শিলিগুড়ি শহরের আয়তন খুব ধীরে ধীরে বাড়ছে। কিন্তু, শহরের গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে অত্যন্ত দ্রুত। যার ফল বোঝা যায় হিলকার্ট রোড, বিধান রোড বা সেবক রোডে দাঁড়ালে। দিনের ব্যস্ততম সময়ে এই রাস্তা দিয়ে চললে দম আটকে যায়। হাসমি চকের উপরের দিকটা দিনের বেশির ভাগ সময়েই কালো হয়ে থাকে। সামনে তাকিয়ে দেখুন। কয়েক বছর আগেও শিলিগুড়ির আকর্ষণ ছিল দিগন্তে পাহাড়ের রেখা। এখন শীত হোক বা গ্রীষ্ম, বছরের বেশির ভাগ সময় গোটা শহরটাই মোড়া থাকে দমবন্ধ করা ধোঁয়াশায়। পাহাড় দেখতে পাওয়া তো দূরের কথা, রাস্তায় গাদা গাদা অটো, বাস, গাড়ি, মিনিবাসের ধোঁয়ায় প্রাণ ওষ্ঠাগত বাসিন্দাদের।
ওই কালো ধোঁয়া আমাদের নিশ্বাসের সঙ্গে শরীরে মিশে যাচ্ছে। তাই ভয় লাগে। কারণ, গাড়ির ধোঁয়া ও শহরের ধুলোয় থাকে কার্বন মনোক্সাইড এবং ক্ষতিকর নানা পদার্থ। সেগুলি সমানে রক্তে মিশে ফুসফুসে ঢুকতে থাকলে কঠিন সব অসুখ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বড় শহরগুলি এর মধ্যেই বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। দিল্লিতে পরীক্ষামূলক ভাবে দু’বার ১৫ দিন করে জোড়-বিজোড় নম্বরের গাড়ি চালানো হয়েছে। সে ভাবে দূষণ কিছুটা কমানো গিয়েছে বলেও তাদের দাবি। তবে পরিবেশবিদদের বক্তব্য, এটা ১৫ দিনে আটকে রাখলে চলবে না। ফল পেতে গেলে সময় বাড়াতে হবে। শিলিগুড়ির কথা এক বার ভাবুন। এখন তো শহরের অলিগলিতেও গাড়ির মিছিল। তাই এখন থেকে ভাবনাচিন্তা করতে হবে প্রশাসনকে। যদি পরীক্ষামূলক ভাবে জোড়-বিজোড় ব্যবস্থা (এক দিন চলবে সেই সব গাড়ি, যাদের নম্বর জোড় সংখ্যায়। পরের দিন বিজোড় নম্বরের গাড়ি। তার পর দিন আবার জোড় নম্বরের) বা এক দিন ‘নো কার ডে’ (যে দিন কোনও গাড়ি চলবে না) করা যায়, তা হলে গোড়ার দিকে শহরবাসীর একটু অসুবিধা হবে। কিন্তু শিলিগুড়িতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহারে একটু রাশ টানা গেলে আখেরে শহরের পরিবেশই দূষণ মুক্ত হবে।
তবে হুট করে এ সব করা যাবে না। শহরবাসীকে ডেকে মতামত নিতে হবে। কী ভাবে তা হবে, তা নিয়ে নাগরিক সভা ডেকে, বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা করিয়ে একটা রূপরেখা তৈরি করতে পারে প্রশাসন। (লেখক পরিবেশপ্রেমী সংস্থার কর্ণধার)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy