Advertisement
E-Paper

সিপিএম প্রার্থী জেলে, বন্‌ধে বিপর্যস্ত মালদহ

পথে নেমে তৃণমূলের বিরোধিতা সত্ত্বেও, বামেদের ডাকা বন্‌ধে বুধবার বিপর্যস্ত হল মালদহ শহরের জনজীবন। মঙ্গলবার ইংরেজবাজার পুরসভার দুই সিপিএম প্রার্থী সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন এই শহরে বন্‌ধ ডাকে বামফ্রন্ট। ইংরেজবাজার পুরসভার সিপিএমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুতপা দাস ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শুভদীপ সান্যাল সহ ওই ছ’জনের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৩
বামফ্রন্টের ডাকা বন্‌ধে স্তব্ধ মালদহ শহরের জনজীবন। তার মধ্যেই বন্‌ধ বিরোধিতায় তৃণমূলের মিছিল। বুধবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

বামফ্রন্টের ডাকা বন্‌ধে স্তব্ধ মালদহ শহরের জনজীবন। তার মধ্যেই বন্‌ধ বিরোধিতায় তৃণমূলের মিছিল। বুধবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

পথে নেমে তৃণমূলের বিরোধিতা সত্ত্বেও, বামেদের ডাকা বন্‌ধে বুধবার বিপর্যস্ত হল মালদহ শহরের জনজীবন। মঙ্গলবার ইংরেজবাজার পুরসভার দুই সিপিএম প্রার্থী সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন এই শহরে বন্‌ধ ডাকে বামফ্রন্ট। ইংরেজবাজার পুরসভার সিপিএমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুতপা দাস ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শুভদীপ সান্যাল সহ ওই ছ’জনের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সুতপাদেবী অসুস্থ। তিনি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি ৫ জনকে এ দিন আদালতে তোলে পুলিশ। সকলকেই জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রুম্পা দাস অভিযোগ করেন, ওই এলাকায় দলীয় কার্যালয় তৈরি করতে গেলে সিপিএম কর্মীরা তাঁকে মারধর করেছেন। সেই অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশের সঙ্গে বাম কর্মী সমর্থকদের বচসাও শুরু হয়। তখন পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে সেই দিন সন্ধ্যায় থানার সামনে বাম কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুলিশ সুপতপাদেবী ও শুভদীপবাবু সহ ওই ৬ জনকে গ্রেফতার করে।

তার প্রতিবাদেই ডাকা এ দিনের বন্‌ধের বিরোধিতায় বুধবার সকাল থেকে তৃণমূল মিছিল করেছে। কিন্তু সকাল থেকেই শহরের সব এলাকাতে দোকান-বাজার বন্ধ ছিল। বেসরকারি বাস সহ অন্য যানবাহনেরও দেখা মেলেনি। সরকারি অফিসেও হাজিরা ছিল কম। মিছিল করে গিয়ে তৃণমূল কর্মীরা ব্যবসায়ীদের দোকান খুলতে বললেও, মাত্র কয়েকটি দোকানই খুলেছে। দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। শহরে রিক্‌শা, অটো ও টোটোর সংখ্যাও ছিল সাধারণ দিনের তুলনায় অনেকই কম। মন্ত্রী তথা পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীও এ দিন এলাকার বাইরে গিয়ে মিছিল করেন। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও দল বন্‌ধ ডাকলেই ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি না নিয়ে দোকান বন্ধ রাখেন। তার মানে এই নয় যে, তাঁরা বন্‌ধকে সমর্থন করেছেন।’’

তবে সিপিএম মনে করছে, বন্‌ধের যে চিত্র এ দিন দেখা গিয়েছে, তাতে পুরভোটের ফল তাঁদের পক্ষেই যাবে। সারা দিন শহর জুড়ে মিছিল করেন বাম কর্মী সমর্থকেরাও। ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্যামল চক্রবর্তীও। মিছিলের পরে রথবাড়িতে বিক্ষোভ সভাও হয়। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল বুঝতে পারছে তাদের অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে। তাই পুলিশকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করতে চাইছে।’’

সুতপাদেবী ও শুভদীপবাবু ছাড়াও মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে রাজেশ মল্লিক, রাজা রায়, প্রবীর মজুমদার ও তারকনাথ সাহাকে। সকলের বিরুদ্ধেই পুলিশকে হেনস্থা, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশকে আটকে রাখা, পুলিশের কাজে বাধা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। রাতের বেলা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় পুলিশ ২৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। নাম আছে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রেরও। আদালত এ দিন শুভদীপবাবু ও প্রবীরবাবুকে ১০ দিনের ও বাকি তিন জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

অম্বরবাবু বলেন, ‘‘দুই প্রার্থীকে মিথ্যা মামলায় জেলে পুরে তৃণমূল তাঁদের প্রচার করতে দিতে চায় না। কিন্তু মানুষ আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন।’ শুভদীপবাবুর দাবি, পুলিশ তাঁকে বেধড়ক মারধর করেছে কিন্তু তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

malda cpm jail municipal election trinamool tmc police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy