Advertisement
E-Paper

স্কুলে ভুরি ভুরি অব্যবস্থা, বিক্ষোভে পড়ুয়া-অভিভাবকরা

দিনের পর দিন মিড ডে মিল খাওয়ানো হয় না। স্কুলে ভর্তি হতে গেলে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। কন্যাশ্রী ফর্ম পূরণ করার জন্য টাকা দাবি করা হয়। অভিযোগ, স্কুল চলে খেয়াল খুশিমতো। স্কুলের এই অব্যবস্থার কারণে স্কুলে আসতে অনীহা প্রকাশ করে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৩:০৯
সরব: স্কুলে নিয়মিত ক্লাস করা সহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ স্কুল ছাত্রীদের। বুধবার চোপড়ার বাচ্চামুন্সি স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

সরব: স্কুলে নিয়মিত ক্লাস করা সহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ স্কুল ছাত্রীদের। বুধবার চোপড়ার বাচ্চামুন্সি স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

বেলা ১২টা। ছাত্রীরা ক্লাসে বসে। অথচ শিক্ষিকা এসে পৌঁছননি। এই ছবিটা যেন এখন স্কুলের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়েদের স্কুল, অথচ শৌচাগার ব্যবহারযোগ্য নয়। অথচ শিক্ষিকাদের ব্যবহার করা শৌচাগার ঝাঁ চকচকে। অফিস ঘরে পাখা রয়েছে। তবে ক্লাস রুমে নেই।

এই ছবি লালবাজার বাচ্চামুন্সি স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের। স্কুলের এহেন শোচনীয় অবস্থার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখাল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার এই স্কুলের ছাত্রীরা। বিক্ষোভে যোগ দেন অভিভাবকেরাও। এর জেরে ওইদিন ক্লাস হয়নি। ছাত্রীদের বক্তব্য, ক্লাস রুমে ছাদের পলেস্তারা খসে গায়ের উপর পড়ছে। স্কুলে নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। সমস্যাগুলো নিয়ে একাধিকবার জানানো হলেও কোনও প্রতিকার পায়নি তারা। পরে ব্লক প্রশাসন এবং স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। পড়ুয়ারা মোট ২৮টি দাবি লিখিত ভাবে জমা দেয়। পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকা-সহ অন্য শিক্ষিকারা নিয়মিত আসেন না। উচ্চ মাধ্যমিকের এখনও পর্যন্ত ক্লাসই শুরু হয়নি।

অভিযোগের এখানেই শেষ নয়। জানা গেল, দিনের পর দিন মিড ডে মিল খাওয়ানো হয় না। স্কুলে ভর্তি হতে গেলে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। কন্যাশ্রী ফর্ম পূরণ করার জন্য টাকা দাবি করা হয়। অভিযোগ, স্কুল চলে খেয়াল খুশিমতো। স্কুলের এই অব্যবস্থার কারণে স্কুলে আসতে অনীহা প্রকাশ করে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ। এমনই অভিযোগ করলেন ওই স্কুলের অভিভাবক হাকিমুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘‘তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। কিন্ত মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার কথা বললে সে বলে, ‘স্কুলে গিয়ে কী করব? ক্লাস তো হয় না।’ স্কুলে কোনও কিছুই ঠিক চলছে না। এই সমস্যার কথা জানাতে স্কুলে যেদিনই গিয়েছি সেদিনই প্রধান শিক্ষিকাকে পাইনি।’’ স্কুলের এই অনিয়ম এবং বেহাল দশা নিয়ে বিক্ষোভের খবর পেয়ে চোপড়ায় যান ভারপ্রাপ্ত বিডিও থেন্ডুপ শেরপা। তিনি স্কুল পড়ুয়াদের আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানানো হবে।’’ এর পর বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়।

এ দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। অবশ্য স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হেমা বিশ্বাস স্কুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি অসুস্থতার কারণে ছুটিতে রয়েছি। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক ন’জন। পড়ুয়ার সংখ্যা ৯০০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক পড়ানোর জন্য এখনও শিক্ষক পাইনি। ফলে তিনজন পার্ট টাইম শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক চালানো নিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হয়।’’

স্কুল সুত্রের খবর, ন’জন শিক্ষিকার মধ্যে তিনজন দীর্ঘদিন ধরে ছটিতে। কী কারণে তিনজন শিক্ষিকা ছুটিতে রয়েছেন তা জানাতে পারেননি প্রধান শিক্ষিকা। তিনি বলেন, ‘‘কী কারণে ছুটিতে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই স্কুলকে এর আগে সতর্ক করা হয়েছিল। তিনি জানান, খুব শীঘ্রই তিনি স্কুলে পরিদর্শনে যাবেন। স্কুলের সমস্যাগুলো নিয়ে বৈঠক করবেন।

Protest Student School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy