E-Paper

উত্তর-সীমান্তের গ্রামে কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি সঙ্ঘের

কোচবিহার থেকে মালদহ, উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় এত দিন ‘সীমান্ত চেতনা মঞ্চ’ই কাজ করত। বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হতেই এখন সীমান্তে একাধিক সংগঠনকে কাজে নামিয়েছে সঙ্ঘ।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:১৭

— প্রতীকী চিত্র।

বাংলাদেশে অস্থিরতা বৃদ্ধির পর থেকে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকায় সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের। এক দিকে সঙ্ঘ একল বা এক-শিক্ষক স্কুল খুলছে। পাশাপাশি, মহিলাদের সেলাই যন্ত্র দেওয়া, স্থানীয়দের সহজ শর্তে কম সুদে ঋণের ব্যবস্থাও করে দিচ্ছে সঙ্ঘের ‘সীমান্ত চেতনা মঞ্চ’। সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার জনবিন্যাস যাতেবদলে না যায়, সে জন্য এই চেষ্টা সঙ্ঘের তরফে। বিজেপি নেতাদের একাংশেরও দাবি,বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিজনিত আতঙ্কে সীমান্তবর্তী এলাকায় জনবিন্যাস বদলে গেলে দেশের নিরাপত্তাতেও সমস্যা হতে পারে।

কোচবিহার থেকে মালদহ, উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় এত দিন ‘সীমান্ত চেতনা মঞ্চ’ই কাজ করত। বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হতেই এখন সীমান্তে একাধিক সংগঠনকে কাজে নামিয়েছে সঙ্ঘ। ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’, ‘বিদ্যা ভারতী’ এবং ‘সহকার ভারতী’র মতো সঙ্ঘের শাখা সংগঠনগুলি সীমান্তে কাজ করছে। তাদের কাজ সমন্বয় রাখছে ‘সীমান্ত চেতনা মঞ্চ’।

জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের জনজাতি এলাকায় সঙ্ঘের ‘একল স্কুল’ চলে। এ বারে ‘বিদ্যা ভারতী’-কে সক্রিয় করে জলপাইগুড়ির বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় ‘একল স্কুল’ খুলেছে সঙ্ঘ। সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গের অন্য জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলেও তেমন স্কুল খোলার পরিকল্পনা রয়েছে সঙ্ঘের।

‘সহকার ভারতী’ নামে সঙ্ঘের আর একটি সংগঠন পিছিয়ে পড়া এবং অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বলদের ঋণ দেয়। সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদেরও ঋণ দেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের গোষ্ঠী গড়ে সেলাই যন্ত্র দেওয়ার ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়িতেই অন্তত শ’দুয়েক সেলাই যন্ত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে খবর।

সেই সঙ্গে প্রতিদিন সন্ধ্যেয় সীমান্তবর্তী গ্রামে ‘আড্ডার আসর’ বসাচ্ছে সীমান্ত চেতনা মঞ্চ। সে আসরে দেশের উন্নতি-সহ সঙ্ঘের বিভিন্ন বিচারধারা নিয়ে চর্চা চলছে। সঙ্ঘের এই তৎপরতা নজরে পড়েছে বিরোধীদের। সীমান্তবর্তী নগর-বেরুবাড়ির কংগ্রেসের অঞ্চল কমিটির সভাপতি নতিবর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে অশান্তির পরে এ দিকে সীমান্তবর্তী গ্রামে নানা সামাজিক সংগঠনের কাজকর্ম বেড়েছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “বিজেপি নানা বেশে সব সময়ে ভোটের জন্য নানা বিভাজনের রাজনীতি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে কী হচ্ছে, দেখতে হবে।”

হঠাৎ এমন উদ্যোগের প্রয়োজন কেন? ‘সীমান্ত চেতনা মঞ্চ, নর্থ বেঙ্গল’-এর প্রান্ত সভাপতি প্রদীপ চন্দ বলেন, “সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের এক জোট রাখতে এবং ভারত-বিরোধী শক্তি যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে, তার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিএসএফের সঙ্গেবাসিন্দাদের সম্পর্ক যাতে ভাল থাকে, সে চেষ্টাও করছি।”

খগেনের দাবি

বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মালদহে বিমানবন্দর খোলার জন্য বিমানমন্ত্রী রামমোহন নায়ডুর কাছে আবেদন জানালেন মালদহ (উত্তর)-এর বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। ১৯৬২ সালেমালদহে বিমানবন্দর গড়া হয়েছিল। কিন্তু সেটির রানওয়ের দৈর্ঘ্য কম থাকায় কাজে আসেনি। খগেন শুক্রবার বলেন, ‘‘মালদহের মানুষের দ্রুত যাতায়াতের জন্য বিমান পরিষেবা প্রয়োজন। তা ছাড়া মালদহ সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায়, প্রতিরক্ষার দিক থেকেও এখানে বিমানবন্দরথাকা প্রয়োজন।’’ চিঠি পাওয়ারপরেই বিমানমন্ত্রী ওই বিজেপি সাংসদকে আশ্বাস দিয়েছেন, ওই এলাকা পরিদর্শন দ্রুত কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

RSS North Bengal Border Areas

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy