এই বিগ্রহের গা থেকেই চুরি হয় অলঙ্কার। — নিজস্ব চিত্র
মালদহের চাঁচলের ঐতিহ্যবাহী মালতীপুর রাজ কালী মন্দিরের প্রতিমার অলঙ্কার চুরিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ট্রাস্টের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকার মানুষ। মঙ্গলবার রাতে মন্দিরের দানবাক্সের টাকা ও প্রায় ৩০ ভরি সোনা-রূপোর অলঙ্কার চুরি করে দুষ্কৃতীরা।
জানা গিয়েছে, চার মাস আগেও একইভাবে ওই মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেছিল। এ দিন সকালে ফের চুরির ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় সড়কের পাশে ওই মন্দিরে পুলিশের টহলদারি এড়িয়ে কীভাবে বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি প্রতিমার গায়ে প্রচুর অলঙ্কার থাকলেও কেন মন্দিরে নৈশপ্রহরী নেই তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অর্থাভাবে মন্দিরে নৈশ প্রহরী রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে ট্রাস্টের দাবি।
চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্দিরে নৈশপ্রহরী রাখার কথা থাকলেও বাস্তবে মন্দিরে কোনও নৈশপ্রহরী নেই। বিষয়টি আমাদের জানানোও হয়নি। যাইহোক পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’’
মালতীপুরে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ৪০০ বছরের পুরনো কালীমন্দিরটি রয়েছে। চাঁচল রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠিত ওই কালী মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে চাঁচল রাজ অফিসিয়াল ট্রাস্টি বোর্ড। বোর্ডের অধীনে চাঁচলে একজন পর্যবেক্ষক রয়েছেন। এছাড়া স্থানীয় স্তরে একটি পরিচালন সমিতিও রয়েছে। ওই কালীমন্দির ছাড়াও ট্রাস্টের অধীনে থাকা সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় ট্রাস্টি বোর্ড। ট্রাস্টি বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরে একজন নৈশপ্রহরী ছিলেন। তাকে মাসে ৭০০ টাকা দেওয়া হত। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে তার মৃত্যুর পর ওই টাকায় কেউই নৈশপ্রহরী হিসেবে থাকতে চাইছেন না। সমস্যার কথা কলকাতায় ট্রাস্টি বোর্ডকেও জানানো হলেও কোনও ফল হয়নি।
ট্রাস্টি বোর্ডের স্থানীয় পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসরারুল হক বলেন, ‘‘সমস্যার কথা কলকাতায় জানিয়েছি। কিন্তু ওরা পরিষ্কার জানিয়েছে যে কোনওরকম সাহায্য করা যাবে না। আমাদের প্রশ্ন, ট্রাস্টের রোজগারের টাকা আমাদের দেওয়া হবে না কেন? ট্রাস্টের ভূমিকায় বিরক্ত হয়ে আমরা মামলাও করেছি। এখন ৫০০ টাকায় পুরোহিত আর ৭০০ টাকায় কি নৈশপ্রহরী মেলে নাকি?’’
ট্রাস্ট বোর্ডের স্থানীয় পর্যবেক্ষক পিনাকীজয় ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘দেড় হাজার টাকার কমে কোনও নৈশপ্রহরী মিলছে না বলে কলকাতায় ট্রাস্টকে আমিও জানিয়েছি। কিন্তু ওদের তরফে কোনও সাড়া নেই।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy