Advertisement
E-Paper

শ্লীলতাহানির নালিশ হয়নি কেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষোভ

এক মহিলা গবেষকের শ্লীলতাহানির অভিযোগে সরব হয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্রছাত্রীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০২:১৭
ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চেয়ে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। —নিজস্ব চিত্র।

ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চেয়ে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। —নিজস্ব চিত্র।

এক মহিলা গবেষকের শ্লীলতাহানির অভিযোগে সরব হয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্রছাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার সাড়ে ছ’টা নাগাদ ক্লাস থেকে বার হয়ে হস্টেলে ফেরার পথে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যেই বহিরাগত এক যুবক বাইকে করে পিছন দিক থেকে এসে ওই মহিলা গবেষকের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। চমকে উঠে তিনি চিৎকার করলে তাঁর পোশাক ধরে টেনে অভিযুক্ত বাইক নিয়ে পালিয়ে যায় বলে দাবি করা হয়েছে। পরে অন্য পড়ুয়া এবং নিরাপত্তা রক্ষীরা এলেও অভিযুক্তকে ধরা যায়নি। তখনই উপাচার্যকে ঘটনা জানানো হয়। অথচ এ দিন দুপুর পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়নি দেখে কয়েক’শো ছাত্রছাত্রী ক্যাম্পাসে মিছিল করে প্রতিবাদে সরব হন। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। কেন ক্যাম্পাসে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

অভিযুক্তকে শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দাবিতে প্ল্যাকার্ড লিখে উপাচার্যের দফতরে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। উপাচার্যকে লিখিত ভাবে অভিযোগও জানান তাঁরা। দ্রুত এফআইআর না করলে এবং সাত দিনের মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন পড়ুয়ারা। উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ জানিয়েছে। গত কাল সন্ধ্যায় ঘটনা জানার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশকেও নানো হয়েছে। পড়ুয়াদের বিশেষ করে ছাত্রীদের নিরাপত্তার যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য সমস্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।’’ উপাচার্য জানান, ক্যাম্পাসে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে ভোট ঘোষণা হওয়ায় সেই কাজ করতে কিছুটা দেরি হবে বলেই তিনি জানান।

ছাত্রীদের অভিযোগ, এর আগেও একাধিকবার শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। তার পরেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। যে ছাত্রীটির সঙ্গে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে তিনি জানান, ওই দিন উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের গবেষণাগার থেকে ক্লাস করে তিনি ফিরছিলেন। ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের সামনের মোড়ে পৌঁছলে পিছন থেকে ওই যুবক তার উপর হামলা করে। চিৎকার করলে বাইক নিয়েই পালিয়ে যায়। কাছেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে নিরাপত্তারক্ষীরা ছিলেন। খবর পেয়ে তাঁরা এলেও অভিযুক্তকে ধরতে তাঁরা তৎপরতা দেখাননি বলে অভিযোগ। ছাত্রদেরই কয়েকজন বাইক নিয়ে পিছু ধাওয়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের পিছনে নিউরঙিয়া এলাকায় যান। কিন্তু অভিযুক্তরা তত ক্ষণে পালিয়ে গিয়েছে।

এ দিন রিসার্চ স্কলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অনুরাগ চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বর্ষা দে, সত্যজিৎ সরকাররা অভিযোগ করেন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা দীর্ঘ দিন ধরেই নড়বড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনের অংশে থাকা বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা ক্যাম্পাসের মধ্যে দিয়ে সব সময় যাতায়াত করছেন। কোনও নজরদারি নেই। নিরাপত্তা রক্ষীরা কাজের সময় এক জায়গায় অনেকে জড়ো হয়ে আড্ডা দেন। সন্ধ্যের পরেই ক্যাম্পাসের অনেক জায়গা অন্ধকারে ডুবে থাকে।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা পঙ্কজ সিংহ, অনুরাগ চৌধুরীরা জানান, কোনও ভাবেই এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যাবে না। দলমত নির্বিশেষে ছাত্রছাত্রীরা এ দিন প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। এ ধরনের ঘটনায় অবিলম্বে পুলিশে এফআইআর-এর দাবি করা হয়েছে। প্রতিটি গেটে নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করতে হবে। ছাত্রীদের হস্টেলগুলিতে মহিলা নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে। ওই দিন ঘটনার সময় ওই এলাকায় কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

molestation university student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy