ব্যবসায়ী এলাকায় থাকা একটি কুয়ো থেকে দোকানের কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়াকে ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে।
শনিবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেবক রোডে পাম্পের সরঞ্জাম বিক্রির একটি দোকানের পিছনের অংশে থাকা কুয়ো থেকে দেহটি উদ্ধার করা হয়। ওই দোকানের কর্মী ছিলেন ওই ব্যক্তি। মৃত মনোজকুমার তেওয়ারির (৪০) বাড়ি ডালখোলায়। শিলিগুড়িতে কাজ করার জন্য তিনি ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে মহামায়া কলোনিতে ভাড়া থাকতেন। ওই দোকানে তিনি আট বছর কাজ করছেন।
অন্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ দোকান আটকে চাবি কাছেই মালিকের বাড়িতে দিতে গিয়েছিলেন বলে কর্মীদের একাংশের দাবি। দোকানের চাবি আটকানোর সময় কয়েকজন কর্মী সেখানে ছিলেন। মনোজবাবু চাবি মালিকের বাড়ি দিতে গেলে তাঁরা সকলে চলে যান বলে জানিয়েছেন। শুক্রবার মনোজবাবু দোকানের কাজে যাননি বলে মালিকের দাবি। দোকানের মালিক তারাচাঁদ অগ্রবালের কথায়, ‘‘স্ট্যান্ডে দাঁড়ানো কিছু গাড়ির চালক জল খেতে কুয়োতে গেলে তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।’’ প্রাথমিক পুলিশের অনুমান ওই ব্যক্তি কুয়োতে পড়ে গিয়েছিলেন। উঠতে পারেননি।
পুলিশ এবং দোকান মালিকের বক্তব্য ঘিরেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। কেন না কুয়োর মাঝ বরাবর উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুটি পাইপ লাগানো রয়েছে। উপরের অংশে কুয়োর ব্যাস বরাবর আরও একটি পাইপ রয়েছে। সে কারণে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া দোকানটি যে ভবন চত্বরে রয়েছে তার গেট দিয়ে ঢুকে মাঝামাঝি জায়গায় কুয়ো। পিছনের দিকে আরও দোকান। কেউ চিৎকার করলে লোকেরা বুঝতে পারবেন। তাই কী করে ওই ব্যক্তির দেহ কুয়োর মধ্যে এল তা বুঝতে পারছেন না অনেকেই। পুলিশ কমিশনার চেলিং সেমিক লেপচা বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে স্পষ্ট হবে।’’
মৃতের দাদা নরেন্দ্র তেওয়ারিও শিলিগুড়িতে মহামায়া কলোনি এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন। কযেকটি বাড়ির পরেই ভাড়া থাকেন মনোজবাবু, তাঁর স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের ছেলে। নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে মনোজের সঙ্গে দেখা হয়েছে ৯ টা নাগাদ। ওর স্ত্রী এবং ছেলে বুধবার ডালখোলা গিয়েছিল। মনোজ একাই ছিল। সকালে সে কাজে যাবে বলে বার হয়।’’ মনোজবাবুর বাড়ি থেকে দোকানে পৌঁছতে তাঁর অন্তত ১৫-২০ মিনিট লাগার কথা। সাড়ে ন’টা নাগাদ তিনি দোকানে গেলে সকলেরই দেখার কথা। অথচ দোকানের মালিক এবং কর্মীরা তাঁকে দেখলেন না কেন তা পরিষ্কার নয়।
দোকান মালিকের দাবি কুয়োর জল কর্মচারীরা খান। কিন্তু কুয়োর জল খাবার উপযোগী নয় বলে অনেকের মত। কুয়োর কাছে জল তোলার কোনও বালতি ছিল না। জল খেলে শুক্রবার কী কেউ কুয়োর দিকে যাননি? এ সব প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘কী করে ঘটল বুঝতে পারছি না। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ এলাকার কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল জানান, কী করে ঘটল তা পুলিশ তদন্ত করলেই স্পষ্ট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy