Advertisement
E-Paper

মাথার উপর শঙ্খচূড়, জেগে কাটল সারারাত

মাথার ওপর শঙ্খচূড়ের ফণা। ভয়ে কাঁটা হয়ে শুক্রবার উঠোনের এক কোণে রান্নাঘরের মাটির দাওয়ায় বিনিদ্র রাত কাটাল ময়নাগুড়ির পানাবাড়ি গ্রামের এক পরিবারের কয়েক জোড়া চোখ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৭:৩০
শঙ্খচূড় সাপটিকে ধরার পরে। শনিবার ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।

শঙ্খচূড় সাপটিকে ধরার পরে। শনিবার ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।

মাথার ওপর শঙ্খচূড়ের ফণা। ভয়ে কাঁটা হয়ে শুক্রবার উঠোনের এক কোণে রান্নাঘরের মাটির দাওয়ায় বিনিদ্র রাত কাটাল ময়নাগুড়ির পানাবাড়ি গ্রামের এক পরিবারের কয়েক জোড়া চোখ। অবশেষে সকাল হতে প্রায় আঠারো ঘণ্টা পরে ঘর হাতবদল করা গেল ১২ ফুট লম্বা সাপটির দখল থেকে। সেখান থেকে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্রে তাকে রেখে আসেন বন কর্মীরা।

শুক্রবার সন্ধেতেই পানাবাড়ির বাসিন্দা অমর রায়ের বাড়ির শোওয়ার ঘরে শঙ্খচূড়় সাপটি ঢুকে পড়ে। এত বড় সাপ দেখে গোটা গ্রামে আতঙ্ক ছড়ায়। বন দফতর, সর্পবিশেষজ্ঞরা রাতেই ঘটনাস্থলে চলে এলেও অন্ধকারে এত বড় বিষধর সাপকে কব্জা করা বড় ঝুঁকি হয়ে যাবে বলে তাঁরা সে যাত্রা বিদায় নেন। এর পর বর্ষার রাত যেন শেষ হচ্ছিল না। শেষমেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় শনিবার বেলা বারোটা নাগাদ ঘর থেকে ধরা পড়ে শঙ্খচূড়টি।

ওই দিন সন্ধের মুখে পুকুর ধারের ঝোপঝাড় থেকে শিসের শব্দ শুনতে পান পেশায় ময়নাগুড়ি থানার সিভিক ভলান্টিয়ার অমরবাবুর পিসিমা মমতাদেবী। কীসের আওয়াজ, কৌতুহলবশত তা দেখতে গিয়েই ষাটোর্ধ মমতাদেবীর শিড়দাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায় বলে জানান তিনি। ভয়ে পেয়ে পিছিয়ে আসতেই সাপটি বাড়ির উঠোনে উঠে আসে। সেখান থেকে অমরবাবুর শোওয়ার ঘর। বাবার আমলের লোহার সিন্দুকের ওপর কুণ্ডলী পাকিয়ে বসে থাকা শঙ্খচূড়কে দেখেই অমরবাবুর কাকা দীনেশবাবু বুঝে যান সেটি যে সে সাপ নয়। মমতাদেবী একটি সরু কাঠি নিয়ে সামান্য খোঁচা মেরে তাকে বাইরে বের করার চেষ্টা করলে পাল্টা গরজে উঠে সে ঘরের পিলার পেঁচিয়ে ধরে। পড়শি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হরিশচন্দ্র রায় তাঁদের পরামর্শ দিয়ে যান সারা রাত উঠোন আর ঘরের সব আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে। ভুল করেও ঘুমিয়ে পড়া চলবে না। তিনি নিজেও শুক্রবার গভীর রাত অবধি রায় বাড়ির উঠোনে ঠায় বসে থাকেন।

রাত বাড়লে ফের বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। গভীর রাতে শঙ্খচূড়ও আশ্রয় নেয় ঘরের সিলিং-এ। দীনেশবাবু বলেন, ‘‘একটা রাত যেন সাতটা দিনের সমান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফুরোতেই চাইছিল না।’’ শনিবার বেলা হতেই ময়নাগুড়ি রোডের পরিবেশপ্রেমী নন্দু রায়, লাটাগুড়ির অনির্বাণ মজুমদার, জলপাইগুড়ির শ্যামাপ্রসাদ পান্ডেরা চলে আসেন। অনেক জন বনকর্মী মিলে ঘিরে ফেলেন বাড়িটিকে। অবশেষে উদ্ধার হয় শঙ্খচূড়। গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের ডিএফও উমা রানি বলেন, ‘‘সকলের মিলিত চেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। সারারাত পরিবারটি ধৈর্য্য নিয়ে বসেন বলেও শুনেছি। সাপটিকে এ দিন গরুমারার মেদলা রোড এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’

King cobra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy