আজ ঝ়ড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। এই পূর্বাভাস পেয়েই ভোটপর্ব নির্বিঘ্ন করতে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। বেশ কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকাতেও ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়ার পরেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। দুর্যোগের জন্য যাতে ভোটগ্রহণ ব্যাহত না হয় তার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন। বিকল্প বাহিনীও তৈরি রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তিনি বলেন, ‘‘আবহাওয়া খারাপ থাকতে পারে এটা আগেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আগাম কিছু সতর্কতা নেওয়াই ছিল। ইতিমধ্যেই পোলিং বুথগুলিতে কর্মীরা পৌঁছে গিয়েছেন। তাই ভোটগ্রহণে ব্যাঘাত হওয়ার সম্ভাবনা কম।’’
গত কয়েক দিন যাবৎ উত্তরের আবহাওয়া সমানে ওঠানামা করেছে। মার্চের গোড়ায় ভোট ঘোষণার সময়ে পাহাড়ে তীব্র শীত, তো সমতলে প্রবল গরম। সঙ্গে আর্দ্রতা। সেই গরম বদলে মাঝেমধ্যে ঝোড়ো হাওয়া উঠে পরিস্থিতিও বদলায়। তবে সেটা সাময়িক। সম্প্রতি প্রচার যখন তুঙ্গে, তখন এই আবহাওয়া যেমন ঘামিয়ে দিয়েছে প্রার্থীদের, তেমনই চাঁদি ফাটা রোদ সামলে জনসভায় ভিড় বাড়াতে হিমশিম খেয়েছেন ভোট ম্যানেজারেরা।
এমনকী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তারকা প্রচারকারীর সভাতেও মাঠ ভরাতে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হয়েছে। মমতা নিজে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছেন, এই রোদ মাথায় করে যাঁরা সভায় এসেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।
রাজনৈতিক ম্যানেজারদের অনেকেই এখন বলছেন, ঠিক প্রচার শেষ হল, আর আবহাওয়া বদলের ইঙ্গিতও দিতে শুরু করেছে হাওয়া অফিস। প্রচারে তো ঘাম ঝরেছেই। এর পরে যদি ভোটের দিন দুর্যোগ হয়, তা হলে ভোটারদের বুথ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে আরও লড়াই করতে হবে।
দুর্যোগ হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রতিটি বুথে পোলিং অফিসারদের হাতে অতিরিক্ত ত্রিপল ও কাপড়, পাঠানো হচ্ছে। প্রতিটি বুথে দেওয়া হয়েছে পলিথিনও। বৃষ্টি হলে ইভিএম মেশিনে যাতে জল না ঢুকতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা। এ ছাড়া লণ্ঠন ও মোমবাতি পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া হয়েছে। যেখানে পোলিং বুথের পরিকাঠামো ততটা ভাল নয় সেখানে স্থানীয় স্তরে বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জরুরি অবস্থা মোকাবিলার, বাঁশ, দড়ি, ত্রিপলের ব্যবস্থা রাখতে। ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট’ টিমকে তৈরি রাখা হচ্ছে। নির্ধারিত কর্মী ছাড়াও কিছু অতিরিক্ত কর্মী থাকবেন। তাঁদের জরুরি অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া থাকছে।
গত দু’দিন ধরেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিও হয়েছে। কয়েক জায়গায় শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। রবিবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান সুবীর সরকারও জানান, ভোটের দিনও আবহাওয়া মূলত মেঘলাই থাকবে। তাপমাত্রাও খুব বেশি বাড়বে না বলে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। হাল্কা ঝড়ও হতে পারে। তবে প্রবল ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।’’ তাপমাত্রাও খুব বেশি বাড়বে না বলেই জানানো হয়েছে। সর্বনিম্ন ২০ ও সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রির মধ্যে দিনের তাপমাত্রা থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy