মায়ের মুখ হোক ‘মাদারে’র মুখের আদলে। কুমোরটুলিতে এসে আবদার করছেন উদ্যোক্তাদের অনেকেই। কিন্তু পুজো একেবারে দোরগোড়ায়, এই সময়ে এমন আবদার রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা। দমে না গিয়ে মণ্ডপে মাদারের ছবি ও বাণীতে সাজানো ফ্লেক্স লাগানোর ভাবনাচিন্তা চলছে।
শিলিগুড়ির কুমোরটুলির প্রতিমা শিল্পীরা জানাচ্ছেন, থিমের চাহিদা এবার খানিকটা হলেও কম। গণেশ চতুর্থীর আগের দিন কুমোরটুলিতে খোঁজ মিলল মাত্র দু’টি থিমের প্রতিমার। ডাকের সাজ, টানা চোখের অথবা একচালার সাবেকি প্রতিমার চাহিদাই বেশি। তবে মাদারের সন্ত উপাধি প্রাপ্তি শেষ মুহূর্তে উৎসাহিত করেছে উদ্যোক্তাদের অনেককেই।
জলপাইগুড়ির একটি বিগ বাজেটের পুজো কমিটির মুখপাত্র দেবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘থিম হবে না বলেই ঠিক ছিল। তবে মাদার টেরিজা সন্ত হওয়ার পরেই আমরা থিমের দিকে ঝুঁকেছি। সেই মতো চেষ্টাও চালাচ্ছি। এলইডি আলোয় মাদারের মুখের আদল ফুটিয়ে তোলার কথা হচ্ছে।’’ অনুরোধ এসেছিল শিলিগুড়ির কুমোরটুলিতেও। তা রাখতে পারেননি শিল্পীরা। অশোক পালের কথায়, ‘‘আবদার করলেই তো হবে না, এখন সময় কোথায়। থিমের প্রতিমার খাটনি অনেক, সময়ও লাগে বেশি। আগে থেকে না বললে হয় না।’’ মিলন পালের কথায়, ‘‘খুব জোরাজুরি করলে, মাদারের মূর্তি বানিয়ে দেব ঠিক করেছি।’’
প্রতিমায় সম্ভব না হলেও, পুজোর মণ্ডপ বা আলোকসজ্জায় মাদারের অনুষঙ্গ রাখার কথাও ভাবছেন উদ্যোক্তারা। জলপাইগুড়ির দিশারি ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ সত্যব্রত দে বলেন, ‘‘মাদারের সন্ত সম্মান প্রাপ্তি বাংলার গর্ব। পুজোর থিমে তা কী ভাবে রাখা যাবে তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছি।’’
শুধু সময় নয়, মৃৎশিল্পীদের দাবি এবারে প্রতিমা বানানোর উপকরণও অনেক দামি। তাতেই থিমের প্রতিমায় ভাঁটার টান। প্রতিমা তৈরির অন্যতম উপকরণ বাঁশের দাম এবার কয়েক গুণ বেড়েছে। মৃৎশিল্পী অশোকবাবু জানালেন, বাঁশের খোঁজে শিলিগুড়ির বাজারে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। এক একটি বাঁশ কিনেছেন ১০০ টাকা দরে। গতবার যা মিলেছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। অসমের করিমপুর থেকে পাটের সুতো আসে। তার বাজারদরও কয়েক গুণ। গতবার এক কুইন্টাল সুতোর দাম ছিল ৩০০ টাকা, এবার দর ৫০০ টাকা।
তবে উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, প্রতিমা না হোক এবার মাতৃশক্তির আরাধনায় মণ্ডপসজ্জা ও আলোয় মাদারকে প্রণাম জানাবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy