Advertisement
E-Paper

বিরোধীদের অভিযোগে তৎপরতা হয়নি প্রশাসন, নালিশ শিলিগুড়িতে

শাসক দলের নালিশ পেলে যতটা তৎপরতা দেখিয়েছে, বিরোধীদের অভিযোগকে শিলিগুড়িতে প্রশাসন ততটা গুরুত্ব দেয়নি বলে দাবি করলেন তৃণমূল-বিরোধী শিবির। তাঁরা জানাচ্ছেন, সকাল ৭ টায় ভোট শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ৪৬ নম্বরে শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরে এবং ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে কবি সুকান্ত হাইস্কুল এবং ভারতী হিন্দি হাইস্কুলে বহিরাগতরা সমস্যা করছে বলে সিপিএমের তরফে ফোন করে জানানো হয়। মহকুমাশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বিশেষ কিছু করা হয়নি বলে অভিযোগ।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৬

শাসক দলের নালিশ পেলে যতটা তৎপরতা দেখিয়েছে, বিরোধীদের অভিযোগকে শিলিগুড়িতে প্রশাসন ততটা গুরুত্ব দেয়নি বলে দাবি করলেন তৃণমূল-বিরোধী শিবির।

তাঁরা জানাচ্ছেন, সকাল ৭ টায় ভোট শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ৪৬ নম্বরে শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরে এবং ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে কবি সুকান্ত হাইস্কুল এবং ভারতী হিন্দি হাইস্কুলে বহিরাগতরা সমস্যা করছে বলে সিপিএমের তরফে ফোন করে জানানো হয়। মহকুমাশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বিশেষ কিছু করা হয়নি বলে অভিযোগ।

কিন্তু বেলা ১১টায় তৃণমূলের তরফে ফোন করে ১২, ১৬, ১৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বুথগুলিতে বাইরের লোক ঢুকে সমস্যা তৈরি করতে চাইছে বলে অভিযোগ করা হলে সেক্টর অফিসে ফোন করে মহকুমাশাসক দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। এক্ষেত্রে মহকুমাশাসককে ফোন করেছিলেন মন্ত্রী গৌতম দেব নিজেই।

বেলা সাড়ে ১১টায় জেলাশাসক পুনীত যাদবকে ফোন করে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পাটেশ্বরী প্রাথমিক স্কুলের ২ এবং ৪ নম্বর বুথে ইভিএমের সমস্যার কথাও জানান গৌতমবাবু। অল্প সময়ের মধ্যেই ২ নম্বর বুথের ইভিএম বদলে দেওয়া হয়। ৪ নম্বরের ইভিএম ঠিক করে দেওয়া হয়।

বেলা ১২ টায় নৌকাঘাট এবং জলপাই মোড়ের মাঝামাঝি জায়গায় একটি লজে ফুলবাড়ি থেকে তৃণমূলের মদতপুষ্ট কিছু যুবক বাইক নিয়ে ঘাঁটি গেড়েছে বলে অভিযোগ জানানো হয় কংগ্রেসের তরফে। তার আগে সিপিএমের তরফেও অভিযোগ জানানো হয়। রিটার্নিং অফিসারকে বারবার বলা হলেও তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দেরি করছিলেন বলে অভিযোগ কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের। বিষয়টি পর্যবেক্ষককে জানানো হয়।

এ ভাবে শাসক দলের বিভিন্ন অভিযোগ পেলে চটজলদি ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসন যতটা তৎপর ছিল, বিরোধী দলগুলির ক্ষেত্রে ততটা তৎপরতা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। রিটার্নিং অফিসার দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘শাসক-বিরোধী সকলেরই অভিযোগ আসছিল। সমস্ত ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট সেক্টর অফিসে ফোন করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ প্রশাসনকে শাসক দল কাজে লাগাচ্ছে বলে আগে থেকেই অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে শিলিগুড়ি তাঁর চাই বলে মুখ্যমন্ত্রী যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা নিয়ে সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলিও। সে ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন কতটা নিরপেক্ষ থাকে, তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ে ছিলেন। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা বামেদের মেয়র পদপ্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য এ দিনও জানিয়েছেন, কিছু হলে নিজেদেরই মিলিত ভাবে সামাল দিতে হবে বলে তাঁরা আগে থেকেই ঠিক করে নিয়েছিলেন।

মন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য এ সব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভোট শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে। প্রশাসনের একাংশ অবশ্য তাদের উপর চাপের কথা স্বীকার করেছেন। এ দিন ভোটের পর কার্যত তাদের অনেকেই হাঁফ ছেড়েছেন বলে জানান।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার জানান, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা প্রাথমিক স্কুলের বুথে বহিরাগতদের নিয়ে তৃণমূলের লোকজন গোড়া থেকেই গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছিল। বিরোধীরা সংযতই ছিল। অভিযোগ, বুথ জ্যাম, মহিলাদের উত্ত্যক্ত করা সহ নানা অভিযোগ ছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মহকুমাশাসককে বারবার বলাও হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিচ্ছিলেন তবে কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত এলাকার মহিলারা প্রতিবাদ জানান। বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি’র লোকেরাও তখন এগিয়ে গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জীবেশবাবু বলেন, ‘‘প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলেও এ ক্ষেত্রে সকলে মিলিত ভাবে শাসক দলের লোকজনদের ওই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো গিয়েছে।’’

বিজেপি’র জেলা সভাপতিরও দাবি, তিনি মহকুমাশাসক এবং দফতরের অফিসারদের বিভিন্ন অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। কিন্তু চটজলদি ব্যবস্থা নিতে তৎপরতার অভাব দেখা গিয়েছে। রথীনবাবুর অভিযোগ, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের চার জন নেতাকর্মীকে পিটিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। দলের যুব সভাপতি রাজ ভট্টাচার্য, বাপি পালরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। ২, ২১, ৪১ নম্বরের মতো ওয়ার্ডে বুথ জ্যামের অভিযোগও তারা করেন বলে জানান। সিপিএমের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ভোট শুরুর আগে সকালে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ এবং ভোটের আগে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরির চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছিল। বারবার বলার পর শেষ পর্যন্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।

siliguri administration siliguri opponent siliguri corporation poll 2015 siliguri election day
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy