Advertisement
E-Paper

তিস্তা সেচের খাল কাটার বরাদ্দ নিয়ে ‘চাপান-উতোর’

টাকা না থাকার বিষয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের ভূমিকার পাল্টা সমালোচনা করেছেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩ ০৮:২৯
জলপাইগুড়িতে বেহাল তিস্তা সেচখাল। নিজস্ব চিত্র

জলপাইগুড়িতে বেহাল তিস্তা সেচখাল। নিজস্ব চিত্র

জমি-জট কাটল। কিন্তু বরাদ্দ নেই। তিস্তা সেচ প্রকল্পে তাই নতুন খাল কাটার প্রসঙ্গই উঠল না জলপাইগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠকে। রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের উপস্থিতিতে জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক হয়েছে শুক্রবার। সে বৈঠকে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, হাজার একর জমি দখলমুক্ত করে সেচ দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিস্তা-জলঢাকা মূল খাল কাটার জন্য সেচ দফতরই এই জমি চেয়েছিল জেলা প্রশাসনের থেকে। সে জমি হাতে এলেও, সূত্রের দাবি, বৈঠকের শুরুতেই সেচমন্ত্রী রাজ্যের হাতে বরাদ্দ না থাকার প্রসঙ্গ তুলেছেন বলে সূত্রের দাবি। পরে, সেচ প্রকল্প থমকে থাকার জন্য কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন সেচমন্ত্রী। যদিও টাকা না থাকার বিষয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের ভূমিকার পাল্টা সমালোচনা করেছেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়।

মন্ত্রী বলেন, “আমরা সেচ প্রকল্প কেন্দ্রকে পাঠিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’—কিছু বলেনি। কেন্দ্র যদি না বলে দেয় তবে রাজ্য নিজেই করতে পারবে।” উত্তরবঙ্গের বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের নিশানা করে মন্ত্রী বলেন, “জমি পেলেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় না। একাধিক ধাপ পেরোতে হয়। তার পরে, টাকা বরাদ্দ হওয়ার প্রশ্ন ওঠে।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘এখানে বিজেপির বিধায়কেরা রয়েছেন। ওঁদের আমরা বলেছিলাম, এক সঙ্গে দিল্লিতে গিয়ে টাকা চাই। ওঁরা কেউ রাজি হননি। নিজেদের বিধানসভার বাসিন্দাদের জন্যও টাকা আনতে রাজি হননি বিজেপি বিধায়কেরা।” অভিযোগ উড়িয়ে জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় পাল্টা বলেন, “গত বার বন্যার সময়ে দেখেছি, জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার জন্যও কেন্দ্রের থেকে টাকা চাইছে রাজ্য সরকার। জরুরি কাজের বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষমতাও যদি রাজ্যের সরকারের না থাকে, তবে তৃণমূল সরকার ছেড়ে দিলেই পারে।”

দীর্ঘ কয়েক দশক পরে, তিস্তা সেচের প্রকল্পে জমি-জট কাটায়, ফের নতুন এলাকায় সেচ খাল তৈরির আশা জেগেছে। যদিও বরাদ্দ নিয়ে টানাপড়েনে এর ভবিষ্যত নিয়ে সংশয়ে কৃষকদের অনেকে। সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা কৃষকসভার নেতা প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাস বলেন, “এখন যা হচ্ছে, সবেতেই কেন্দ্র-রাজ্য টানাটানি। আমাদের সময়ে কেন্দ্র থেকে কিছু টাকা আনতে পেরেছিলাম। তবে তিস্তা সেচের পুরোনো খালের যা দশা হয়ে রয়েছে তাতে সম্প্রসারণ করে কিছু হবে না, পুরোটা সংস্কার করতে হবে। সে সদ্দিচ্ছা রাজ্য সরকারের আছে বলে মনে করি না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেছেন, “সদ্দিচ্ছা আছে বলেই সেচমন্ত্রী এসে খাল কাটা নিয়ে বৈঠক করছেন।”

তিস্তা-জলঢাকা মূল খাল কাটার কাজ সম্পূর্ণ হলে আড়াই থেকে চার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো মরসুমে সরকারি ভাবে (প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ রূপে) সেচের জল দেওয়া সম্ভব হবে বলে সেচ দফতর সূত্রের দাবি। যদিও খাল কাটা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ময়নাগুড়ি, ক্রান্তি, ধূপগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় আদৌ সেচের জল দেওয়া সম্ভব হবে তা অনিশ্চিত। কৃষকদের অভিজ্ঞতা, প্রতি বছর সেচখালে জল কমছে। পাম্প চালিয়ে জলসেচ করার খরচও বাড়ছে। তা বাড়িয়ে দিচ্ছে চাষের খরচ।

Teesta River Irrigation Work Jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy