Advertisement
E-Paper

খালি পেটেও মাঠে ছুটতে হয় সোনা জয়ী মামনিকে!

মামনির ইচ্ছে জাতীয় স্তরেও সাফল্য। তবে অনটনের সংসারে মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ইংরেজবাজার ব্লকের নঘরিয়া গ্রামের ঘোষ পরিবার।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
গর্বিত: মেয়ে মামণির সঙ্গে মা জ্যোৎস্নাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

গর্বিত: মেয়ে মামণির সঙ্গে মা জ্যোৎস্নাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

কখনও ছাতুর ঘোল। কখনও আবার কাঁচা লঙ্কা দিয়ে পান্তা ভাত। কখনও তাও মেলে না নিয়মিত। তখন খালি পেটেই মাঠে ছুটতে হয় জ্যাভেলিন থ্রো-তে সোনা জয়ী মামনি ঘোষকে। মামনির ইচ্ছে জাতীয় স্তরেও সাফল্য। তবে অনটনের সংসারে মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ইংরেজবাজার ব্লকের নঘরিয়া গ্রামের ঘোষ পরিবার।

ইংরেজবাজার শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়িয়া পঞ্চায়েতের নঘরিয়া গ্রাম। গ্রামের এক কোণে ইটের ভাঙাচোরা বাড়িতে থাকে মামনিরা। ঘরের এক কোণে সার দিয়ে সাজানো একগুচ্ছ ট্রফি। তার পাশেই দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা একের পর এক মেডেল। বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখা সে সব।

মামনির বাবা অজিত ঘোষ পেশায় দিন মজুর। তাঁর তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড়ো মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আর্থিক কারণে মাধ্যমিকের পরে ছেলের পড়া বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে ছোট মেয়ে মামনিকে পড়াচ্ছেন তাঁরা। নঘরিয়া হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী মামনি পড়াশোনায় মেধাবী না হলেও খেলাধুলোয় তার চিরকালই সুনাম। স্কুলের হয়ে জ্যাভেলিন থ্রো, ডিসকাসে রাঁচি, কেরল এবং গুয়াহাটিতে খেলতে গিয়েছে মামনি। সেখানে সাফল্য না মেলায় মাঠে আরও ঘাম ঝরাতে থাকে মামনি। সহযোগিতায় স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক তথা তার কোচ পুলক ঝা।

পুলকবাবুর কোচিংয়েই এ বারে রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে সাফল্য পেয়েছে হত দরিদ্র পরিবারের এই মেয়েটি। অনূর্ধ্ব ১৮ বিভাগে জ্যাভেলিন থ্রো-তে ৩৪.৮৩ মিটার ছুড়ে রেকর্ড গড়েছে সে। ডিসকাসেও প্রথম হয়ে সোনা পেয়েছে মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েটি। মামনি জানায়, ‘‘খেলেই আমি সংসারের হাল ফেরাতে চাই। জাতীয় স্তরে খেলতে চাই আমি। ভাল খাবার আর সহযোগিতা পেলে আশা করছি লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব।’’

মেয়ের সাফল্যে চোখ ভিজে উঠছে বাবা-মায়ের। মামনির মা জ্যোৎস্নাদেবী আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘মাঠে ছয় থেকে আট ঘণ্টা করে পরিশ্রম করে মেয়ে। তাকে যে দুধ, ডিম খাওয়াব সেই সামর্থ্য নেই।’’ অজিতবাবু বলেন, ‘‘আমরা কখনও ওকে খেলায় বাধা দিইনি।’’ বরাবরের মতো আগামী দিনেও সোনা জয়ী ছাত্রীর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন স্কুল শিক্ষক পুলকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘প্রোটিনযুক্ত খাবারের প্রয়োজন ওর। আমার সামর্থ্য মতো সব সময়ই তার পাশে থাকব।’’

sports Javelin throw
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy