প্রতীকী ছবি।
বছর দুয়েক ধরে মদ বিক্রি বাবদ রাজস্বের মাপকাঠিতে রাজ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে জলপাইগুড়ি জেলা। কিম্তু চলতি বছরের মে মাসে সেই জেলাতেই বিপুল ঘাটতি হয়েছে ওই রাজস্বে। ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১৩ কোটি টাকা। শতাংশের হিসেবে গত বছরের চেয়ে ৩৭ শতাংশ কম। দেশি মদ থেকে দেশে তৈরি বিদেশি মদ বা বিয়ার সবেরই বিক্রি কমেছে। বিক্রেতাদের একাংশের দাবি, দীর্ঘসময়ের লকডাউনের ফলে একে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা কমেছে। তার উপর সবরকম মদের উপর ত্রিশ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসেছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমেছে বলে দাবি।
বেশি কোপ পড়েছে দেশি মদে। গ্রাম এলাকা তো বটেই, শহরেও একটি বিশেষ ব্র্যান্ডের দেশি মদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। আবগারি দফতরের হিসেব বলছে গত বছরের মে মাসে জলপাইগুড়ি জেলায় ওই ব্র্যান্ডের মদ প্রায় ৫ লক্ষ লিটার বিক্রি হয়েছিল। এ বছরের মে মাসে সেটা বিক্রি হয়েছে মাত্র ২ লক্ষ ৩৮ হাজার লিটার। মার্চের শেষ থেকে গোটা এপ্রিল মদের দোকান বন্ধ ছিল। ৪ মে থেকে মদের দোকান খোলে। প্রথম দিনেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দোকানের সামনে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ে। কয়েকদিন সকাল থেকে লাইন পড়েছিল। বৃষ্টিও ক্রেতাদের লাইন থেকে হঠাতে পারেনি। কোথাও ভিড় সামলাতে পুলিশকে লাঠিও চালাতে হয়েছে। সে ছবি বদলে যায় ক’দিন পরেই।
ডুয়ার্সের চা বলয়ে একটি বিশেষ ব্র্যান্ডের সস্তার দেশি মদ পাওয়া যায়। আগে সেটির গোটা বোতলের দাম ছিল ৪০ টাকা। এখন হয়েছে ৬০ টাকা। সরকারি হিসেবে গত বছরের মে মাসে ওই মদ বিক্রি হয়েছিল ২ লক্ষ ২৪ হাজার লিটার। অথচ এ বছর বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪৮ হাজার লিটার। এক বিক্রেতা বলেন, “অর্থনীতিবিদরা লকডাউনে সাধারণ মানুষের হাতে নগদের জোগান বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। নগদের জোগান বাড়েনি, মদের বিক্রি কমেছে।”
শহরে হুইস্কি, জিন, ভদকার বিক্রিও ধাক্কা খেয়েছে। গত বছরের মে মাসে জলপাইগুড়ি জেলায় দেশে তৈরি বিদেশি মদ বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪ লক্ষ লিটার। এ বারে কমে হয়েছে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার লিটার। চাহিদা কমেছে বিয়ারেরও। গত বছর ৩ লক্ষ লিটার বিয়ার বিক্রি হয়েছিল, এ বার লকডাউন বিপর্যস্ত মে মাসে বিয়ার বিক্রি হয়েছে মাত্র ৫৫ হাজার লিটার। গত বছরের মে মাসে জলপাইগুড়ি জেলায় ৩৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল মদ বিক্রিতে, এ বার হয়েছে মাত্র ২২ কোটি টাকা।
এক আবগারি কর্তার কথায়, “দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয় রয়েছে। যেমন পানশালা বন্ধ থাকা। সকলের পক্ষে বাড়িতে মদ্যপান সম্ভব নয়, তাই হয়ত অভ্যেস ছেড়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy