Advertisement
E-Paper

বিক্ষোভে অসুস্থ শিক্ষাকর্তা

বেলা ১০টা নাগাদ পঙ্কজবাবু হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছায় ছুটি নিয়ে মালদহের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ আন্দোলনকারীদের ঠেলে সরিয়ে পুলিশ পঙ্কজবাবুর চেম্বারে ঢোকেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৮

শিক্ষাকর্মীদের একাংশের রাতভর অবস্থান বিক্ষোভে আটকে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়লেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পঙ্কজ কুণ্ডু। শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ আন্দোলনকারীদের ঠেলে সরিয়ে পুলিশ পঙ্কজবাবুর চেম্বারে ঢোকেন। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। বেলা ১০টা নাগাদ পঙ্কজবাবু হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছায় ছুটি নিয়ে মালদহের বাড়িতে চলে গিয়েছেন।

তার আগে রায়গঞ্জ থানায় তিনি কারও নাম না করে শিক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধে তাঁকে রাতভর আটকে রাখার অভিযোগ দায়ের করেছেন। উল্লেখ্য, আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীরা কোনও সংগঠনের তরফে আন্দোলন করেননি বলে দাবি করলেও তাঁরা সকলেই তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষাকর্মী সংগঠনের সদস্য। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষাকর্মী সংগঠন বৈধতা পায়নি। এ দিকে, এ দিন দুপুর পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীরা পঙ্কজবাবুর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ১১ জন শিক্ষাকর্মীর গত দেড় বছরের বর্ধিত বেতন ফেরত নেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখান।

সম্প্রতি মালদহের গৌড়বঙ্গের উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলেরই একটি সংগঠন আন্দোলনে নামে বলে দাবি করা হয়। উপাচার্য তারপরে পদত্যাগ করেছেন।

রায়গঞ্জে আন্দোলনকারীদের তরফে শিক্ষাকর্মী বাবন সাহার দাবি, তাঁরা একই দাবিতে সোমবার থেকে ফের আন্দোলন শুরু করবেন।

রায়গঞ্জ থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাসের দাবি, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, রেজিস্ট্রার পঙ্কজবাবুর বিরুদ্ধে ১১ জন শিক্ষাকর্মীকে বেআইনিভাবে নিয়োগ সংক্রান্ত শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ তুলে সেই সব শিক্ষাকর্মীর বর্ধিত বেতন ফেরত নেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইয়ে থেকে তাঁর চেম্বারে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন বাকি শিক্ষাকর্মীরা! বাবনবাবুর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৪৭ জন শিক্ষাকর্মী চুক্তির ভিত্তিতে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, কিছু দিন আগে রেজিস্ট্রার চুক্তিভিত্তিক মর্যাদায় নিযুক্ত ১১ জন শিক্ষাকর্মীকে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিযুক্ত মর্যাদায় নিয়োগের শংসাপত্র দিয়েছেন। তিনি বলেন, রেজিস্ট্রার কোনও অসাধু স্বার্থে ওই ১১ জন শিক্ষাকর্মীকে ভবিষ্যতে স্থায়ী চাকরি পাইয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁদের বেআইনিভাবে ওই শংসাপত্র দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘তাই রেজিস্ট্রারের শংসাপত্র অনুযায়ী ওই ১১ জন শিক্ষাকর্মী যদি দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিযুক্ত থাকেন, তবে গত দেড়বছরে তাঁদের বর্ধিত বেতন ফেরত নেওয়ার দাবিতেই বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আমরা রেজিস্ট্রারের চেম্বারে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিলাম।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বেআইনি কাজ করে ফেঁসে গিয়ে এদিন সহানুভূতি কাড়তে অসুস্থতার অভিনয় করে তিনি পালিয়ে গেলেন।’’

রেজিস্ট্রার পঙ্কজবাবুর অবশ্য দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মর্যাদায় থাকাকালীন ওই ১১ জন শিক্ষাকর্মী যে মর্যাদায় নিযুক্ত ছিলেন, তার ভিত্তিতেই তাঁদের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। রাতভর জেগে থেকে ও আন্দোলনকারীদের সৃষ্টি করা মানসিক চাপের জেরে তিনি এদিন সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। যদিও বাবনবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন হয়েছে। পঙ্কজবাবুর উপরে কোনও চাপসৃষ্টি করা হয়নি। তিনি শৌচাগারে গিয়ে ফোন করে পুলিশকে ডেকে এনে আমাদের উপর বলপ্রয়োগ করিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী পদে প্রায় ৪০ জন শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হওয়ার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মর্যাদায় থাকাকালীন গত প্রায় দুই থেকে তিন দশক ধরে ওই ১১ জন অস্থায়ী শিক্ষাকর্মী নিযুক্ত রয়েছেন। বর্তমানে তাঁদের সকলেরই সরকারি চাকরির বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। তাই তাঁরা আদালতের মাধ্যমে যাতে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে স্থায়ী পদে নিযুক্ত হওয়ার সুযোগ পান, তারজন্যই ওই ১১ জন শিক্ষাকর্মী রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে ওই শংসাপত্র নিয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও ওই ১১ জন শিক্ষাকর্মী এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Registrar Raiganj Raiganj University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy