Advertisement
E-Paper

ফেলে দেওয়া জিনিসে জন্মেছে গাছপালা

ফেলে দেওয়া সামগ্রী ব্যবহার করে তাতে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে চলেছে দুর্গাপুরের বিজড়া হাইস্কুল। প্লাস্টিকের প্যাকেট, বোতল, গাড়ির টায়ারে গাছ লাগিয়ে স্কুল চত্বর সবুজ রেখে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা নজির গড়েছে এলাকায়।

অর্পিতা মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ১৭:৩৮
মগ্ন: ফেলে দেওয়া জিনিসে গজিয়ে তোলা হচ্ছে গাছ। ছবি: বিকাশ মশান

মগ্ন: ফেলে দেওয়া জিনিসে গজিয়ে তোলা হচ্ছে গাছ। ছবি: বিকাশ মশান

ফেলে দেওয়া সামগ্রী ব্যবহার করে তাতে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে চলেছে দুর্গাপুরের বিজড়া হাইস্কুল। প্লাস্টিকের প্যাকেট, বোতল, গাড়ির টায়ারে গাছ লাগিয়ে স্কুল চত্বর সবুজ রেখে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা নজির গড়েছে এলাকায়।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্যোগটা মূলত শুরু করেছিল দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা। শিক্ষিকা কাকলি ধারা প্রথমে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ধারণাটা ছড়িয়ে দেন। শহর হোক বা গ্রাম। বর্জ্য সামগ্রী এখন মাথা ব্যথার কারণ। তাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে কী ভাবে সেগুলিকে ফের ব্যবহার করা যায়, সেদিকেই নজর দেওয়া দরকার— পড়ুয়াদের মধ্যে এই ধারণা গড়ে তোলেন কাকলিদেবী। তাঁর কথা শুনে উৎসাহী হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। এর পরেই তারা কাজে নেমে পড়ে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজি নিজামউদ্দিন বলেন, ‘‘দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা, বিশেষ করে ছাত্রীরা বর্জ্য সামগ্রী ব্যবহারে যত দিন যাচ্ছে পারদর্শী হচ্ছে। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের জলের বোতল, সাইকেল, গাড়ির টায়ারে গাছ লাগানো থেকে শুরু করে আইসক্রিমের কাঠি প্রভৃতি ব্যবহার করে ‘শো-পিস’ তৈরির মতো কাজ করছে তারা।’’

দশম শ্রেণির ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এর ফলে একদিকে যেমন ফেলে দেওয়া সামগ্রী পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা হচ্ছে, তেমনি পরিবেশের উপকার হচ্ছে। তাদের কথায়, ‘‘আমরা শিল্পাঞ্চলে থাকি। এখানে এমনিতেই অন্যান্য জায়গার তুলনায় দূষণ বেশি। তাই আমাদের গাছ লাগানোয় জোর দেওয়া দরকার।’’ তারা জানায়, বোতল, টায়ারের ভিতরে মাটি-সার দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বেঁচে থাকে এবং ছায়ায় থাকে তেমন গাছ লাগানো হয়। পাথরকুচি, তরুলতা প্রভৃতি গাছ ইতিমধ্যেই বেড়ে উঠেছে। টায়ারের ভিতরে মাটি দিয়ে লাগানো হয়েছে ক্যাকটাস। নীচে প্লাস্টিকের প্যাকেট রাখা হয়েছে। তার উপরে মাটি দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে টায়ারগুলি। এর ফলে দেখতেও ভালো লাগছে। স্কুলের এক জায়গায় দেওয়ালে বোতল, প্যাকেটে গাছ ঝুলিয়ে শখের বাগানও বানিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা।

প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, অল্পস্বল্প প্রশিক্ষণ শুরুতে দেওয়া হয়েছে। বাকিটা নিজেদের উদ্যোগে পড়ুয়ারা করছে। পরামর্শ দেন শিক্ষিকা কাকলিদেবী। স্কুল থেকে তরুলতা গাছ নিয়ে গিয়ে বাড়িতে লাগিয়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘প্রথমে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য কীভাবে আলাদা করা যায়, তা শেখানো হয় পড়ুয়াদের। প্লাস্টিক এখন সকলের কাছে বোঝা। পরিবেশের স্বার্থে সেই প্লাস্টিক কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে সকলের উদ্যোগী হওয়া উচিত।’’

দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা সম্প্রতি অন্যান্য ক্লাসে গিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। পড়ুয়াদের তারা নিজেদের কাজ এবং পরিবেশের বিপদ সম্পর্কে অবহিত করেছে। বছর খানেক আগে স্কুলে যে কাজ শুধু দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা শুরু করেছিল, এখন তা ছড়িয়ে পড়ছে অন্যান্য শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যেও। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, স্কুল চত্বর সবুজে ভরে উঠছে। দেখতে ভাল লাগছে। পরিবেশেরও ভাল হচ্ছে।’’

Tree Plantation Wastage Things School Durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy