রেল ব্রিজ পরিদর্শনে সৌরভ চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
এনবিএসটিসি-র পরে এ বার শিলিগুড়ির জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব পেলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী।
শুক্রবার বিকেলে সৌরভবাবুকে এসজেডিএ-র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ার সরকারি ঘোষণা হয়েছে। এ দিন সন্ধ্যার মধ্যে সংস্থার দফতরেও নয়া চেয়ারম্যান নিয়োগের সরকারি নির্দেশিকা পৌঁছেছে। সংস্থার তরফেও সৌরভবাবুকে সরকারি নির্দেশিকার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তিন জেলার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে বিধানসভা অধিবেশন ছেড়ে শুক্রবার উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছেন সৌরভবাবু। আজ, শনিবার তিনি সংস্থার নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন।
তৃণমূল জমানায় ২০১১ সালে শিলিগুড়ির তৎকালীন বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান করা হয়। বছর দেড়েক পরে সংস্থার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বহু কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ এসজেডিএ-র তরফেই থানায় মামলা দায়ের করা হয়। চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রুদ্রনাথবাবুকে। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় তৎকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে। দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন সংস্থার প্রাক্তন সিইও গোদালা কিরণ কুমারও। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এসজেডিএ-তে এখনও নানা অনিয়ম বাসা বেঁধেছে। সেই অভিযোগের সামাল দেওয়াই সৌরভবাবুর প্রথম চ্যালেঞ্জ বলে তৃণমূলের একাংশ মনে করছেন। সৌরভবাবুও এ দিন বলেন, ‘‘অতীত নয়, সংস্থার লক্ষ্য এখন এগিয়ে চলা। মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন।’’
তৃণমূল আমলে রুদ্রনাথবাবুর পরে এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান ছিলেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক গৌতম দেব। এবারে তৃণমূল সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে গৌতমবাবুকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের পরিবর্তে পর্যটন মন্ত্রী করা হয়। বিধানসভা ভোটে তৃণমূল দার্জিলিং জেলায় একটি আসন পায়নি। শিলিগুড়ি বিধানসভা আসনটি তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। গৌতমবাবুর পরিবর্তে কোচবিহারের নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব দেওয়ায় উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতাদের একাংশ দাবি করেন, দার্জিলিং জেলার ফলে ক্ষুব্ধ দলনেত্রী উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলার প্রতিনিধিদের হাতে বেশি দায়িত্ব দিতে চাইছেন। সপ্তাহান্তের ছুটির মুখে এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান নতুন নিয়োগের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌরভ চক্রবর্তীর তুলনা করা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, ভারতীয় দলেও এমনই একটি পর্বান্তরের কালে হাল ধরেছিলেন কলকাতার মহারাজ। বিধায়ক সৌরভও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেকেন্ড ইনিংসে হাল ধরলেন এসজেডিএ-র, যে সংস্থা বারবার নানা কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল। গৌতমবাবুর আমলে এসজেডিএ পুরনো সুনাম অনেকটা ফিরে পেয়েছিল। এ বার সেই সংস্থাকে পুরোদমে উন্নয়নের কাজে লাগানোই সৌরভবাবুর চ্যালেঞ্জ।
এ দিন সৌরভবাবু বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে এসজেডিএ-র কাজ করতে হবে বলে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো কাজ করব। আমার প্রথম লক্ষ্য হবে চলতে থাকা প্রকল্পগুলি শেষ করা এবং সংস্থার কাজে ন্যূনতম স্বচ্ছতার অভাবও যাতে না হয়, তার ব্যবস্থা করা।’’
সংস্থার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সৌরভ খুবই যোগ্য ছেলে। দু’টি জেলার সভাপতির দায়িত্ব থেকে দলকে ভাল ফল এনে দিয়েছে। আমার বিশ্বাস, সততার সঙ্গে উন্নয়নের কাজ এগিয়ে যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy