Advertisement
০২ মে ২০২৪
North Bengal University

আন্দোলনের জেরে স্তব্ধ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিভাগ

নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিক বরুণ রায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে পরিস্থিতি বিশদে জানান। আন্দোলনকারীদের দাবি, এর পরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মেল পাঠিয়ে বিভিন্ন বিভাগ চালু করতে অনুরোধ করেন।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড বন্ধ করে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড বন্ধ করে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ছবিঃ স্বরূপ সরকার।

সৌমিত্র কুন্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৮:১৯
Share: Save:

বেতন বৃদ্ধির দাবিতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড’ বিভাগ বন্ধ করে দিয়ে বুধবার সকাল থেকেই আন্দোলনে নামল ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’। তার জেরে, এ দিন অধিকাংশ বিভাগের পড়াশোনা বন্ধ রাখতে হয়। অধিকাংশ প্রশাসনিক বিভাগও খোলা যায়নি। তবে পরীক্ষা থাকায় কম্পিউটার সায়েন্স, গবেষণার জরুরি কাজের জন্য উদ্ভিদবিদ্যা এবং জীববিদ্যা বিভাগ এবং বেতন প্রক্রিয়ার জন্য ফিনান্স বিভাগ খোলা রাখার ছাড় দেওয়া হয়েছিল। রিসার্চ স্কলারদের একটা সম্মেলন ছিল, সেটিকেও ছাড় দেওয়া হয়। উপাচার্য সিএম রবীন্দ্রন এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিতকে ক্যাম্পাসে আসতে হবে বলেও দাবি তোলা হয়। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবিও তোলেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার সমস্ত শিক্ষক, আধিকারিক, বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারই বৈঠক ডেকে সব বিভাগীয় প্রধান ও সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন।

নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিক বরুণ রায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে পরিস্থিতি বিশদে জানান। আন্দোলনকারীদের দাবি, এর পরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মেল পাঠিয়ে বিভিন্ন বিভাগ চালু করতে অনুরোধ করেন। তাঁরা সকালে ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড’ বিভাগ বন্ধ করলেও কোনও বিভাগ থেকে তা খোলার অনুরোধ পাননি। তা পেলে অন্য বিভাগকে যেমন খুলতে দিয়েছেন, তাদেরও খুলতে দিতেন। পড়ুয়াদের ক্ষতি তাঁরাও চান না।

এ দিন সকাল থেকে আন্দোলনের জেরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ে বিকেল ৩টে নাগাদ ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড’ বিভাগের সামনে বৈঠক হয়। কিন্তু বৈঠকে সমস্যা মেটেনি। ক্যাম্পাস ইনচার্জ প্রণব ঘোষ বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে। তাঁদের বলা হয়েছে, আন্দোলনের জেরে পড়াশোনা এ ভাবে বন্ধ হলে, মুশকিল। অচলাবস্থা হলে সকলেই বিপাকে পড়বেন। তাঁদের সঙ্গে ফের সকলকে নিয়ে আলোচনায় বসার কথা বলা হয়েছে। সে মতো বৃহস্পতিবার বৈঠক হবে।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতি’র শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিত রায় দাবি করেন, অবিলম্বে উপাচার্য এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে ক্যাম্পাসে আসতে হবে। অন্যথায়, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ, ঠিক হয়েছিল উপাচার্য যথাযথ পদক্ষেপ না করলে অস্থায়ী কর্মীদের এবং অস্থায়ী শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত ১৯ ফেব্রুয়ারি হয়েছিল তা কার্যকর করতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নির্দেশ দেবেন। ১ মার্চ বৈঠক করে সমস্ত বিভাগীয় প্রধান এবং প্রশাসনিক প্রধানেরা তাঁকে ক্ষমতা দিয়েছিলেন। গত সোমবার তা কার্যকর করার কথা ছিল। তিনি তা করেননি। যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, ‘‘ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের যদি তা করার ক্ষমতা না থাকে, তা হলে এতগুলোকে মানুষকে অপদস্থ করায় ওই পদে বসে থাকার যোগ্যতা নেই। তিনি পদত্যাগ করুন।’’ এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার।

এ দিন শিক্ষক সমিতির তরফে আচার্য তথা রাজ্যপাল, উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসককে পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে। শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মন্ডল বলেন, "পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অনুরোধ করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের জানানো হয়েছে, তাঁদের দাবির প্রতি সমর্থন থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে আন্দোলন হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার চেষ্টা হলে, শিক্ষক সমিতি সমর্থন করবে না। পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE