Advertisement
E-Paper

এ বার পুজোয় পথের দিশা

দিন কে দিন ভিড় বাড়ছে শহরের পুজোয়। তাই এ বার আগে থেকেই ভিড় নিয়ন্ত্রণে একাধিক পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেট।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৬
পুজো ম্যাপ, অ্যাপ-এর উদ্বোধনে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব ও শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

পুজো ম্যাপ, অ্যাপ-এর উদ্বোধনে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব ও শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

দিন কে দিন ভিড় বাড়ছে শহরের পুজোয়। তাই এ বার আগে থেকেই ভিড় নিয়ন্ত্রণে একাধিক পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেট।

এক দিকে গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপ এলাকায় বসানো হচ্ছে নজরদারি টাওয়ার। অন্য দিকে, মোড়গুলিতে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার নিয়োগ করা হবে বলেও সিন্ধান্ত নিয়েছে শিলিগুড়ি পুলিশ। বড় বাজেটের পুজো বা বড় পুজোগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরাও বসছে এ বারে।

এর পাশাপাশি শুক্রবার, মহালয়ার দিন সাংবাদিক বৈঠক করে শিলিগুড়ি পুলিশের তরফে দর্শনার্থীদের সাহায্যে পুজোর গাইড ম্যাপ, হেল্প ডেস্ক আর পুজোর অ্যাপ প্রকাশ করা হয়। অ্যাপ মিলতে আরও কয়েক দিন লাগবে। তবে পুজোর ঠিক আগে সব দিক থেকে তৈরি হয়ে যাবে শিলিগুড়ি শহর, বলছেন পুলিশ কর্তারাই।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘প্রতি বছর পুজোকে ঘিরে শহরে নানা প্রস্তুতি নিতে হয়।’’ একই সঙ্গে যান নিয়ন্ত্রণ ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ওয়াচটাওয়ার বা নজরদারি মিনার তৈরির উপরে বিশেষ করে জোর দিয়েছেন তিনি। হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বর্ধমান রোড ধরে মহানন্দার সেতু মোড়ে পৌঁছানোর রাস্তায় গত দুই বছর ধরে ওয়াচটাওয়ার বসাচ্ছে পুলিশ। এ বার তার সংখ্যা বাড়তে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

কমিশনারেটের আওতায় শহর এবং গ্রামীণ এলাকা মিলিয়ে ৪৩৮টি পুজো হচ্ছে। এ ছাড়া বাড়ির পুজো এবং ছোট পুজো মিলিয়ে আরও অন্তত ৩০০টির পুজো হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে শহরে অন্তত ২০টি ‘বিগ বাজেট’-এর পুজো হচ্ছে। একে ঘিরেই পুজোয় পুলিশ আলাদা ‘ম্যানেজমেন্ট’ তৈরি করেছে। তাতে গুরুত্বপূর্ণ পুজো মণ্ডপে নজরমিনার থেকে সিসিটিভি, বিভিন্ন মোড়ের ভিড়ের দায়িত্বে অন্তত একজন করে ইন্সপেক্টরকে ফোর্স-সহ রাখা হচ্ছে।

গত কয়েক দিনে কমিশনারেটে দফায় দফায় পুজোর বৈঠক হয়েছে। অফিসার-কর্মীদের ব্যবহার করা ছাড়াও রাজ্য সশস্ত্র বাহিনী থেকে কত ফোর্স চাওয়া হবে, সেই তালিকা থানাগুলিকে চূড়ান্ত করে জমা দিতে বলা হয়েছে।

কোন পথে ভিড়

• সুভাষপল্লি, রবীন্দ্রনগর: হাতিমোড়ের দিক থেকে রবীন্দ্রনগর, রথখোলা, অরবিন্দপল্লি এলাকায় প্রতি বছরের মতো এ বারেও কয়েকটি বিগ বাজেটের পুজো হচ্ছে। এতে পুজোর দিনগুলিতে হাকিমপাড়া, পূর্ব বিবেকানন্দপল্লি, সুভাষপল্লি, কলেজপাড়ার দিক থেকে দুপুরের পর মানুষের ঢল নামে। গভীর রাত অবধি ভিড় থাকে। সন্ধ্যার পর থেকে ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। অনেক সময়েই বিকল্প রুটে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থার করা হচ্ছে।

• হাকিমপাড়া, পাকুড়তলা, হায়দারপাড়া: শহরের বসতি এলাকার বুক চিরে চলে যাওয়া হরেন মুখোপাধ্যায় রোড, মহকুমা পরিষদ, পাকুড়তলা এবং হায়দারপাড়া মোড়ে পরপর বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় পুজো হয়। এলাকার রাস্তাগুলির সঙ্গে শহরের প্রধান রাস্তা হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোডের মাধ্যমে যোগাযোগ থাকায় ছোট গাড়ি, অটো বা টোটো যাতায়াত বজায় থাকে। মণ্ডপগুলির একেবারে সামনে যান নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বাকি অংশ পুজোর প্রতিদিনই জনসমুদ্রের আকার নেয়। তাই এ সব জায়গায় অতিরিক্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা রাখার ভাবনা।

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

• মহিলা কলেজ, ডাবগ্রাম: এলাকার পুজো মণ্ডপগুলিকে ঘিরে রয়েছে একাধিক রাস্তা ও অলিগলি। তাই খেয়ালখুশি মতো যাতায়াত বা গাড়ি-বাইক নিয়ে ঢুকে পড়াটা বাসিন্দাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এই এলাকাগুলিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করাটা পুজো কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বা পুলিশের পক্ষে একটু মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। সেখানে কয়েকটি রাস্তাকে সন্ধ্যার পর শুধু হেঁটে চলাচলের জন্য খোলা রাখার ভাবনা।

• বর্ধমান রোড, শক্তিগড়, নবগ্রাম, গেটবাজার: শিলিগুড়ির দক্ষিণপ্রান্তে এলাকায় পুজো বরবার নজরকাড়া। কোনও কোনও পুজো কমিটি বছরের পর বছর সেরার সম্মান পায়। তার উপরে এলাকার পাশ দিয়ে গিয়েছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির ৩১-ডি জাতীয় সড়ক। তাই বড় গাড়ি, ট্রাক চলাচলকে বন্ধ না করেও এলাকায় যানজট কমানোই পুলিশের চ্যালেঞ্জ। তাই ঘুরপথে নৌকঘাট হয়ে বড় গাড়ি চালানো, পুজো মণ্ডপ এলাকায় ছোট গাড়ি চলাচল বন্ধের মতো একাধিক পদক্ষেপ জরুরি।

• চম্পাসারি, প্রধাননগর: ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং তার সঙ্গে নিবেদিতা রোড, পটেল রোডের মতো এলাকায় অনেক সময়ই হাঁটাচলা করা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই সেখানে একমুখী যান চলাচল করাতে হয় পুলিশকে। তেমনই, রাস্তার কিছু কিছু এলাকা ব্যারিকেড করে খোলা ডিভাইডারের অংশ দিয়ে গাড়ি ঘোরানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

পুজো অ্যাপ

পুজোর সময় পথ নির্দেশিকা, মণ্ডপের হদিস, আপৎকালীন নম্বর, বিভিন্ন তথ্য ও পরিষেবা সম্বলিত অ্যাপ সম্মিলনী আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে গুগল প্লে-স্টোরে মিলবে। এতে প্যানিক অ্যাটাক এবং ইনসিডেন্ট নামক দু’টি আলাদা বিভাগও রয়েছে। কোথাও কোনও ঘটনা ঘটতে দেখলে বাসিন্দারা ‘ইনসিডেন্ট’ বিভাগে সেই ছবি পাঠাতে পারবেন। তেমনিই, কেউ কোনও বিপদে পড়লে ‘প্যানিক অ্যাটাক’ বোতামটি টিপলে টেলিফোন সোজা কন্ট্রোল রুমে পৌঁছবে।

পর্যটন হেল্প ডেক্স

গত ২০১১ সাল থেকে পুজোর মরসুমে এই অঞ্চলে আসা পর্যটকদের জন্য এই হেল্প ডেক্স চালু করছে পর্যটন দফতর। এ বার এনজেপি স্টেশন, বাগডোগরা বিমানবন্দর এবং তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে এই ডেক্স চালু হল। তেমনিই, মালবাজার ও আলিপুরদুয়ার স্টেশনও চালু করা হল হেল্প ডেক্স। কালীপুজো অবধি হেল্প ডেক্সগুলি চালু থাকবে।

পুজো গাইড ম্যাপ

পুলিশ, পর্যটন দফতরের সমস্ত হেল্প ডেক্স ও বুথ থেকে মিলবে এই ম্যাপ। ম্যাপে থাকছে কমিশনারেটের বিভিন্ন অফিসারের নম্বর, পর্যটন দফতরের নানা তথ্যকেন্দ্র, অতিথি নিবাসের তথ্য, চাইন্ড লাইনের নম্বর, যান নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা, পুজো মণ্ডপের হদিস থাকছে। থাকছে, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ সেফ ড্রাইভ-সেভ লাইফের প্রচার। প্রতিবারের মতো ষষ্ঠীর দিন থেকে যান নিয়ন্ত্রণ বলবৎ থাকবে ১৩ অক্টোবর অবধি।

durga puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy