প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে স্বাভাবিক হচ্ছে পাহাড়। সেখানে বৃষ্টি ধরেছে। ডুয়ার্স-সহ সমতলেও কমে গিয়েছে বৃষ্টি। কোথাও কোথাও রবিবার বিকেলের পর থেকে আর বৃষ্টি হয়নি। ফলে উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জলস্তর অনেকটাই নেমে গিয়েছে। তবে দুর্যোগের চিহ্ন এখনও কোথাও কোথাও স্পষ্ট। ঝড়বৃষ্টির কারণে আপাতত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে বন্ধ রাখা হয়েছে পর্যটকদের প্রবেশ। বন্ধ গরুমারা জাতীয় উদ্যান্যও। অন্য দিকে, জলমগ্ন কোচবিহারেও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই ভাল। দু’-এক জায়গা ছাড়া শহরের আর কোথাও জল নেই। ছন্দে ফিরছে জনজীবন। তবে সিতাই বিধানসভার সিঙ্গিমারী চরে এখনও আটকে রয়েছেন ১৩-১৪ জন। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
শনিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ে। উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। পাহাড়ের জল নেমে এসেছে সমতলেও। তার জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ডুয়ার্স-সহ সমতলের বেশ কিছু এলাকা। ডুয়ার্সে জলের স্রোতে ভেঙে পড়ে কয়েকটি সেতু। জলদাপাড়া টুরিস্ট লজ যাওয়ার জন্য হলং নদীর উপরে কাঠের সেতুটিও জলের স্রোতে ভেঙে যায়। ফলে ওই অতিথিবাসে আটকে পড়েন প্রায় ২৫ জন পর্যটক। এই পরিস্থিতিতে জলদাপাড়া যেতে বারণ করা হয়েছে পর্যটকদের।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
সোমবার সকালে আটকে থাকা পর্যটকদের ‘আর্থ মুভার’ দিয়ে হলং নদী পার করানো হয়েছে। এখন সেখানে আর কোনও পর্যটক আটকে নেই। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জঙ্গলে কয়েক দিন পর্যটকদের যেতে বারণ করা হয়েছে।
আলিপুরদুয়ারে রবিবারের পরে সোমবারও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। তবে সকাল থেকে সেখানে আর বৃষ্টি হয়নি। তাতেই স্বস্তিতে স্থানীয়েরা এবং প্রশাসন। বৃষ্টি কমার কারণে নদীগুলিতে জলস্তর নেমেছে। সে কারণে আলিপুরদুয়ার-সহ সমতলেও নেমেছে জল। একমাত্র কালজানিতে জল জমে রয়েছে, তবে রবিবারে যা ছিল, সেই তুলনায় কম। প্রশাসনের একাংশের আশঙ্কা, ভুটান পাহাড়ে আবার বৃষ্টি হলে নদীগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পেতে পারে।
রবিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি হয়নি কোচবিহারেও। সোমবার সকাল থেকে আকাশ মেঘলা। তবে আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছে। এর ফলে নদীগুলির জলস্তর অনেকটাই নেমে গিয়েছে। রবিবার গোটা কোচবিহার শহরই ছিল জলের নীচে। তোর্সা নদী সংলগ্ন ১৬ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল। সোমবার সকালে ওই দুই ওয়ার্ড থেকেই জল অনেকটা নেমে গিয়েছে। রবিবার ডুয়ার্সের জঙ্গল থেকে একটি গন্ডার ভেসে এসেছিল কোচবিহারে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তোর্সা নদী সাঁতরে গন্ডারটি অন্য পারে চলে গিয়েছে। তার খোঁজ চলছে। পাওয়া গেলে আবার তাকে ডুয়ার্সের জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তোর্সা নদী এখন অনেকটাই শান্ত। জলস্তরও নেমেছে।
অন্য দিকে, কোচবিহারের সিতাই বিধানসভার সিঙ্গিমারী নদীর চরে চাষ করতে গিয়ে রবিবার আটকে পড়েছিলেন প্রায় ২০ জন। কয়েক জন কোনওমতে ফিরে এসেছেন। তবে এখনও আটকে রয়েছেন ১৩-১৪ জন। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরেও গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়নি। ফলে সেখানকার পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক। মালদহেও বৃষ্টি হয়নি। সেখানেও পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক।