Advertisement
২৯ মার্চ ২০২৩

স্বস্তি এলেও আছে উদ্বেগ

কয়েক মিনিটের মধ্যে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটেও ঝড় উঠল। নতুন নেতার উদয় বলে মন্তব্য থেকে শুরু করে কয়েকজন লিখে দিলেন, জঙ্গলে বসা নেতার আর দরকার নেই।

স্বস্তি: ততক্ষণে খুলতে শুরু করেছে বেশ কিছু দোকানের ঝাঁপ। বৃহস্পতিবার কার্শিয়াঙে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

স্বস্তি: ততক্ষণে খুলতে শুরু করেছে বেশ কিছু দোকানের ঝাঁপ। বৃহস্পতিবার কার্শিয়াঙে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

বিকেল থেকেই টিভি, ইন্টারনেটে চোখ মেলে বসেছিলেন সমতলের বহু ব্যবসায়ী। টেলিফোনে খোঁজখবর নেওয়া চলছিল পাহাড় থেকেও। বিশেষ করে পুজোর মুখে উদ্বিগ্ন হয়ে ছিলেন চা বাগানের শ্রমিক নেতা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। গত ৭৭ দিনের লোকসানের অঙ্ক প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ বিনয় তামাঙ্গ, আগামী ১২ দিন বন্‌ধ স্থগিত ঘোষণা করতেই, কিছুটা স্বস্তির হাসি ফুটল পাহাড় সমতলের বিভিন্ন মহলে।

Advertisement

কয়েক মিনিটের মধ্যে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটেও ঝড় উঠল। নতুন নেতার উদয় বলে মন্তব্য থেকে শুরু করে কয়েকজন লিখে দিলেন, জঙ্গলে বসা নেতার আর দরকার নেই। দার্জিলিঙের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা টেলিফোনে বললেন, ‘‘আলাদা রাজ্যের দাবি আমাদের থাকবে। কিন্তু এ ভাবে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে তা হয় না।’’ ওই প্রধান শিক্ষিকা মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক শীর্ষস্তরের নেতার আত্মীয়ও।

গত ৮ জুন রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠক ঘিরেই পাহাড়ে অশান্তির সূত্রপাত। তার পরে ১৫ জুন থেকে টানা বন্‌ধ। প্রথম কয়েকদিন পর্যটকদের পাহাড় ছাড়ার হিড়িক পড়েছিল। পুজোর বাকি হাতে গোনা তিন সপ্তাহ। আগামী এক সপ্তাহে পরিস্থিতির যদি উন্নতি হয়, তা হলে পুজোর মরসুমে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যালও। তিনি বলেন, ‘‘খুবই ভাল খবর। এমন হলে পর্যটনের পরিবেশ আবার ঠিকঠাক হবে।’’

শুধু শিলিগুড়ি নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মালপত্র পাহাড়ে পৌঁছায়। শিলিগুড়ি শহরের নয়াবাজার এবং পাইকারি বাজার এরমধ্যে অন্যতম। ব্যবসায়ীদের হিসাবে প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত ১৫ দিনে সন্ধ্যার পর ট্রাক যাচ্ছিল পাহাড়ে। টুকটাক দোকানও খুলছিল। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হলেও পুজোর বাজার এ বার কী হবে তা নিয়ে সংশয় ছিলই। নর্থ বেঙ্গল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জয় টিব্রুয়াল বলেন, ‘‘আশা করছি, পাহাড় পুরোদমে স্বাভাবিক হবে। আমরা পাহাড়-সমতলের মেলবন্ধনই তো চাই।’’

Advertisement

সন্ধ্যার পর শিলিগুড়ি জংশন, শালুগাড়া, পানিট্যাঙ্কি মোড়ের বিভিন্ন গাড়ির চালকরাও ভিড় করেন। আজ, শুক্রবার থেকে গাড়ি চালানো পুরোপুরি সম্ভব কি না, খোঁজখবর করে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে সাড়ে ৬টা নাগাদ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানান, বিমল গুরুঙ্গ বন্‌ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছেন। এতে ফের তাল কাটে। পাহাড়ের চকবাজার, এইচডি লামা রোডের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘বন্‌ধ যাতে ওঠে তা ভিতরে ভিতরে সবাই চান। ঘরের জমানো টাকায় কোনও মতে চলছিল। কিন্তু না তোলার হুমকিও এল।’’ এ দিন জলপাইগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘পাহাড়ে কিছু দোকান-পাট খুলছে, গাড়িও চলছে৷ বন্‌ধ করে সমস্যার সমাধান হয় না এটা আশা করি পাহাড়বাসীও বুঝছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.