প্রতীকী ছবি।
মেয়াদ ফুরিয়েছে সাড়ে পাঁচ মাস আগে। তারপরে জলপাইগুড়ি জেলার শিশু কল্যাণ সমিতির নয়া সদস্যদের নাম ঘোষণা করল রাজ্য। পাঁচ জনের কমিটিতে নতুন মুখ এক জন। বিদায়ী কমিটির থেকেই চার জনকে নতুন কমিটিতে রাখা হয়েছে। বিদায়ী চেয়ারপার্সন বেবী উপাধ্যায়ই নয়া কমিটিরও চেয়ারম্যান হয়েছেন।
আগের কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন সুবোধ ভট্টাচার্য। এই বাদ পড়া নিয়েই প্রশাসন এবং জেলায় শিশুদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। সুবোধবাবুর অভিযোগ, ‘‘শিশু বিক্রি নিয়ে সরব হওয়াতেই আমাকে কমিটি থেকে বাদ পড়তে হল।’’ রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, “শিশু বিক্রির অভিযোগ প্রথম করার সঙ্গে কমিটি থেকে নাম বাদ যাওয়ার কোনও সম্পর্কই নেই। সুবোধবাবু নিঃসন্দেহে ভাল এবং যোগ্য, তবে তাঁর থেকে যোগ্যতর কাউকে পাওয়া গিয়েছে। যোগ্যতরকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।”
ঘটনাচক্রে, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিডবলিউসি-র সদস্য হিসেবে সুবোধবাবু জলপাইগুড়িতে শিশু বিক্রির চক্র সক্রিয় দাবি করে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের সচিবকে চিঠিতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। প্রশাসনিক ভাবে সেটিই ছিল শিশু বিক্রি নিয়ে প্রথম কোনও লিখিত অভিযোগ। তার মাস ছয়েকের মধ্যে বিভাগীয় স্তরে খোঁজখবর শুরু হয় এবং আরও কয়েক মাস পরে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। দত্তক দেওয়ার নাম করে শিশু বিক্রির অভিযোগে সরকারি পদে থাকা দু’জনকে নিয়ে মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সে মামলা এখনও চলছে।
সুবোধবাবুর অভিযোগ ছিল, সিডবলিউসি-র অনুমতি ছাড়াই ২০টি শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে। আগে দত্তক দেওয়া শিশুগুলির ক্ষেত্রে পরে সিডবলিউসি-র অনুমোদন নিতে নানা চাপ তৈরি করা হয়। সেই অভিযোগ পত্রে সিডবলিউসি-র তদানীন্তন কমিটির মধ্যে একা সুবোধবাবু সই করেছিলেন।
তবে প্রশাসনের একটি অংশের দাবি কমিটিতে থাকাকালীন সুবোধবাবুর বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সুবোধবাবুকে বাদ দিয়ে কমিটিতে ঢুকেছেন মৌলানির প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান মহাদেব রায়। সুবোধবাবুর মন্তব্য, “অভিযোগ করেছি বলে কমিটি থেকে বাদ পড়েছি, কিন্তু আমার কোনও আক্ষেপ নেই। মামলা চলছে, আদালতেই সব প্রমাণ হবে।”
এতদিন জলপাইগুড়ির সিডবলিউসি কার্যত অচল হয়ে থাকায় জলপাইগুড়িতে যে সব শিশু উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের নিয়ে যেতে হত আলিপুরদুয়ারের সিডবলিউসি-র কাছে। বিভিন্ন হোমে যে শিশুরা রয়েছে, তাদের নিয়ে নানা সিদ্ধান্তও আটকে থাকত সিডবলিউসি-র জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy