কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোতেই দুর্গোৎসবের মেজাজে মাতেন গোটা এলাকার মানুষ। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের আউটিনা অঞ্চলের যশুরাপাড়ার বাসিন্দাদের উদ্যোগে আয়োজিত এই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয়ে উঠেছে সর্বজনীন।
স্থানীয় বটতলার মাঠের লক্ষ্মীমন্দিরে অনুষ্ঠিত ওই পুজো এ বারে ৬৯ বছরে পড়ল। পুজোকে কেন্দ্র করে মণ্ডপের সামনের মাঠে পুজোর দিন, রবিবার থেকেই শুরু হচ্ছে তিন দিনের মেলা। উদ্যোক্তারা জানান, শনিবার থেকে মনিহারি ও রকমারি খাবারের পসরা নিয়ে ব্যবসায়ীরা দোকান সাজাতে শুরু করেছেন। যশুরাপাড়া গ্রামের মেয়ে জামাই-সহ আত্মীয় কুটুমও চলে এসেছেন।
পুজো উদ্যোক্তা উত্তম সরকার জানান, আত্মীয়স্বজনে গৃহস্থ বাড়িগুলি সরগরম। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে গোটা এলাকার কৃষিজীবী গৃহস্থ পরিবার এক হয়ে পুজো আয়োজনের শেষপর্বের কাজ শুরু করছেন।
শুধু এলাকাবাসীর কাছেই নয়, ওই মেলা মনিহারি, মিষ্টি, মাটির পুতুল বিক্রেতাদের কাছেও সমান প্রসিদ্ধ। যশুরাপাড়া ও আশপাশের এলাকার ন’পাড়া, দৌড়গঞ্জ, নিমগাছি, লস্করহাট, কাঁঠালপুকুর, পারিলা গ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ লক্ষ্মীপুজো ও মেলা উৎসবের দিনগুলিতে শামিল হয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন।
কৃষিকর্মের উপর নির্ভরশীল যশুরাপাড়া এলাকার মানুষ জমিতে উৎপাদিত ‘সোনার ফসল’ ধানকে লক্ষ্মী বলে মানেন। প্রবীণেরা জানান, তাঁদের বাবা ঠাকুর্দার আমল থেকে গোলাভরা সোনার ফসলের প্রার্থনায় বহু বছর আগে শুরু হয়েছিল কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা। তাতে ধনসম্পত্তির দেবী লক্ষ্মীর কৃপাদৃষ্টিতে এলাকায় ধানচালের কারবার ফুলে উঠেছিল। গ্রামে তৈরি হয়েছিল সকলের জন্য ধনধান্য গোলা। খরাজনিত কারণে ঘাটতি শস্য উৎপাদন বা টানের সময় সেই ধানের গোলা থেকে অন্নের জোগান হত বাসিন্দাদের।
কালের নিয়মে এলাকার জমির উর্বরতা কমেছে। আবহাওয়া বদলের জেরে জমিতে আগের মতো ধানের উৎপাদন নেই বটে। তবে দেবীর কৃপায় আজও সবুজ খেতে ভরা গোটা এলাকা। উত্তম জানান, নিজেদের মধ্যে চাঁদা হিসেবে টাকা ও চাল সংগ্রহ করে হয় জাঁকজমকের লক্ষ্মীপুজো। তিন দিন এলাকায় আলোর ব্যবস্থা থাকে। পুজোর রাতে ন-দশ কড়াইয়ে চলে খিচুড়ি প্রসাদ রান্না। পরদিন দিনভর চলে ভোগ বিতরণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy