Advertisement
০২ মে ২০২৪
Tea Production

রাসায়নিক নিয়ে পর্ষদের নির্দেশে চিন্তা ছোট বাগানে

ছোট চা বাগানগুলি জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পক্ষে নমুনা পরীক্ষা করানোর মতো পরিকাঠামো বা আর্থিক ক্ষমতা কিছুই নেই।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ ০৬:২৯
Share: Save:

উত্তরবঙ্গের চায়ের উৎপাদনে কাল, সোমবার থেকে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছোট চা বাগানের পাতা থেকে চা তৈরি বন্ধ হওয়ার মুখে।

এই আশঙ্কার পিছনে রয়েছে চা পর্ষদের রাসায়নিক কীটনাশক নিয়ে কড়াকড়ি। আগামী কাল, ১ এপ্রিল থেকে তৈরি চায়ে রাসায়নিক কীটনাশকের ছিটেফোঁটাও পাওয়া গেলে পুরো উৎপাদিত চা বাতিল করা হবে এবং প্রয়োজনে, কারখানার লাইসেন্সও বাতিল করে দিতে পারে বলে চা পর্ষদ জানিয়েছে। এতেই তৈরি হয়েছে আশঙ্কা।

চা কারখানাগুলি চিঠি দিয়ে ছোট চা বাগানগুলিকে জানিয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে কারখানায় পাতা নিয়ে এলে সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার শংসাপত্র আনতে হবে, যাতে উল্লেখ থাকবে কোনও রাসায়নিক কীটনাশক তাতে নেই। ওই শংসাপত্র ছাড়া, কোনও বাগানের পাতা নেওয়া হবে না।

এ দিকে, ছোট চা বাগানগুলি জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পক্ষে নমুনা পরীক্ষা করানোর মতো পরিকাঠামো বা আর্থিক ক্ষমতা কিছুই নেই। যার জেরে আগামী কাল, সোমবার থেকে চা উৎপাদনে প্রভাব পড়তে পারে উত্তরবঙ্গে।

তৈরি চায়ে রাসায়নিক কীটনাশকের নমুনা পেলে পদক্ষেপের নির্দেশ বড় বাগানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যেহেতু বড় বাগানের নিজস্ব কারখানা রয়েছে, সে কারণে তাদের পক্ষে নমুনা পরীক্ষা বা কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। সমস্যা তৈরি হয়েছে ছোট চা বাগানে। কারণ, ছোট বাগান নিজেরা উৎপাদন করে না, তারা পাতা বিক্রি করে চা কারখানাকে। চা পর্ষদের নির্দেশে তৈরি চায়ের নমুনা পরীক্ষা করা হবে।

উত্তরবঙ্গের চা কারখানাগুলির পরিচালকদের সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় ধানুটি বলেন, ‘‘পাতা থেকে চা তৈরির সময় কীটনাশক বা রাসায়নিক মেশানো হয় না। চা গাছে রাসায়নিক দেওয়া হয়। কাজেই সেই দায় আমরা নেব কেন? তাই ছোট চা বাগানগুলিকে বলা হয়েছে, পাতা কারখানায় নিয়ে আসার সময়ে নমুনা পরীক্ষার শংসাপত্রও আনতে হবে।”

ছোট চা বাগানের তরফে দাবি, তাদের পক্ষে নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। ছোট চা বাগানের মালিকদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “চা পাতার নমুনা পরীক্ষা হয় অসমে এবং কলকাতায়। আমাদের পক্ষে সেখানে পাঠিয়ে অপেক্ষা করা এবং পরীক্ষার খরচ বহন দু’টিই অসাধ্য। এ ক্ষেত্রে আরও সময় প্রয়োজন।”

চা পর্ষদের তরফে দাবি করা হয়েছে, পুরো পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়েছে। ক্ষতিকারক রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে নমনীয় হওয়ার প্রশ্নই নেই বলে দাবি পর্ষদের। জেলা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি তপন দে-র দাবি, “চা পর্ষদের হঠকারী সিদ্ধান্তের ফলে, চা পাতা উৎপাদন এক রকম বন্ধ হতে চলেছে। হাজার হাজার ছোট বাগানের লক্ষাধিক শ্রমিকের রুজি সঙ্কটে পড়তে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chemical Fertilizer Tea Board
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE