অর্জুন পুরস্কার পেয়ে শিলিগুড়ি ফেরার পরে সংবর্ধনায় ভাসলেন টেবল টেনিস তারকা সৌম্যজিৎ ঘোষ। তাঁকে নিয়ে যেন প্রতিযোগিতাই চোখে পড়ল রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে। বাগ়়ডোগরা বিমানবন্দর থেকে তৃণমূলের উদ্যোগে হুডখোলা জিেপ তাঁকে শহরে আনা হয়। পরে অবশ্য আলাদা আলাদা করে তাঁকে সংবর্ধনা দেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ও বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূল কাউন্সিলর নান্টু পাল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
অর্জুন সম্মান নিয়ে ফিরতেই সৌম্যজিৎ ঘোষকে নিয়ে মেতে উঠল শিলিগুড়ি। মঙ্গলবার বিমানবন্দরে নামার পরে হুডখোলা জিপে তুলে মোটরবাইক র্যালি করে তাঁকে শহরে নিয়ে আসা, পুরসভার নাগরিক সংবর্ধনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত সৌম্যজিৎ-ও। সৌম্যজিৎ বলেন, ‘‘সংবর্ধনা পেয়ে ভাল লাগছে। এটা আমাকে ভবিষ্যতে আরও ভাল পারফরম্যান্স করতে উৎসাহ দেবে। ২০১৮ কমনওয়েলথ গেমস থেকে পদক আনা এবং ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিকে ভাল কিছু করে দেখাতে চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে ‘খেলরত্ন’ সম্মান লক্ষ্য রয়েছে।’’
তবে এ দিন বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে ক্রীড়া মহলের লোকজন, বিশেষ করে টেবল টেনিস খেলোয়াড়, ক্রীড়া সংগঠকদের সেভাবে চোখে পড়েনি। ন র্থবেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দুই প্রতিনিধি অমিত সরকার এবং সমীরণ সেন তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ক্রীড়া ক্ষেত্রের আর কাউকে দেখা যায়নি। বাকি সবটাই করেছে শিলিগুড়ি টাউন যুব তৃণমূল এবং টিএমসিপি। সংগঠনের মহিলারা প্রদীপ জ্বালিয়ে সৌম্যজিতকে বরণ করেন। ফুল ছড়িয়ে, তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানান। হুডখোলা জিপে তুলে বাইক র্যালি করে তাঁকে শহরে নিয়ে আসেন।
শহরে ঢোকার সময় মাল্লাগুড়ি পার হওয়ার পর জোরে বৃষ্টি নামলে আর বাইক র্যালি সম্ভব হয়নি। র্যালির উদ্যোক্তাদের অন্যতম, সঞ্জয় পাল, কুন্তল রায়, নির্ণয় রায়রা জানান, সৌম্যজিৎ শহরের গর্ব। তাঁকে স্বাগত জানাতে তাই এই আয়োজন করেছেন। এ দিন যুব তৃণমূল এবং টিএমসিপি সদস্যরা হেলমেট না পরে বাইক র্যালিতে অংশ নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। দলের পতাকা নিয়েও ছিলেন। পুলিশের সামনে দিয়ে এ ভাবে হেলমেট ছাড়া মিছিল করা হলেও কেন কিছু বলা হল না সেই প্রশ্ন উঠেছে। টিএমসিপি জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় জানান, ‘‘ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ভূল না হয় তা দেখা হবে।’’
বিকেল পাঁচটায় পুরসভায় সৌম্যজিৎকে সংবর্ধনা দিতে অপেক্ষা করছিলেন মেয়র, কাউন্সিলর এবং পুরকর্মীদের অনেকেই। বৃষ্টিতে সৌম্যজিতের পৌঁছতে দেরি হলে এক ঘন্টা পরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দুটি অলিম্পিকে অংশ নেওয়া ছাড়া জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সৌম্যজিৎ আমাদের গর্ব। তাঁর বাবা হরিশঙ্করবাবু আমাদের কর্মী। ভবিষ্যতে সৌম্যজিৎ আরও সাফল্য পাক এটাই আশা করি।’’ বিরোধী তৃণমূলের কাউন্সিররা অবশ্য পুরসভার সভাকক্ষে নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাননি। তাঁরা তৃণমূল পরিষদীয় দলের ঘরে আলাদা করে সংবর্ধনা জানান।
নাগরিক সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন ৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান সুজয় ঘটক-সহ কংগ্রেসের চার কাউন্সিলর। পুরসভার তরফে মানপত্র, ট্রফি, ২৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি স্কুল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন, মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ, দার্জিলিং জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বাম পরিচালিত পুরকর্মীদের তিনটি সংগঠনের তরফে সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। সংবর্ধনা জানানো হয পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চ, পুর রিক্রিয়েশন ক্লাব, ভেটারেন প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, শিলিগুড়ি ফুটবল অ্যাকাডেমি, শিলিগুড়ি মহকুমা খো-খো অ্যাসোসিয়েশন, কনট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন, ডিওয়াইএফ, এসএফআই-এর তরফে। বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল বলেন, ‘‘আমাদের এ দিন ১১টায় মোবাইলে এসএমএস করে জানানো হয়। পরে ক্রীড়া বিভাগের মেয়র পারিষদ ফোন করেছিলেন। বিরোধীদের আগে থেকে জানানো হবে এই সৌজন্যটুকু আমরা আশা করি। তবে মেয়রের সঙ্গে আমরা চলতে চাই না। খেলার বিষয় নিয়ে রাজনীতিও চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy