Advertisement
E-Paper

Ananta Maharaj: মহারাজ-মন বুঝতে কি অপারগ বিজেপি

অনন্ত মহারাজের যুবক বয়সের একটি ছবি কিছু দিন আগে সমাজমাধ্যমে ‘শেয়ার’ করেছিলেন তৃণমূলেরই প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

নমিতেশ ঘোষ , অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২২ ০৭:২২

“আমি কোনও রাজনীতি করি না। আমার সঙ্গে সবার ভাল সম্পর্ক। তাই প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা বা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে যারা রাজনীতির কথা বলে, ঠিক বলে না।” ঠোঁটের কোণে একটু হাসি রেখে স্পষ্ট ভাবেই কথাগুলি বলছিলেন অনন্ত মহারাজ।

কিছু দিন আগেই তাঁর আমন্ত্রণে কোচবিহারে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চারদিকে গুঞ্জন ছিল, এ বার কি মহারাজ তবে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গী? বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন বিজেপি নেতারাও। শোনা যায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক কয়েক দফায় যোগাযোগও করেছিলেন মহারাজার সঙ্গে। এর পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে শিলিগুড়িতে গিয়েছিলেন মহারাজ। তার পরেও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও খোঁজ নিতে শুরু করেছেন, অনন্ত এখন কী ভাবছেন?

তা হলে কি অনন্তের মন বুঝতে পারছেন না বিজেপির পোড়খাওয়া নেতারাও?

কোচবিহার শহর থেকে বাবুরহাটের রাস্তায় বড়গিলার পাকা সড়ক থেকে সরু গলি চলে গিয়েছে মহারাজার প্রাসাদে। প্রাসাদে যাওয়ার গলিতে বসেছে বাহারি ব্লক। তা-ও সরকারি উদ্যোগে। সিংহ দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রহরী। থাকে যেন অদৃশ্য সব চক্ষুও। নির্দিষ্ট সময় মেনেই মহারাজ সাক্ষাৎ করেন অতিথিদের সঙ্গে।

তখন সন্ধ্যে নেমে এসেছে। মুখে সেই মুচকি হাসি নিয়েই কথা শুরু করলেন মহারাজ। বললেন, “আমি মানুষের দাবির কথা বলি। কোচবিহারের ভারত-ভুক্তি চুক্তি রূপায়ণের দাবি রাখি। এই এলাকার উন্নয়নের কথা বলি।” তাঁর কথায়, “এই চুক্তি রূপায়ণের বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। এখানে রাজ্যের কিছু করণীয় নেই।” আবার এ-ও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এলাকা উন্নয়নের কথা বলেছেন। আমাদেরও কিছু প্রস্তাব রয়েছে। উন্নয়নকে আমরা স্বাগত জানাই। সব রকম সাহায্য করতেও প্রস্তুত।” বলতে বলতে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘‘আপনারা কী ভাবছেন বলুন তো?’’

অনন্ত মহারাজের যুবক বয়সের একটি ছবি কিছু দিন আগে সমাজমাধ্যমে ‘শেয়ার’ করেছিলেন তৃণমূলেরই প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কেউ কেউ বলেন, “এ তো অমিতাভ বচ্চনের মতো।” রবীন্দ্রনাথ বলেন, “উনি অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ভাল মানুষ। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। আমরা চাই তিনি রাজ্য সরকারের সঙ্গে থাকুন।” মহারাজ নিজেই জানিয়েছেন, এ বারে বিধানসভার আগে অবশ্য কিছু মামলায় তাঁকে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, ফলে তিনি পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। আর তা নিয়েই উদ্বেগে বিজেপি। বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “অনন্ত মহারাজের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বরাবর ভাল। তাঁকে নিয়ে রাজনীতি আমরা করি না।”

গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের আর এক নেতা বংশীবদন বর্মণ রয়েছেন অনন্ত মহারাজের বিপরীত মেরুতে। তাঁর কথায়, “জাতি-মাটির জন্য সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি। ৬ বছর জেলে থাকতে হয়েছে। আন্দোলন বন্ধ হয়নি। বাকি কে কী করেছে, মানুষ দেখেছে।’’

বংশীর মতো আন্দোলনে নেই অনন্ত। কিন্তু সম্প্রতি তৃণমূলের পাশে তাঁকে একটু বেশিই দেখা যাচ্ছে। তৃণমূলের এক নেতার বাড়িতেও গিয়েছেন সম্প্রতি। এবং সেটা অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে। তাই কি বিজেপির দুশ্চিন্তা? তা হলে কি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের মুঠ‌ো আলগা হয়ে গিয়েছে?

তবে যারই মুঠো আলগা হোক, ট্রাপিজের এই খেলায় মহারাজের খুঁটি কিন্তু শক্তই রয়েছে। (চলবে)

Ananta Maharaj TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy