যানজট সমস্যা কাটিয়ে শিলিগুড়ি শহরকে ‘গতিশীল’ করতে, হিলকার্ট রোড এবং সেবক রোড থেকে গাড়ির চাপ কমাতে মহানন্দার তীর ধরে বিকল্প রাস্তা গড়তে চায় শিলিগুড়ি পুরসভা। ইতিমধ্যেই ‘রেল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক সার্ভিস’কে (রাইটস) দিয়ে প্রকল্পের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পরে সেই রিপোর্ট পুরবোর্ডের গত সভায় পেশ করা হয়। বোর্ডের অনুমতি নিয়ে তা রাজ্য সরকার তথা পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হচ্ছে। ওই প্রকল্প করতে ১৬১ কোটি টাকার মতো খরচ ধরা হয়েছে। যা পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতর থেকে আর্থিক সহায়তা করলে তবেই তৈরি করা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, যা পরিস্থিতি তাতে পুরবোর্ডের পক্ষে এ কাজ করার সম্ভাবনা কম।
রাইটস-এর তরফে ওই সমীক্ষায় মহানন্দার দুই তীর দিয়ে রাস্তা এবং হিলকার্ট রোড ও সেবক রোড সংযোগ করতে একটি সেতু তৈরির সমীক্ষা রিপোর্ট করা হয়। তবে পুরসভা কর্তৃপক্ষ বর্তমানে মহানন্দার বাঁ ধার দিয়ে রাস্তা করতে চান। ওই রাস্তার সঙ্গে নদীর অন্য তীরের সংযোগ করতে অনেকটা মাঝামাঝি অংশে একটি সেতুও তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ওই সেতু দিয়ে ছোট গাড়ি, মোটরবাইকের মতো হালকা যান চলাচল করতে পারে। মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে পরিকল্পনা পাঠানো হচ্ছে। রাইটস-কে দিয়ে ওই রাস্তার সম্ভাবনা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রাজ্য অনুমোদন করলে ওই কাজ আমরা করব।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি শহরে গাড়ির সংখ্যাবৃদ্ধির হার বছরে ২০০ শতাংশের মতো। হিলকার্ট রোড এবং সেবক রোডে গাড়ির চাপ বাড়ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত রাস্তা না থাকায় শহর ‘গতি’ হারিয়েছে। হিলকার্ট রোড, সেবক রোডে গাড়ির গতি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারও নয়।
তবে প্রস্তাবিত এই নতুন রাস্তা করা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দিহান বিরোধীরা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা, বিজেপি’র অমিত জৈনের কথায়, ‘‘মেয়র অনেক স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। কিন্তু শেষে দেখা যাচ্ছে কিছুই হচ্ছে না। তিন বছর তাঁরা পার করলেন। এখনও তো পরিষেবা উন্নয়নের কিছু দেখতে পাচ্ছি না।’’ সিপিএমের পরিষদীয় নেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই বোর্ড মুখে যা বলছে কাজে তা করতে পারছে না। বোরো থেকে ছোটখাট রাস্তা সংস্কারও করতে পারছে না। প্রস্তাবিত রাস্তা হলে খুবই ভাল। এই বোর্ড থাকা অবস্থায় কোনও দিন করতে পারবে না। কিছু টাকা শুধু এই সমীক্ষার কাজে নষ্ট হবে।’’
১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ কমল আগরওয়াল বলেন, ‘‘শহরের মানুষকে উন্নত পরিষেবার দেওয়ার কথা ভেবেই মেয়র এই পরিকল্পনা করেছেন। শহরবাসী ভবিষ্যতে উপকৃত হবেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)