Advertisement
E-Paper

রংবেরঙের প্রজাপতি, মথও পাচার হয়ে যাচ্ছে সীমান্ত দিয়ে!

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, চিন, মালেয়শিয়া, ফিলিপিন্স ছাড়াও আমেরিকা ও ইউরোপের বাজারে প্রজাপতির খুব চাহিদা রয়েছে। ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা, প্রজাপতি পার্ক, ছবি, ভাস্কর্য, অলঙ্কারের জন্য সেসবের ব্যবহার করা হয়।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫৭
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

শাল, সেগুন, গামারির মতো বহুমূল্য কাঠ পাচারের ঘটনা শোনা যায়। ভারত থেকে অন্য দেশে হরিণ, গন্ডারের শিং, চিতাবাঘের চামড়া, গেকো পাচারও হয়ে থাকে। অনেক সময় ধরাও পড়ে পাচারকারীরা। এ বার সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছে হরেকরকম রংবেরঙের প্রজাপতি, মথ। এমনটাই খবর এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) অফিসারদের কাছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সিকিম, দার্জিলিং পাহাড় থেকে শুরু করে ডুয়ার্স-তরাইয়ের জঙ্গল থেকে প্রজাপতি, মথ সংগ্রহ করে তা পাঠানো হচ্ছে নেপালে। সেখানে থেকে এজেন্টদের মাধ্যমে হাতবদল হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে বিদেশের বাজার।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, চিন, মালেয়শিয়া, ফিলিপিন্স ছাড়াও আমেরিকা ও ইউরোপের বাজারে প্রজাপতির খুব চাহিদা রয়েছে। ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা, প্রজাপতি পার্ক, ছবি, ভাস্কর্য, অলঙ্কারের জন্য সেসবের ব্যবহার করা হয়। কিছু ওষুধ তৈরির জন্যও প্রজাপতি পাচার হয় বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। হিমালয়ের উপরের প্রান্তের কাইশর ই হিন্দ, পিকক বাটারফ্লাই, কৃষ্ণা পিকক বাটারফ্লাই-মত বহু প্রজাতি রয়েছে, বিদেশের বাজারের এক একটি’র দাম ৮০০-১০০০ টাকা। ধরার পর কাঁচের জারে ভরে তা পাচার করা হয়। মারা গেলেও প্রজাপতির দামের খুব একটা হেরফের হয় না। শুধুমাত্র ব্যবহারের জায়গা বদল করে দেওয়া হয়।

অফিসারেরা জানান, প্রজাপতি সংগ্রহের জন্য পাহাড়-ডুয়ার্সের জঙ্গল চোরাকারবারীদের নজরে রয়েছে। দশ বছর আগে প্রথমবার বিষয়টি সামনে আসে। সেবার সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান থেকে চেক প্রজাতন্ত্রের দুই নাগরিক ইমিল কুসেরা এবং পিটার সেবেচকে কয়েকশো প্রজাপতি-সহ গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা নিজেদের গবেষক বলে পরিচয় দিয়ে প্রজাপতি সংগ্রহ করছিল। পরে নেপালের কারবারের বিষয়টি সামনে আসে। ফের সেই পাচার শুরু হয়েছে বলে খবর গোয়েন্দাদের কাছে।

দক্ষিণ ভারতের পশ্চিমঘাট পার্বত্য এলাকার জঙ্গল, পূর্ব হিমালয়ের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় কয়েক হাজার প্রজাতির প্রজাপতি ও মথের দেখা মেলে। বছর খানেক আগে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে যান। সেসময় তাঁরা নানা প্রজাতির প্রজাপতি এবং মথের দেখা পেয়েছিলেন। সিঙ্গালিলা, গরুমারা, জলদাপাড়া, মহানন্দার মত জাতীয় উদ্যান এবং অভয়ারণ্যগুলো থেকে অনুমতি ছাড়া কোনও জিনিস বাইরে আনা বেআইনি। তাই পর্যটক সেজে অথবা গবেষণার কথা বলে পাচারের চেষ্টা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সংস্থাকে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। রাজ্য বন দফতরের এক কর্তা জানান, জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্যগুলোর কিছু কিছু এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেই সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

এসএসএবি’র কয়েকজন অফিসার জানান, সাধারণত সীমান্ত এলাকা দিয়ে নিয়মিত বন্যপ্রাণের পাচার চলে। সেই ঘটনায় কিছু ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে প্রজাপতি পাচারের কথা শোনা গিয়েছে বলে জানান তাঁরা। প্রতিটি সীমান্তের ক্যাম্প, বিওপিকে সতর্ক করে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে গত দশ মাসে নেপাল সীমান্ত থেকে ৬টি হরিণের শিং, ৮টি গেকো, ১টি করে হরিণের মাথা ও চিতাবাঘের চামড়া, ১টি গন্ডারের শিং, সাপ উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়াও সাড়ে সাত কেজি চিতাবাঘের হাড় মিলেছে।

Smuggling Butterfly Border Moth
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy