Advertisement
E-Paper

এতদিনের কষ্ট আজ সব ব্যর্থ, বললেন বিজনের বাবা

রবিবার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হস্টেলের চারতলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় মেকানিক্যাল বিভাগের ছাত্র বিজনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৫৮
শোকগ্রস্ত: হাসপাতালে মৃত ছাত্রের বাবা (ডানদিকে)। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

শোকগ্রস্ত: হাসপাতালে মৃত ছাত্রের বাবা (ডানদিকে)। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

অন্যের জমিতে কাজ করে ছেলেকে পড়াচ্ছিলেন বাবা। ভাল ছাত্র হিসেবে গ্রামের সকলেই জানতেন সেই ছেলেকে। বাবার স্বপ্ন ছিল, ইঞ্জিনিয়ার হয়ে তাঁর সংসারের অভাব ঘোচাবেন ছেলে। সেই স্বপ্নের ইতি ঘটল। ছেলে বিজনের নিথর দেহ নিয়ে ডায়মন্ড হারবারে বাড়ির পথে রওনা হলেন বাবা শ্যামল বারিক।

মঙ্গলবার কোচবিহার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এসে এবং পরে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন শ্যামল। তিনি বলেন, “ছেলে যে নেই ভাবতে পারছি না। কেন এমন হল, কে জানে। এতদিনের কষ্ট আজ সব ব্যর্থ হয়ে গেল। আর তো কয়েকটা মাস বাকি ছিল!” হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রবাল দেব বলেন, “এমন ভাবে একজন ছাত্রের মৃত্যু হবে ভাবতে পারছি না। কেউই মেনে নিতে পারছি না।”

রবিবার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হস্টেলের চারতলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় মেকানিক্যাল বিভাগের ছাত্র বিজনের। খবর পেয়ে ডায়মন্ড হারবারের ফলতা থানার আউশবেড়িয়া থেকে সোমবার রাতে তাঁর বাবা ও পরিবারের আরও তিনজন কোচবিহারে পৌঁছন। এ দিন সকালে তাঁরা প্রথমে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যান। কলেজের অধ্যক্ষ থেকে বিজনের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

এ দিনই বিজনের দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশের ধারণা, চারতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বিজন। সহপাঠীদের অনেকেই তাঁকে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন বলে তাদের দাবি। ছাদ থেকে পড়ার পর কয়েকঘণ্টা বেঁচে ছিলেন বিজন। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। সহপাঠীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালেই বিজন আমেরিকান র‌্যাপ গায়ক এমিনেম-এর ‘ফল’ গানটি শুনতে চাইছিলেন। মারা যাওয়ার আগেও তিনি ওই গানটিই শুনছিলেন বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে। ইউটিউবে ওই গানের শেষ দৃশ্যের চরিত্র যুবক একটি বহুতল থেকে লাফ দিয়ে হেঁটে বেরিয়ে যান।

পরিবারের সদস্যেরা এ দিন জানান, ছোটবেলা থেকে বিজন একটু ঘরকুনো স্বভাবের ছিল। খেলাধূলার মাঠে না গিয়ে ঘরেই সময় কাটাতেন বেশি। মোবাইল হাতে পাওয়ার পরে তা নিয়েই ঘরে বসে থাকতেন। গান শোনার পাশাপাশি ভিডিয়ো গেম খেলারও অভ্যেস ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁর ওই স্বভাবের সঙ্গে মৃত্যুকে মেলাতে পারছেন না কেউ।

তাঁর বাবা জানালেন, রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ বাড়িতেও ফোন করেছিলেন বিজন। সেই সময় তাঁর দিদি পারমিতার সঙ্গে কথা হয় তাঁর। ফোনে বিজন জানান, কিছুক্ষণ পরেই ট্রেনে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তিনি। বিজনের কাকা সমর বারিক, প্রতিবেশী অরূপ হালদার জানান, তাঁদের কাছে পুরো বিষয়টি খুব অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। বিজনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা প্রয়োজন বলে তাঁদের দাবি।

Cooch Behar Engineering Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy