E-Paper

পার্শ্ব-শিক্ষকেরা গরহাজির, চিন্তা আরও বাড়ল স্কুলে

আগামী সপ্তাহ থেকে ক্লাস ঠিকঠাক হবে তো সেই আশঙ্কাতেই ভুগতে শুরু করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষেরা।

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৩৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

“আজকে স্কুলে যাচ্ছি না”— এটুকুই পোস্ট স্কুলের সমাজ মাধ্যম গ্রুপে। অভিযোগ, তার পরে তিন দিন অনুপস্থিত স্কুলের চার জন পার্শ্ব-শিক্ষক। স্কুল সূত্রে খবর, এক দিন পরীক্ষায় কেটে গিয়েছে। বাকি দু’দিন স্কুলের অন্তত চারটি করে বিষয়ের ক্লাস হয়নি। কারণ এসএসসির বাতিল হওয়া নিয়োগের প্যানেলে স্কুলের পাঁচ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম রয়েছে। তাঁরাও স্কুলে আসছেন না। এরই মধ্যে পার্শ্ব-শিক্ষকেরাও অনুপস্থিত। জলপাইগুড়ির ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “এক সঙ্গে ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অনুপস্থিত। কী ভাবে স্কুল চালাব?”

সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের প্যানেল বাতিল করেছে। প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিলে জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির বহু স্কুল সমস্যায় পড়েছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পার্শ্ব-শিক্ষকদের ক্লাস বয়কট। তিন দিন ধরে বয়কটের পরে আগামী সপ্তাহ থেকেও তাঁরা স্কুলে যাবেন কিনা তার কোনও ঠিক নেই। আগামী সপ্তাহ থেকে ক্লাস ঠিকঠাক হবে তো সেই আশঙ্কাতেই ভুগতে শুরু করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষেরা।

নিয়ম অনুযায়ী, পার্শ্ব-শিক্ষকদের শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার কথা। যদিও বহু স্কুলে উঁচু ক্লাসেও পার্শ্ব-শিক্ষকদের পড়াতে পাঠানো হয়। কারণ শিক্ষকের অভাব। বহু স্কুলে পার্শ্ব-শিক্ষকেরাও শ্রেণি-শিক্ষক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ ভেবেছিলেন, বাতিল শিক্ষকদের বিকল্প হিসেবে পার্শ্ব-শিক্ষকদের ক্লাসে পাঠানো হবে। কিন্তু তাতে বেঁকে বসেছে পার্শ্ব-শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন। শুরু হয়েছে স্কুল বয়কট।

পার্শ্ব-শিক্ষকদের দাবি, তাঁদের উপরে অতিরিক্ত কাজের দায়িত্ব চাপানো চলবে না এবং ন্যায্য বেতন দিতে হবে। হাইস্কুলের এক জন পার্শ্ব-শিক্ষকের সর্বোচ্চ বেতন ১৫ হাজার টাকার কাছাকাছি। শিলিগুড়ির ‘বঞ্চিত পার্শ্ব-শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের’ সদস্য অরুণ পাল, ‘‘এই সামান্য বেতন দিয়ে সংসার তো দূরের কথা, এক জনেরও এই বাজারে চলে না। আমরা চাইছি পড়ুয়াদের পড়াতে। বাড়তি ক্লাস নিতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের উচিত আমাদের কথা শোনা। বেতন বৃদ্ধির কথা থাকলেও হয়নি। আমরা আবার আন্দোলনের পথে নামব।’’ শিলিগুড়ির অনেক স্কুলেই পার্শ্ব-শিক্ষকেরা আন্দোলনের পরে স্কুলে ফিরেছেন। অভিযোগ, শিক্ষকের অভাবে ক্লাস ফাঁকা থাকলে অনেক স্কুলে তাঁদের ক্লাস নিতে হচ্ছে। আর একটি অংশের দাবি, স্কুলে শিক্ষকের অভাবে তাঁরা পড়ুয়াদের কথা ভাবছেন। পড়ুয়াদের যাতে ক্লাস বন্ধ না হয়, সে জন্য নিজেদের থেকেই ক্লাস নিচ্ছেন বলে তাঁদের দাবি। ক্লাস বন্ধ করলে স্কুলে আরও সমস্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

তৃণমূলের পার্শ্ব-শিক্ষক সংগঠনের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভাপতি বজিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘অন্যান্য শিক্ষকের মতোই আমাদের সমান ভাবে ক্লাস করাতে হচ্ছে। বেতন বৃদ্ধি জরুরি। আমাদের অসহায় অবস্থা। তবে ক্লাস বন্ধ রাখার পক্ষপাতী। দাবিপূরণ না হলে পার্শ্ব-শিক্ষকেরা ফের ক্লাস বন্ধের পথে গেলে, কী করে স্কুল চলবে সেই চিন্তায় রয়েছেন প্রধান শিক্ষক, শিক্ষিকারা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy