্ট্রোল রুম’ খোলা হয়েছে। বনাঞ্চল সংলগ্ন পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির আশপাশে রবিবার রাত থেকেই টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বন দফতরের তরফে গড়া হয়েছে ‘কিউআরটি’ দলও। যাতে করে যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। মাধ্যমিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশের তরফেও প্রতিটি থানা এলাকায় দু’টি করে ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়েছে। থাকছে ‘হেল্পলাইন’ নম্বরও। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে সে জন্য জেলার প্রতি থানায় চারটি করে মোটরবাইক নিয়ে তৈরি থাকবেন পুলিশকর্মীরা।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সে জন্য জেলা পুলিশ প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নিয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)