অভিযান: কিছুদিনের জন্য দেখা যাবে না এমন ছবি। নিজস্ব চিত্র
পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আপাতত তিস্তায় র্যাফ্টিং বন্ধ করে দিল কালিম্পং জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার কালিম্পঙের জেলাশাসক বিশ্বনাথ এই নির্দেশ দেন। জেলার তিস্তা-রঙ্গিতকে ঘিরে পাঁচটি জায়গায় অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস হিসাবে বিভিন্ন সংস্থার র্যাফ্টিং চালু ছিল। জেলাশাসক সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠকের পর ওই নির্দেশিকা জারি করেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলার লাবারবোটে, কিরণে, ভালুখোলা, সাতমাইল এবং মেল্লি’র এলাকায় র্যাফ্টিং হত। জড়িত সংস্থাগুলিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে নথিপত্র, সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণের কাগজপত্র জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। র্যাফ্টগুলিকেও সরজমিনে খতিয়ে দেখার জন্য তৈরি রাখতে বলা হয়েছে।
গত বুধবার মেল্লি এলাকায় তিস্তায় র্যাফ্ট উল্টে বিহারের পর্যটক রোশন সিংহের মৃত্যু হয়। ঘটনায় মৃতের স্ত্রী বহ্নিশিখা-সহ তিনজন জখম হয়েছিলেন। এই ঘটনার জেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক অফিসারেরা জানান, মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ভরা পর্যটন মরশুম শুরু হবে। তার আগেই র্যাফ্টিং সংক্রান্ত নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। জেলাশাসক বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই নিরাপত্তা, সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেই তিস্তায় র্যাফ্টিং-এর ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে তিস্তায় র্যাফ্টিং-এ সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। সেবার বোট উল্টে চারজন মারা গিয়েছিলেন।
সরকারি সূত্রের খবর, গত কয়েক দশক ধরে তিস্তার ১১ কিলোমিটার জুড়ে র্যাফ্টিং চালু রয়েছে। অন্তত ৬০ জন যুবক র্যাফ্টিং-র সঙ্গে যুক্ত। কোনও দলে ২৩ জন, কোনও দলে ১৫ জনও আছেন। কালিম্পং-সিকিমে পর্যটকদের একাংশ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসা-যাওয়ার সময় র্যাফ্টিং করেন। বোটের ভাড়া পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে সর্বাধিক ছ’জনকে র্যাফ্টে বসানো হয়।
ন’বছর আগে ৩৫ জন যুবককে পার্বত্য পরিষদের তরফে গোয়ায় প্রশিক্ষণের পর র্যাফ্টিং-এর লাইসেন্স দেওয়া হয়। কিন্তু সেই লাইসেন্সগুলি তারপর আর নবীকরণ করানো হয়নি। অনেক যুবক প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের সঙ্গে থাকতে থাকতেই র্যাফ্ট চালাতে শুরু করেছেন। তিস্তায় কোনও দেহ ভেসে উঠলে বা গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে এরাই পুলিশ, দমকলের সঙ্গে উদ্ধার কাজে হাত লাগান।
পর্যটকদের একাংশের অভিযোগ, অনেকগুলি র্যাফ্ট পুরনো হয়েছে। হেলমেট, লাইফ জ্যাকেট ঠিকঠাক থাকে না। বোটের গাইডরা নদীতে র্যাফ্ট চালাতে পারেন। নিরাপত্তা সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত নন। এদের লাইসেন্সপ্রাপ্ত গাইডও নেই বলে অভিযোগ। তিস্তা-রঙ্গিত রিভার র্যাফ্টিং ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রোশন ভুজেল বলেন, ‘‘লাইসেন্স গাইড ছাড়াই অনেকে সংস্থা খুলে বসেছে। এটা প্রশাসনকে দেখতে হবে।’’ তিনি জানান, লাইসেন্স নবীকরণের জন্য গোয়ায় যাওয়ার বিষয়টি কীভাবে করানো যায় তার একটা রাস্তা বার করা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy